মতিন জীবনে কোনো দিন পড়াশুনায় ভালো ছিলো না যদিও গল্পের বই এই দিক থেকে ব্যাতিক্রম ছিলো।
ক্লাশে যদি ৫০ জন ছাত্র ছাত্রী থাকতো মতিনের অবস্থান হতো ৫০ তম।
সেই মতিন ঢাকার টিউলিপ ইন্টারন্যাশনাল কে লাখ পাচেক টাকা দিয়ে কেমন করে যেনো ঢাকার অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশন থেকে স্টুডেন্ট ভিসা যোগাড় করে ফেলে মতিন।
তারপর দিন গড়িয়ে মাস যেতে না যেতেই জুলাই সেমিস্টার ধরার জন্য সিডনি পাড়ি জমায় মতিন।
তাকে রিসিভ করতে আসা মামা তাকে দেখে যে খুব একটা খুশি হননি সেটা মুখে বললেও না বুঝার মত বলদ এখনও হয়ে ওঠেনি মতিন।
রাতের খাবারের সময়ই মামি সেই প্রসংগ তুললেন যে আমরা আছি স্কলারশীপে তাতেই চলতে পারি না আবার তুমি আসছো নিজের খরচে পড়তে মানুষের যে আক্কেল! বুঝিনা।
মামা বললেন যাক আইসা যখন পড়ছতই তখন কি আর করা কাইলকা থেইকাই কাজ খুজতে লাইগা যা।
এইহানে ছাত্র গ মেইন কামই অইলো কিচেন হ্যান্ড মানে থালা বাসন ধোওনের কাম চিন্তা করিছ না তরে আমগো বাসা থেইকাই ট্রেনিং দিয়া দিমুনে যাতে সামনে সমস্যা না হয়।
আর কালকা সকাল সকাল উঠিস এইহানে থাকতে অইলে ট্রেনের কোনো বিকল্প নাই ট্রেনে কইরা কেমনে তর কলেজে যাবি হেইডা চিনায় দিমু নে কালকা।
মাথা নাড়ে মতিন
পরদিন সকালে পাচটার সময় ঘুম থেকে উঠে মামা ভাগিনা দুইজন মিলে ল্যাকেম্বার ২/৭৭১ ফেয়ারমন্ট স্ট্রিটের বাসা থেকে বের হয় হাটতে হাটতে জ্যাকেটের ভিতরে হালকা ঘাম টের পায় মতিন কিন্তু স্টেশনের দেখা পায় না।
পাক্কা আধা ঘন্টা হাটার পর স্টেশনের দেখা মিলল।
এরই মাঝে মামা বললেন স্টেশনটা একটু দূরে হইয়া গেছে তবে এর লাইগাই বাড়ি ভাড়া অনেক কম ১৬০ ডলারে দুই বেড রুমের ইউনিট সিডনি শহরে কেউ কল্পনাও করতে পারবো না।
অহ আরেকটা কথা কেউ ঠিকানা জিগাইলে কি কইবি
ক্যান টু বাই সেভেন হানড্রেড এন্ড সেভেন্টি ওয়ান ফেয়ার মাউন্ট স্ট্রীট লেইক এম বি এ সিডনি।
মামার বিস্ফোরিত নেত্রের দিকে তাকায়া মতিন আবার বলে
ক্যান এইটাই ত লেখতাম খামের উপ্রের ঠিকানায়।
বলদ!
এইহানে কেউ টু বাই সেভেন হানড্রেড কয় না কেউ কইবি টু স্ট্রোক সেভেন সেভেন ওয়ান আর ওইটা ফেয়ার মাউন্ট না হইবো ফেয়ার মন্ট।
আর ঠিকানার শেষে এইহানে পোস্ট কোড লেখতে অয় সেইটা হইলো একুশ পচানব্বই টু ওয়ান নাইন ফাইব।
মনে থাকবো?
সাত সকালে এক গাদা ইনফরমশনের ভারে মাথা ঝাকিয়ে হ বলে জবাব দেয় মতিন।
কিছুক্ষন পর মামা আবার শুরু করেন
সকাল বেলা কলেজে গিয়া কারো লগে দেখা হইলে কি কইবি?
গুড মরনিং একটু ডরে ডরে বলে মতিন।
আর তরে জিগাইলে কি ক'বি?
একই গুড মরনিং জবাব দেয় মতিন
আর কেঊ গুডায় মায়ট কইলে কি ক'বি
এমন সময় সিড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে চার পাশের লোকজন দেখতে দেখতে মতিন জিজ্ঞেস করে এইডাই কি ট্রেন ইস্টিশন মামা?
হ আয় তরে টিকেট কাটা শিখাই।
মামুর লেকচার শুনে মনে মনে বিরক্ত মতিন ভাবে জীবনে কত ট্রেনের টিকেট কাটলাম এইডা আবার হিগান লাগবো।
মুখে বলে আইচ্ছা আর সাথে সাথে মামুর পিছনে দাঁড়ায় মতিন।
চলবে কি?
পুরা গল্প ও এর চরিত্রগুলো আমার উর্বর মস্তিষ্ক থেকে কম্পিউটার প্রসূত এর সাথে বাস্তবতার মিল খুজে পেলেও ইহা বাস্তব নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।