স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক-
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের বিভিন্ন দলীল ও বইপত্রে- মওদুদী জামাতী, দেওবন্দী খারিজী, ওহাবী সালাফী রাজাকার আল-বাদর ঘাতকদের বিরুদ্ধে একাত্তরের পুরো ৯ মাস জুড়ে নিধনযজ্ঞ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও পাকবাহিনীকে সহযোগিতার তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। ঘাতক জামাতীরা ধর্মের নামে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে দৃষ্টি ফেরাতে চাইছে একাত্তরের সেই হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন-নিপীড়নের চিত্র থেকে। বোঝাতে চাইছে মুক্তিযুদ্ধ তাদেরও ফসল। ভুলে যেতে বলছে পেছনের কথা তথা দেশের ইতিহাসকে। অথচ কোনো জাতির ইতিহাস ভুলে যাওয়া অথবা কোনো জাতির ইতিহাস বিমুখ হওয়া আর জাতির অস্তিত্ব বিলীন হওয়া প্রায় সমান কথা।
অনুসন্ধানে সারাদেশের হাজারো জামাতী ঘাতকের মধ্য থেকে মাত্র কয়েকজনের নানা যুদ্ধাপরাধের তথ্য এখানে তুলে ধরা হলো-
রাজাকার আবদুস সুবহান মাওলানার হাক্বীক্বত
’৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে রাজধানী ঢাকার মতো পাবনাতেও পাকিস্তানি বাহিনী অতর্কিতে নিরীহ বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তবে পাবনার অবস্থা ছিল একটু ব্যতিক্রম। তদন্তকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী একজন মধ্যবয়স্ক মহিলা জানান, ’৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত থেকেই পাবনার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের স্থানীয় দালালদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি আর্মি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধরে নিয়ে আসে। ২৬ মার্চ বিকেল আনুমানিক ৩টার ঘটনা। একজন মহিলা তখন পাবনা রায়েরবাজারের প্রধান সড়কের ধারে একটি পুরনো বাড়ির দোতলার জানালায় দাঁড়িয়ে ছিলেন।
জানালার খড়খড়ি দিয়ে দেখছিলেন ভীত-সন্ত্রস্ত পাবনা শহর। হঠাৎ তিনি পাকিস্তানি আর্মির একটি লরি রাস্তার উপর থামতে দেখেন। লরির পেছনে লম্বা দড়ি দিয়ে বাঁধা প্রায় ১০০ মানুষ, যাদের পাকা রাস্তার উপর দিয়ে টেনে আনা হয়েছে। প্রত্যেক বন্দির জামা-কাপড় ছিন্নভিন্ন, তাদের হাঁটু থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত সাদা হাড় দেখা যাচ্ছিল আর শরীর ছিল রক্তে মাখামাখি। লরির ভেতরে পাকিস্তানি আর্মিদের সঙ্গে মাওলানা আবদুস সুবহানকে বসা দেখেছিলেন তিনি।
আর যাদের সিমেন্টের রাস্তার উপর দিয়ে টেনেহেঁচড়ে আনা হচ্ছিল তাদের মধ্যে তিনি পাবনার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু সাঈদ তালুকদার, এডওয়ার্ড কলেজের প্রফেসর হারুন এবং আওয়ামী লীগের নেতা আমিনউদ্দিনকে চিনতে পেরেছিলেন। লরি থেকে নেমে কিছু সৈন্য কয়েকটি দালানের উপর ওড়ানো বাংলাদেশের পতাকা নামানো এবং পোড়ানোর ব্যবস্থা করে চলে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ভীতসন্ত্রস্ত ওই মহিলা জানান, ২৯ মার্চ ’৭১ সালের মধ্যে তার দেখা ওইসব পরিচিত ব্যক্তির সবাইকে মেরে ফেলা হয়।
পাবনা জজকোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট, সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর এবং আওয়ামী লীগের প্রধান নেতা আলহাজ গোলাম হাসনায়েন (কাচারীপাড়া, পাবনা) বলেছেন, ‘মাওলানা আবদুস সুবহান আওয়ামী লীগ নেতা আমিনউদ্দিন সাহেবের বাসা পাক আর্মিদের চিনিয়ে দিয়েছিল। ’ তিনি আরো বলেছেন, ‘পাবনার আল-বাদর, রাজাকার, শান্তিকমিটির সব সদস্যকে সুবহান মাওলানা সংগ্রহ করেছিল (তথ্য সূত্র দৈনিক আল্ ইহসাস ৩০-০১-২০১০
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।