আমাদের ছড়া গুলো সমাজের আয়না,যার কাছে কোন কিছু ঢেকে রাখা যায়না!
ওর ক্ষুধাটা একটু বেশিই ছিল, সম্ভবত অন্যেদর চাইতে
একটু হলেও বেশি, তা না হলে গ্রাম ছেড়ে আধ পেট খাওয়া মা বাবাকে রেখে একাই শহরে আসবে কেন ?
রাজেস আর দশটা কিশোরের মতই এক কিশোর, যদিও কিছুটা দুষ্ট, তবে ওর বয়সে এটা স্বাভাবিক, কিন্তু ওর মা বাবা কেন ওর দুষ্টমি মেনে নেবে,
যেখানে দু বেলা খাওয়ার জন্য বাবাকে সারাদিন অন্যদের জমিতে কামলা খাটতে হয় , ছয় ভাই বোনের সংসার কোনদিনও ভরা পেটে খাওয়া হয়না
ওর মা ওকে অনেক করে বলেছিলো যে বাজারের এক হোটেলে কাজে লাগলে কিছু টাকাও আসবে আবার ওর খাওয়াটাও হবে কিন্তু রাজেস তা শুনবেনা, সারাদিন শুধু এ পাড়া ও পাড়া ঘুরে বেড়ানো আর খাওয়ার জন্য বিলাপ করা, আর এজন্যই ওর মা ওকে খুব করে মেরেছিল সেদিন,
আর তখনই রাজেস রাগ করে বাড়ি ছেড়ে শহরে চলে আসে,
এবং এসেই ওর ভুল বুঝতে পারে, গ্রামে মায়ের বকাঝকা খেয়েও অন্তত দুবেলা আধপেট খাওয়া জুটতো, কিন্তু শহরে ওকে কেউ ডেকে বলেনা যে, রাজেস আয় খেয়ে যা, যেমন করে ওর মা বলতো,
এখানে ও যেখানেই খাবার চাইতে যায়, সেখানেই ওকে দুর দুর করে তাড়িয়ে দেয় , আর তাইতো রাজেস ভাবে এবার কিছু একটা করতে হবে
ও এবার সেটাই করলো যে কাজটা ওর মা ওকে করতে বলতো,
রাজেস একটা হোটেলে গিয়ে কাজ চাইতেই পেয়ে যায়,
সারাদিন ও মন দেয়ে কাজ করে, উদ্দেশ্য একটাই, কিছু খাবার পাওয়া যাবে ক্ষুধাটা রাজেস একদমই সহ্য করতে পারেনা,
রাজেস ইতিমধ্যো বশে কয়েকবার খাবার চেয়েছে হোটেল ক্যাশিয়ারের কাছে, সে বলছে পরে খা, কাষ্টমারের ভির কমুক,
কিন্তু রাজেস এর ক্ষুধা যে মানেনা, ও আবার খাবারের জন্য ক্যাশিয়ারকে বলে এবার ক্যাশিয়ার রাজেসকে এক থাপ্পর লাগিয়ে দেয়
যা ভাগ শালা গরিবের জাত, কাজে লাগতে না লাগতেই খালি খাওন আর খাওন, এবার রাজেস আর সহ্য করকে পারেনা,
দুইটা তন্দুর রুটি খাবলে নিয়ে ছুট দেয়,
ক্যাশিয়ার বলে ধর ধর চোর ধর, রুটি নিয়া পালাইলো....
হোটেল থেকে আরো দুজন বয় বের হয়ে আসে, রাজেস কে ধাওয়া করে,
রাজেস প্রচন্ড ক্ষুধা নিয়েই রুটি হাতে দৌরাতে থাকে,
সামনে কি আছে তা দেখার সুযোগ ওর নেই ওকে পালাতে হবে নইলে ওরা রুটি কেড়ে নেবে,
রাজেস আরো জোরে দৌড়াতে থাকে পেছনে হোট্লে বয় এর সাথে যোগ হয়েছে আরো কিছু বেকার পাবলিক, চোর পেটাতে যারা ভিষন আগ্রহি,
আর তখনই ফুল স্পিডে ধেয়ে আসা ট্রাকটা রাজেস এর গতি থামিয়ে দেয়. রাজেস এর উপর দিয়ে চলে যায় পাচ টন ওজন এর ট্রাক ,
রাজেস একেবারে চ্যাপ্টা হয়ে যায় ট্রাকের চাকায়,
তবে ওর ডান হাতটা সম্পুর্ন অক্ষত থেকে যায় , যে হাতে তখনও মুষ্টি করে ধরা ছিল রুটিটা, যা ওর ক্ষুধার কাতরতার সাক্ষি দিচ্ছিল,
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।