একমুখাপেক্ষি না হয়ে যা কিছু ভাল তা গ্রহন করা উচিৎ...
কি? রাস্তাটা দেখতে অনেক সুন্দর তাইনা? এটা ভিজিএ ক্যামেরায় তোলা ছবি। ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে তুললে শোপার্জিত স্বাধীনতার সামনের রাস্তাটা হয়তো আরও সুন্দর দেখাতো। এই পথ দিয়েই যেতে হয় ফুলার রোড এ এবং ডানপাশের অন্য মোচড়টি দিয়ে জগন্নাথ হল হয়ে যাওয়া যায় শহীদ মিনারের দিকে। আর এই মোড়ের অন্য পথটি মচলে এসেছে পলাশীর দিকে। পলাশীর মোড় এ!
পলাশীর মোড়ের বর্তমান অবস্থা নিচের ছবিটির মতো।
মাসখানেকের বেশী হয়ে গেলো পলাশীর মোড়ে চলছে লোক দেখানো খোড়াখুড়ির কাজ। আর এই মাসখানেকে কতটুকু কাজ হয়েছে তা পরিমাপ করার যন্ত্রটা আমি খুঁজে পাচ্ছিনা!! যাই হোক, ভেবে দেখেন এই পলাশীর মোড়ের রাস্তাটি যখন বানানো হয়েছিলো তখন কতো যত্ন করেই না বানানো হয়েছিলো রাস্তাটিকে। আর এখন এর কি অবস্থা!! তখন কি আমাদের পরিকল্পনাকারীদের মাথায় আসেনি যে এর নিচে দিয়ে ওয়াসার লাইন অথবা গ্যাসের লাইন করতে হবে? শতকোটি টাকা খরচ করে যে রাস্তা বানানো হয় সে রাস্তা কেনো আবার খুড়তে হয়, তা কি কেউ তাদের জিগগেস করেছে কোনোদিন? কেনো খুড়তে হয়, কেনো কারো জবাবদিহিতা করতে হয় না?
পলাশীর মোড়ে এখন যে খোড়াখুড়ির কাজটা হচ্ছে তাও কি পরিকল্পিতভাবে হচ্ছে?
আসেন চতুর্থ শ্রেনীর একটা পাটিগণিতের অংক দেখি. . .
* ১০ জন শ্রমিক যদি একটি রাস্তা ১০০ দিনে মেরামত করতে পারে তবে ১০০ জন শ্রমিক ঐ রাস্তাটি কতদিনে মেরামত করতে পারবে?
উত্তরঃ ১০ দিন।
একটা চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্র/ছাত্রী খুব সহজেই ঐকিক নিয়মের সাহায্যে অংকটি করে বলে দিবে এর উত্তর।
যদি আরও প্রশ্ন করা হয় যে কত দিন কম কাজ করতে হয়েছে শ্রমিকদের? এর উত্তরও ঐ চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্র/ছাত্রীরা সহজেই দিতে পারবে।
৯০ দিন কম লাগবে। ৯০ টা দিন মানুষ রাস্তার নির্মম ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে। আর এই কথাটা আমাদের রাস্তার কাজে নিয়োজিত কতৃপক্ষরা জানেন না! তার কি মুর্খ? নাকি তাদের আমি সেন্সলেস শিক্ষিত বলে একটা গালি দিবো!!
পলাশীর মোড়ে এখন প্রায়ই সকাল ৯:৩০-১১:০০ পর্যন্ত এবং সন্ধ্যার পরের সময়টাতে জনগণকে যানজটে পড়তে হয়!! আমার কথা হচ্ছে আমাদের কি শ্রমিকের অভাব রয়েছে? এতো বড় রাস্তার কাজটিতে কেনো ১০-২০ জন শ্রমিক নিয়োগ করা হবে? ইচ্ছে করলেই শ্রমিক সংখ্যা ১০০-২০০ জন করা সম্ভব। এমনতো নয় যে অর্থের অপচয় হবে আর যদি এমন হয় যে যাদের হাতে রাস্তার কাজটি দেয়া হয়েছে তাদের হাতে যথেষ্ট পরিমান শ্রমিক নেই, তবে তাদেরকে কেনো এই দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে? আমাদের দেশে শ্রমিকের অভাব নেই। সুতরাং যে কাজটি বেশী শ্রমিক নিয়োগ করে দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব সে কাজটি সম্পন্ন হওয়ার সময় দীর্ঘায়ন করে জনগনকে কষ্ট দিয়ে কি লাভ!!
বাংলাদেশে খোড়াখুড়ির কাজগুলো হয় পুরোপুরি অপরিকল্পিতভাবে।
পত্রপত্রিকায় এবং সংবাদ মাধ্যমগুলোতে এই ব্যাপারগুলো আবারো তুলে ধরা প্রয়োজন। কতৃপক্ষকে ক্যামেরার সামনে দাড় করিয়ে জবাবদিহিতা করা প্রয়োজন এবং যারা পলাশীসহ ঢাকার অন্যান্য রাস্তার নকশা করেছিলেন তাদেরও জবাবদিহিতা করার প্রয়োজন। ওয়াসার লাইনতো শুধু পলাশীর নিচ দিয়ে যাবে না, যদি সত্যিই ওয়াসার কাজ হয় তবেতো ঢাকার সবগুলো রাস্তার নিচ দিয়েই ওয়াসার লাইন যাওয়ার কথা। তার মানে পুরো ঢাকাকেই আবার খুড়তে হবে হয়তো। খোড়া হোক, কোনো আপত্তি নেই, তবে যেনো তা পরিকল্পিতভাবে খোড়া হয়।
২০ বছর পর আবার যেনো পলাশীর বুক চিড়তে না হয়!!
কোটি কোটি টাকা ভিক্ষা করে আমরা ভিক্ষুক সাজি. . . ভিক্ষা না পেলে যে এ দেশ যে চলবেই না! তবে কোটি টাকা কে বা কাদের পেটে যায় অথবা কোটি কোটি টাকা কি বুড়িগঙ্গার জলে ভেসে যায় কিনা তা কেউই খোঁজ করে দেখিনা! আর কেউ যদি খোঁজ করতে যায় তবে তাকে অবশ্যই তারা প্রানের বন্ধু বলেই ঘোষণা করে। তারা, যাদেরকে জবাবদিহিতা করতে হয় না!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।