অহংকার মানুষের পতন ঘটায়, আর বিনয় মানুষের মাথায় সম্রাটের মুকুট পরায়
আমি সমাজ সংস্কারক না কিন্তু চেষ্টা করি নিজে ঠিক থেকে যেন সমাজটাকে কিছু দিতে পারি । আমাদের চারিদিকে এত অসামাজিক কাজ হচ্ছে যা হয়ত আমরা সবাই জানি কিন্তু অনেকে বলি ,প্রতিবাদ করি আর কেউ কেউ হয়ত আমার মত তাকিয়েই থাকি আর আক্ষেপ করি কিছু না করতে পারার যন্তনায় ।
আজ তেমনি কিছু ঘটনা তুলে ধরব কিছু নীরব যন্তরনা কাতর বাংগালী আপুদের জীবন থেকে যা কিনা আমার নিজ চোখে দেখা ।
যখন দেশে ছিলাম তখন অনেক এর কাছ থেকে শুনতাম যে ,কেউ হয়ত মেয়ে বিয়ে দিয়েছে কোন বিদেশি ছেলের কাছে ,যে ছেলে কিনা বিয়ের আগে বলেছে লন্ডন/আমেরিকা থাকে ,ওখানে অনেক লেখাপড়া করেছে এখন অফিসিয়াল জব করে । কিন্তু বিয়ের পর হয়ত অনেকেই দেখেন ছেলে পড়ালেখাতো করেই না বরং এখানে অড জব করে এবং মেয়েকে বিয়ে করেছে কাজ করানোর জন্য যেন আয়টা আরো বাড়ে ।
কথা আর বাড়াব না মুল কথায় চলে যাই ।
ঘটনা ১ : আমার পরিচিত এক আপু আছে যার নাম ধরলাম মলি । আপু র ব্যাকগ্রাউন্ড আগে বলি । আপু ঢাকা ইউনি থেকে অনার্স মাস্টার্স করছে অর্থনীতির ওপর । আপুরা ৩ বোন ১ ভাই ।
সবাই ঢাকা ইউনি থেকে বের হওয়া । তাদের ঢাকা তেও ভাল অবস্থা । আপুর বিয়ে হয় প্রবাসি এক ছেলের সাথে । ছেলের ঢাকায় বাড়ী আছে ,লন্ডন থাকে, আর কী চাই । বিয়ের বাজারে এর চেয়ে ভাল পাএ আর কই ।
কিন্তু আপু বেকে বসল ,এই কারনে যে ছেলের লেখাপড়া কতটুকু তা জানা চাই । ছেলের বাড়ীতে খোজ পাঠানো হল ছেলের পড়া লেখা সম্পর্কে জানার জন্য । ছেলে আপুকে তার অনার্স এর সনদপএ দেখায় যা কিনা ছেলেটি লন্ডন থেকে অর্জন করে । আপু বিয়েতে রাজী হয় ।
আপু যখন এই দেশে আসে তখন দেখে সম্পুর্ন অন্য ঘটনা ।
ছেলে লন্ডন এর ই এক ভিসা কলেজ থেকে সনদপএ কিনে নিয়ে যায় দেশে যাকিনা আপু সত্যি ভেবেছিল । আজ থেকে ৫ বছর আগে আপুর বিয়ে হয় । এখনও তার সাথেই আছে ,হয়ত সমাজ এর কথা ভেবে । ঐ ছেলে আপুকে প্রায়ই বলে এত পড়ালেখা করে কী করলা ,মাথায়তো কিছুই নাই ।
আবার বলে ,তোমাকে বিয়ে করছিলাম এই চিন্তা করে যে তোমারে দিয়া কানাডায় পারমানেন্ট রেসিডেন্সির জন্য আবেদন করমু ।
এদের একটা বাবু হইছে ওনার বর বলে ,একে দেশে পাঠিয়ে দাও তাইলে তুমি বেশি কাজ করতে পারবা ।
আর কিছু নাই বা বললাম
