গল্পের রাজত্বে বসবাস করছি আপাতত
মুক্তি : ১৯২৮
দৈর্ঘ : ১১০ মিনিট
রঙ : সাদাকালো
দেশ : ফ্রান্স
ভাষা : নির্বাক, ফরাসী ক্যাপশ
পরিচালনা :কার্ল থিওডর ড্রায়ার
প্রযোজনা :
চিত্রনাট্য : জোসেফ দেলটিয়েল, কার্ল থিওডর ড্রায়ার
অভিনয় : রেনে জিয়ানে ফালকোনেত্তি, ইউজেনে সিলিভাইন, আন্দ্রে বেরলে, মরিসে স্কুজ
সঙ্গীত :
সম্পাদনা :
চিত্রগ্রহণ : রুডলফ মাটে
শিল্প নির্দেশনা : হার্মেন ওয়ার্ম, জে হুগো
ঐতিহাসিক উপদেষ্টা : পিয়েরে চাম্পিয়ন
কাহিনী সংক্ষেপ : ইংরেজদের কাছ থেকে স্বদেশ ফ্রান্সকে মুক্ত করার জন্য লড়েছিলেন জোয়ান অব আর্ক। ধরা পড়ার পর তাকে ডাইনী বানিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়। ঐতিহাসিক এই ঘটনাই এ ছবির ম–ল উপজীব্য। জোয়ান অব আর্কের বিচারের উপর নির্ভর করে ফ্রান্সে এই নির্বাক ছবিটি নির্মিত হয়। প্যাশন প্লে’র আঙ্গিকে জোয়ান অব আর্কের জীবনের শেষ কয়েক ঘন্টা এতে তুলে ধরা হয়েছে।
ইংরেজদের হাতে ধরা পড়ার পর তার উপর যে অত্যাচার, বিচার এবং পুড়িয়ে মারার শাস্তি এই হলো ছবির উপজীব্য।
বিশেষত্ব : যে সময় দ্য প্যাশন অব জোয়ান অব আর্ক তৈরি হয়েছিলো সেই সময়ের বিবেচনায় এ ছবির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক ক্যামেরার কাজ। এ ছবিতে প্রথমবারের মতো ক্যামেরা অভিনেতার মুখের অভিব্যক্তির দিকে ফোকাস করেছে। ড্রয়ার পুরো ছবিতেই ক্লোজ আপের দিকেবিশেষ নজর রেখেছেন এবং দর্শকের কাছে চরিত্রের সত্যতা তুলে ধরতে তিনি অভিনেতাদের কোন মেকআপ নিতে দেননি। পুরো গল্পটিই তিনি বলার চেষ্টা করেছেন চরিত্রের অভিব্যক্তির মাধ্যমে।
ফালকোনেত্তি তার দ্বিতীয় এবং শেষ ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। সমালোচক পলিন কেইল বলেছেন, ফালকোনেত্তির জোয়ান অব আর্ক সম্ভবত চলচ্চিত্রের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ অভিনয়ের উদাহরণ। বলা হয়ে থাকে, পরিচালক ড্রয়ার একান্তমনোনিবেশ সহকারে এ ছবিতে আসলে ফালকোনেত্তি বা জোয়ান অব আর্কের প্রতিটি অভিব্যক্তিই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। অভিনয় ও ক্লোজআপের পাশাপাশি এ ছবিতে টোনাল মনতাজ ও টাইপেজের অসাধারণ কিছু নমুনা রয়ে গেছে। এ ছবির আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো, এর শুটিং ধারা।
পরিচালক তার সকল সেট ও অন্যান্য প্রস্তুত আগে থেকেই সমাপ্ত করে রেখেছেন এবং ছবিতে যে ধারাবাহিকতায় দৃশ্যগুলো দেখা যায় ঠিক সেই ধারাবাহিকতায় শুটিং সম্পন্ন করেছেন।
বিশেষ তথ্য :
১. ব্রিটিশ সৈন্যদের নৃশংসতা তুলে ধরার জন্য এ ছবি ব্রিটেনে নিষিদ্ধ হয়েছিলো। ছবিরএকটি দৃশ্যে দেখা যায় জোয়ান বন্দী হওয়ার পর ইংরেজ সৈন্যরা জোয়ানের কষ্ট নিয়ে হাসি-তামাসা করছে, তাকে ভেঙাচ্ছে। বাইবেলে উল্লেখ আছে, যিশুর বিচারের সময় যিশুর সঙ্গে অনুরূপ আচরণ করেছিলো রোমান সৈন্যরা।
২. ছবির মূল প্রিন্টটি আগুনে পুড়ে গিয়েছিলো।
ড্রায়ার নিজে বেঁচে যাওয়া কিছু প্রিন্ট নিয়ে আরেকটা ভার্সন তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি মারা যান। ১৯৮১ সালে ড্রয়ারের মূল দ্য প্যাশন অব জোয়ান অব আর্কের একটি কপি পাওয়া যায়। মজার বিষয় হলো, অসলো মানসিক ইন্সটিট্যুটে কেয়ার টেকারের ঘরের একটি আলমারিতে এই প্রিন্ট পাওয়া যায়। চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এটিকে সবচেয়ে বড় আবিষ্কার বলে উল্লেখ করা হয়।
৩. সাইট এণ্ড সাউন্ড ম্যাগাজিনের দর্শকের ভোটে সেরা দশ ছবি নির্বাচনের তালিকায় দ্য প্যাশন অব জোয়ান অব আর্ক ১৯৫২ সাল, ১৯৭২ সাল এবং ১৯৯২ সালে নিজের অবস্থান করে নেয়। এ ছাড়াও প্রিমিয়ার ম্যাগাজিনের সেরা একশ ছবির তালিকায় এটি ২৬তম স্থানে আছে, ২০০২ সালে পরিচালকদের শত ছবির তালিকায় এটি ৩১ তম এবং সমালোচকদের সেরা তালিকায় ১৪তম স্থানে আছে। ভিলেজ ভয়েস ২০০০ সালের এক দর্শক জরিপে একে বিশ্বেরসেরা ছবির মধ্যে ৮ম স্থানে ঠাঁই দিয়েছে।
৪. জ্যাঁ লুক গদার তার ভিভরে সা ভি [১৯৬২] ছবিতে দ্য প্যাশন অব জোয়ান অব আর্কের একটি দৃশ্য দেখিয়েছেন। তিনি দেখিয়েছেন, তার ছবির প্রধান চরিত্র নানা একটি সিনেমা হলে এ ছবি দেখে নিজেকে জোয়ান অব আর্ক মনে করে।
রবার্ট ব্রেসঁ ১৯৬২ সালে দ্য ট্রায়াল অব জোয়ান অব আর্ক নামে একটি ছবি বানান। এ ছাড়াও এখন পর্যšত বহু পরিচালক ফরাসী স্বাধীনতাকামী নারী জোয়ান অব আর্ক নিয়ে ছবি তৈরি করেছেন।
৫. অন্যান্য নির্বাক ছবির মতোই এ ছবিরই একাধিক মিউজিক ভার্সন পাওয়া যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।