আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন নিঃস্বঙ্গ জোকার

আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল

এই পৃথিবী যেন একটি তাস রাজ্য! আমরা যেন কোন আস্তিন থেকে ঝরে পরা সব তাস! আমাদের আছে নিজ নিজ গোত্র, পরিবার, রং, গোলাম, রাজা, টেক্কা। আমরা হরতন, ইস্কাপন, রুইতন, চিড়াতনের মতো কতগুলো গোত্রে; শ্রেনীতে বিভক্ত! এবং কেউ এই আমাদের নিয়ে খেলছে অবিরাম! আমরা ইচ্ছে করলেই এই খেলা ভেঙ্গে বেরিয়ে আসতে পারি না। আমাদের চরিত্রের দায়িত্ব পালন আমাদের করতেই হয়। একমাত্র জোকারই আছে যার কোন গোত্র নেই, পরিবার নেই! যে একা। যার কোন গোলাম নেই, রাজা, টেক্কা, দশ, রানী কিচ্ছু নেই।

যে দেখতে পায় বেঁধে দেওয়া সীমাকে ভেদ করে আরো অনেক গভীরে; দূরে। আমাদের মতো সাধারণ তাসেরা তাদের ক্ষমতার বাইরে দেখতে পায় না, ভাবতে পারে না। কিন্তু একজন জোকার জানে শুধু এই শেষ নয়। বরং আমাদের জীবনের বাইরের সবচেয়ে বড় অংশটিই আমাদের কাছ থেকে আড়াল করা। আমরা ভাবতে পারি না, দেখতে পাই না কারণ আমরা মাতাল।

আমরা জীবন সুরা পান করে চুর। বেঁধে দেয়া সব হাস্যকর কাজে নিয়ত ব্যস্ত! যেন এর বাইরে কিছু নেই! আমরা এও জানি না আমরা জেগে আছি, না ঘুমিয়ে গেছি! যদিও আমরা চাই জেগে উঠতে, কিন্তু পারছি না কারণ আমরা যে জেগেই আছি! আমরা নিজেদের জাগতিক হাস্যকর কাজ ফেঁদে কখনো জিজ্ঞেসই করি না, আমরা কে? কোথা থেকেই বা এলাম! কিন্তু জোকার বুঝে, কেউ একজন লিখে চলেছে এই মহা গ্রন্থ অবিরাম। লিখে চলেছে অগণিত চরিত্র, অমিত গল্প। জোকার অনুভব করে কোথাও একটি গোপন ক্যামেরা আমাদের অনুসরন করে চলেছে। জোকার নিয়তিকে দেখতে পায়, যদিও তাকেও নিয়তির ভেতর দিয়েই যেতে হয়।

কিন্তু সে কখনোই পরিনতিকে ভয় পায় না। সে ভয় পায় না সেই শক্তিমান লেখককে খুজে বের করতে যে লুকিয়ে আছে আমদেরই মাঝে। একদিন জোকার সেই বইয়ের মলাট স্বরূপ গুপ্ত অংশটি ভেদ করে বেড়িয়ে আসবে। এবং অবাক বিষ্ময়ে দেখে নেবে সেই লেখকের নাম। হয়তোবা তাকে খুন করবে কারন তার বেঁচে থাকা তাঁর মর্জাদার জন্য প্রশ্ন।

একদিন মহান জোকার আসবে। আমরা তার হাস্যকর বেঁশভুষা দেখে হেসে উঠলে, সেও তার গাধার কানের টুপি দুলিয়ে দেঁতো হাসি হাসবে । তারপর হঠাৎ আমাদের চোখের কোনে উঁকি দিয়ে শীতল দৃষ্টি স্থাপন করে জিজ্ঞেস করবে, ””কে তুমি? কোথা থেকেই বা এলে?”” (জোস্স্তেন গার্ডনারের তাস রহস্য অবলম্বনে। )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.