আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন হিন্দুর হিন্দু হয়ে ওঠা-১

এডিট করুন

আপনারা কি জানেন কিভাবে একজন হিন্দু হিন্দু হয়ে ওঠে? আপনারা কি জানেন কিভাবে একটা হিন্দু ছেলে শেষ পর্যন্ত হিন্দু হয়ে যায়?? হয়তো জানেন কিন্ত ভুলে গেছেন। আমরা বেশীরভাগই বংশগত অথবা পরিবারগতভাবেই হিন্দু বা মুসলিম বা খ্রীষ্টান। সাধারণভাবে কেন একজন মুসলিম ছেলে হিন্দু হয় না অথবা হিন্দু ছেলে মুসলিম হয় না? উত্তরটা খুবই সোজা। সবাই যার যার পরিবারের নিকটতম সান্নিধ্যে থাকতে চায়, নিজের পরিচিত গন্ডী ভেঙ্গে বের হয়ে আসার মত সাহসের অভাব, ছোটবেলা থেকে গড়া অভ্যাসের প্রতি নির্ভরশীলতা এবং পরিবার ও পারিপার্শ্বিকতা থেকে পাওয়া ধর্মভীরুতা। কিন্তু এত কিছুর পরও একটা হিন্দু ছেলে তার পরিচিত গন্ডী থেকে বের হয়ে আসতে পারে।

সেই পরিমান সাহস ও বুদ্ধি সে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই অর্জন করে। সে একজন নাস্তিক্যবাদী মানুষে পরিণত হতে চায়। ধর্মের কফিন ভেঙ্গে সে বেরিয়ে আসার মত সক্ষমতা অর্জন করে চারপাশের নিদারুণ মস্তিষ্ক ধর্ষণ সত্ত্বেও। কিন্তু সে শেষ পর্যন্ত বের হয়ে আসতে পারে না। তার কফিনে শেষ পেরেকটা খুব শক্তভাবেই মেরে দেয় আমাদের সমাজ সংসার।

আশ্চর্যের বিষয় হল এই পেরেক মারার মিস্ত্রিটা কিন্তু কোন হিন্দু নয় বরং মুসলিম। হ্যাঁ আমাদের চারপাশের মুসলিমরাই তাদের আরো বেশী হিন্দু করে তোলে আরো বেশী গোঁড়া ও রক্ষণশীল করে তোলে। একটা হিন্দু ছেলে আমাদের এই দেশে ছোট থাকতেই তার চারপাশের সমাজে নিজেকে আলাদা ভাবতে শুরু করে। সে বুঝতে পারে সে হিন্দু, তাকে প্রতি পদে পদে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় যে সে হিন্দু। তাকে কানের কাছে মুখ এনে বলা হয়, “তুমি হিন্দু! তুমি হিন্দু!! তুমি হিন্দু!!!” ফলে খুব ছোট থাকতেই তার চারপাশের পরিচিত গাছপালা তার কাছে অপরিচিত হয়ে যায়।

একজন মুসলিম ছেলেকে কেউ বলে না তুমি মুসলিম, তুমি একটু ভিন্ন ধর্মের, তোমার ধর্ম আলাদা, ধর্ম বলে একটা জিনিস আছে, তুমি পুরোপুরি আমাদের সমাজের নও, তুমি একটু ভিন্ন। একজন মুসলিম ছেলে কখনো চিন্তা করে না, সে একটা ভিন্ন সমাজে আছে, সে একটা ভিন্ন ভাবধারায় আছে। সকালবেলার প্রাতকৃত্যের মতনই তার সমাজটা তার কাছে পরিচিত। সেখানে সে নিজ ধর্ম নিয়ে খুব কমই চিন্তা করে, বরং স্বতঃসিদ্ধ হিসেবে সে ধর্মকে মেনে নিয়ে জীবনের উপপাদ্যগুলো তৈরী করতে থাকে। তাকে কখনো ভাবতে হয় না, আমি কোন সমাজের, কোথায় গেলে আমি নিঃসঙ্কোচভাবে চলতে পারব।

এভাবেই তার ভিতর ধর্ম সম্পর্কে ভাবনা তৈরী হয়। যদি সে কোন বিদ্যালয়ের ছাত্র হয়ে থাকে, তবে উচ্চশিক্ষার পথে সে যত এগুতে থাকে তার ধর্মভাবনাগুলো ততই পরিপক্কতা পায় এবং সে ক্রমশ একজন নাস্তিকে পরিণত হতে থাকে আর যদি সে সমাজের নীচুতলার কোন সুবিধাবঞ্চিত হয়ে থাকে তবে তার এতকিছু ভাবার সময় থাকে না। নীচুতলায় সবচেয়ে বড় ঈশ্বর হচ্ছেন “ভাত”। পাক পবিত্র সুচিতায় মূর্ত কোন ঈশ্বরের সেখানে জায়গা হয় না। সেখানে ঈশ্বর কাদামটি, ইট পাথরের ধূলিমাখা হাতুড়ি নতুবা নোংরা মাটির টুকরি।

কদাচিত সেখানে উচুতলার ঈশ্বররা দেখা দেন। চলবে………


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.