গল্পের রাজত্বে বসবাস করছি আপাতত
নানুক অব দ্য নর্থ
দৈর্ঘ : ৭৯ মিনিট
রঙ : সাদাকালো
দেশ : আমেরিকা
ভাষা : নির্বাক, ইংরেজি ক্যাপশন
চিত্রনাট্য, চিত্রগ্রহণ, পরিচালনা, প্রযোজনা : রবার্ট জে ফ্লাহার্টি
অভিনয় : আলাকারিয়ালাক [নানুক], নেয়লা, কুনাইও
সঙ্গীত : স্ট্যানলি সিলভার ম্যান
সম্পাদনা : রবার্ট জে ফ্লাহার্টি, চার্লস গেলব
কাহিনী সংক্ষেপ : নানুক অব দ্য নর্থ নির্বাক তথ্যচিত্র। দক্ষিন মেরুর তীব্র শীতে বসবাসকারী ব্যক্তিদের বেঁচে থাকার সংগ্রামই এ ছবির মূল উপজীব্য। কানাডীয় এন্টার্টিখ অংশের ইউনুক পরিবারেরনানুকদের জীবন নিয়ে এ ছবি চিত্রায়িত। তথ্যচিত্র ঘরাণায় এটিই প্রথম ব্যাপক আলোচিত ছবি। একটি ভিন্ন দেশ, সংষ্কৃতি, দূর্গম এলাকা, তাদের দুঃসহ জীবন তুলে ধরতে ফ্লাহার্টি যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।
নানুকদের ঐতিহ্যবাহী ঈগলু [বরফের ঘর] বানানোর রীতি, তাদের মাছ ধরার কৌশল, শিল ও সিন্ধুঘোটক [ওয়ারলুস] শিকার ইত্যাদি নানা বিষয় এ ছবিতে দেখানো হয়েছে। মূলত একটি পরিবার এবং রুক্ষ্ম-বৈরী প্রকৃতিতে তাদের টিকে থাকাই এই ছবির প্রধান উপজীব্য।
বিশেষত্ব : প্রথম পূর্ণাঙ্গ দৈর্ঘের তথ্যচিত্র হিসাবে এটিকে ইতিহাসে ঠাঁই দেয়া হয়েছে। অন্য অর্থে, নৃতত্ত্বের রেকর্ড বলা যায় এ ছবিকে। কানাডা অধ্যুষিত আর্টিক কিউবেকের হাডসন বে নিকটবর্তী ইনুকজুয়াকে এ ছবির চিত্রায়িত হয়েছে।
একজন অভিযাত্রী ও উন্নয়নকর্মী হিসাবে ইনউইট উপজাতির সঙ্গে তার পরিচিত বহুদিনের। এই পরিচয় ও জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ফ্লাহার্টি শুটিং করতে থাকেন। কিন-ু একটা সিগারেটের আগুনে তার শুট করা সব ফুটেজ পুড়ে যায়। উল্লেখ্য সে সময়ের নেগেটিভগুলো ভীষণ দাহ্য ছিলো। এরপর ফরাসী অর্থ সহায়তায় ১৯২০-এর আগস্ট থেকে ১৯২১-এর আগস্ট পর্যন- তিনি ঐ জায়গায় আবার শুটিং করেন।
তবে ফ্লাহার্টির এ ছবির পুরোটাই তথ্যচিত্র আকারে শুট করা নয়, পূর্ণাঙ্গ বাস-বতাও নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তিনি ফিচার ফিল্মের মতো কাহিনীর চিত্রায়ন করিয়েছেন। যেমন এ ছবির মূল চরিত্র আলাকারিয়ালাক [নানুক] স্ব-চরিত্রে অভিনয় করলে তার স্ত্রী চরিত্রে যে অভিনয় করে বাস-ব জীবনে সে তার স্ত্রী নয়। আলাকারিয়ালাক বাস-বে শিকারের সময় বন্দুক ব্যবহার করলেও ফ্লাহার্টি দেখিয়েছেন তিনি বর্শা দিয়ে শিল ও সিন্ধুঘোটক শিকার করেন। এটি তিনি নানুকদের প্রাচীন পন'াকে তুলে ধরার জন্যই দেখিয়েছেন।
ফ্লাহার্টি বলেছেন, সিনেমা নির্মাতাকে যথার্থ সত্যকে তুলে ধরতে হলে অনেক সময় কিছুটা কৌশল গ্রহণ করতে হয়। পরবর্তী আধুনিক চিত্রনির্মাতা বলেছেন যে, সে সময় ফ্লাহার্টিকে যে বড় এবং ভারী ক্যামেরা নিয়ে কাজ করতে হয়েছে তা দিয়ে ছোট্ট ঈগলুর ভিতরের অনেক চিত্রায়ণই সম্ভব ছিলো না। তাই ফ্লাহার্টি বড় মাপের একটি ঈগলু বানিয়ে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস'া করে তারপর শুট করেছেন। পর্যাপ্ত যন্ত্র ও সুবিধার অভাবেই ফ্লাহার্টিকে কিছু কিছু জায়গায় বাস-বের পূর্ণগঠন করে চিত্রায়ন করতে হয়েছিলো।
বিশেষ তথ্য :
১. ফ্লাহার্টি কিছু দৃশ্য কৃত্রিমভাবে তৈরি করার জন্যে সমালোচিত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠে, যে তিনি তথ্যচিত্রের বাস-বতাকে লংঘন করেছেন। ছবিতে ফ্লাহার্টি উল্লেখ করেছেন যে, ছবি তৈরির দু’বছর পর আলকারিয়ালাক খাদ্যের অভাবে মারা যায়। এ তথ্য সঠিক নয়। আসলে তিনি অসুস' হয়ে মারা যান।
২. আমেরিকার লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের ন্যাশনাল ফিল্ম রেজিস্টিতে ১৯৮৯ সালে ঠাঁই পাওয়া ২৫টি ছবির মধ্যে এটিও একটি।
এ ছবিকে সংরক্ষণের কারণ হিসাবে,‘সাংষ্কৃতিক, ঐতিহাসিক এবং নান্দনিক বৈশিষ্টকে’ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
৩. এ ছবির গল্প এবং যাদের নিয়ে এ ছবি তাদের কথা নিয়ে ম্যালনি ম্যাকগ্রথ ‘দ্য এক্সাইল : আ ট্রূ স্টোরি অব ডেসিপশন এন্ড সারভাইভাল এমনগস্ট দ্য ইউইট অব আর্টিক’ নামে একটি গ্রন' লেখেন।
৪. নানুকের চিত্রায়ন নিয়ে ‘কাবলোনাক’ নামে ১৯৯৪ সালে একটি ছবি নির্মিত হয়। এ ছবিতে ফ্লাহার্টি চরিত্রে অভিনয় করেছেন চার্লস ডান্স এবং নানুকের চরিত্রে আডামি কুইসিয়াক ইনুকপুক [নানুকেরই আত্মীয়] অভিনয় করেছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।