আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

!!!ইংল্যান্ডে বাংলাদেশী ছাত্র, স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদীদের হামলার শিকার!!!

এ ব্লগে আর কোন মৌলিক লেখার দরকার নেই, যেহেতু আমি আমার নিকৃষ্টতম লেখার স্বত্ব ও কাউকে দিতে রাজী নই

স্ট্রাফোর্ডশায়ার ইউনিভার্সিটির ফাইন আর্টস বিভাগের ছাত্র, বাংলাদেশের ছেলে জিয়াউল আবেদীন পলাশ । ব্যক্তিজীবনে ভীষন রকম রাজনীতি এড়িয়ে চলা, নিজেকে আড়াল করা একজন গুনী শিল্পী । আমার খুব কাছের বন্ধু । রাজনীতি এড়িয়ে চললে ও হ্রদয়ে ধারন করেন মুক্তিযুদ্ধ আর তা প্রকাশিত হয় তার শিল্পচর্চায় । সম্প্রতি পলাশদের কোর্স ফাইনাল ছিল ।

কোর্সফাইনালে প্রত্যেক ফাইন আর্টস ছাত্রকে নিজেদের শিল্পকর্মের প্রদর্শনী আয়োজন করতে হয় । গত ৬ মে পলাশ তার শিল্পপ্রদর্শনীর আয়োজন করেন এবং এ আয়োজনের থিম ছিল 'জেনোসাইড ৭১ ' । তার উদ্দেশ্য ছিল গনহত্যা ৭১ এ বিষয়ে আরো বেশী মানুষকে জানানো । প্রদর্শনীর পোষ্টার ও লিফলেট এ পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বর্বরতা, দেশীয় ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর এ বর্বরতায় সহযোগীতা, মুক্তিবাহিনীর সাহসী প্রতিরোধ ও আত্নত্যাগের বর্ননা ছিলো । এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের উপর তৈরী করা একটি ভিডিও প্রদর্শনী ছিল ।

পলাশের এই প্রদর্শনী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে গোটা ষ্টক-অন-ট্রেন্ট শহরে আলোচনার ঝড় তুলে । স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে এ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়, বিবিসি মিডল্যান্ড এ ও সংবাদ প্রচারিত হয় । এই প্রদর্শনী এতো বেশী আলোচিত হবার একটা কারন হল, ষ্টক-অন-ট্রেন্ট শহরে পাকিস্তানীদের সংখ্যাধিক্য । পুরো শহরটাই যেনো এশিয়ানদের । এশিয়ানদের ভেতর পাকিস্তানীরাই বেশী ।

তারপর বাংলাদেশী । যারা ইংল্যান্ডে আছেন জানেন ,যেখানেই পাকী সেখানেই ড্রাগডিলিং ও অন্যান্য সব ক্রাইম । আর আশংকাজনকভাবে এখানে বেড়ে উঠা এই প্রজন্মের বাংলাদেশীদের একটা বড় অংশ হয়েছে পাকিস্তানীদের সহচর । আর এদের অনেকেই মৌলবাদী দলগুলোর সাথে জড়িত । ষ্ট্রোক-অন-ট্রেন্ট তেমনি একটা শহর ।

পলাশের প্রদর্শনী মুল্ধারার মিডিয়া ও শিল্প-সমালোচকদের দ্বারা প্রবল প্রশংসিত হলেও দুর্ভাগ্যজনক ভাবে তা স্থানীয় বাংগালী কমিউনিটির একটা অংশকে বিরুপ করে তোলে । সেই অংশ যারা পাকিস্তানীদের সাথে ঘনিষ্ঠ এবং বিশেষ রাজনৈতিকলের সাথে সংশ্লিষ্ট । গেলো শুক্রবার জুমার নামাজে গেলে স্থানীয় মসজিদে পলাশকে তিরস্কার করা হয় এই আয়োজনের জন্য । এই আয়োজন নাকি শহরের বাংলাদেশী-পাকিস্তানী সহাবস্থানকে হুমকীর মুখে ঠেলে দিয়েছে । এরপর শুরু হয় মোবাইলে তাকে হুমকী দেয়া ।

ঘটনা পরিনতি লাভ করে গতকাল সন্ধ্যায় । স্থানীয় বাংগালী কমিউনিটির কয়েকজন তার বাসায় গিয়ে শারীরিকভাবে তাকে আক্রমন করে, কম্পিউটার ও শিল্পকর্মগুলো ভাংচুর করে ও তাকে হুমকী দেয় হত্যা করার । গতকাল রাতে পলাশের সাথে কথা হয়েছে । হাস্পাতালে ভর্তি । পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ।

স্থানীয় বিবিসি সকালের অধিবেশনে গুরুত্ব দিয়ে এ সংবাদ প্রকাশ করেছে । আমি হয়তো আজ ষ্টক এ যাবো । ব্লগার বন্ধুদের খবরটা জানিয়ে গেলাম । দোয়া রাখবেন পলাশের জন্য ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.