ঘটনা ২ : আমার এই আপুটার নাম দিলাম কনা । আজ থেকে ৪ বছর আগের ঘটনা । আপু মাএ ঢাকা মেডিকেল থেকে পাশ করে বের হয়েছে । সব বন্ধুরা যখন মানব সেবায় নিয়োজিত হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতেছিল তখন আপু নিতেছিল স্বামীর সেবা করার প্রস্তুতি ।
হ্যা ,কথা গুলো একটুও মিথ্যা না । একদিন বিকেলে আপুর বিয়ে হয়ে যায় এক অচিন দেশের অচিন রাজপুএর সাথে ।
আপুর এক মামা তার জন্য এক ছেলে ঠিক করে বিয়ের জন্য । যে ছেলে থাকে লন্ডন । এবং সে লন্ডন এর কোন এক দামি কলেজ থেকে এম বিএ শেষ করেছে ।
এমন ভাল ছেলে হাতে পাওয়া যায় না । তাই তার মামা অনেক কষ্ট করে জালে আটকিয়ে নিয়ে এসেছেন তার ভাগ্নির জন্য ।
তাদের বিয়ের ৬ মাসের মাথায় আপু লন্ডন চলে আসে । এখানে আসার পর চিএ দেখে অন্য রকম । ছেলে ভুয়া কলেজের কাগজ দেখিয়ে বিয়ে করছে ।
আপু সাথে সাথে দেশে চলে যেতে চাইছিল । কিন্তু তার বর তার পাসর্পোট লুকিয়ে রাখে । বাসার সাথে যোগাযোগ করলে সবাই বলে ,
সবই ভাগ্য । আল্লাহ যার সাথে যাকে মিলিয়ে রাখছে ।
যার এখন ডাক্তারি করার কথা সে এখন কে এফ সি র কামলা ।
ঘটনা ৩ : এই ঘটনাটা একটু অন্য রকম । আমার সাথে এক ভাই কাজ করে যার নাম রুমেল । তো রুমেল ভাই এর খালাতো বোনের এক বিয়ের প্রস্তাব আসছে । ছেলে লন্ডন পড়ালেখা করে আর ভাল চাকরী করে । তো ছেলে পক্ষ যখন মেয়ে দেখল তখন তাদের মেয়ে এত পছন্দ হইছে যে তারা তখনই বিয়ে করাতে চায় ।
তখন রুমেল ভাই এর খালু লন্ডনে রুমেল ভাইকে ফোন দিয়ে বললেন পুরো ঘটনা । তখন রুমেল ভাই বললেন ,ছেলে এখন কোথায়?
তখন তার খালু বলল ,এখানেই আছে ।
রুমেল ভাই বলল ,ছেলেকে দেন একটু কথা বলি ।
তাদের কথপোকথন একটু তুলে দিলাম ।
রুমেল : ভাই ভাল আছেন ?
ছেলে :ভাল ,আপনি?
রুমেল :হ্যা ভাই ,তা আপনি লন্ডন থাকেন কোথায় ?
ছেলে : আমি ইস্টহ্যাম থাকি ।
রুমেল : ভাই কোন কলেজ ?
ছেলে : লিডিন কলেজ (ভুয়া কলেজ)
রুমেল :তা ভাই জব করেন কই?
ছেলে :আমি মিডিয়াতে জব করি ।
রুমেল:তাইলে তো ভালই ,তা কোন মিডিয়া ?
ছেলে : লন্ডন পেপার ।
রুমেল: ভাই কী সাংবাদিক ?
ছেলে : না
রুমেল :ভাই কোন ইষ্টিশনে পএিকা দেন?
ছেলে একটু ভয় পেয়ে) লিভারপুল ইষ্ট্রিট
রুমেল:আচ্ছা আসলে দেখা হবে ।
এর পর তার খালু আর ঐ বিয়ে দেয়নি । এক বার ভাবুন ছেলে কাজ করে হকারি কিন্তু সে এটা এমন ভাবে বলল যে,সে এখানে বড় কোন হর্তাকর্তা ।
সেই ছেলে কিন্তু ঠিকই বিয়ে করে নিয়ে আসছে কোন মেয়েকে । হয়ত কোন মলি ,কনা আপুদের মত কোন আপুকে ।
তো সবাইকে আমি এতটুকুই বলব বিদেশি ছেলে হলেই ভাল হবে এমনটি নয় ।
জেনে শুনে তার পর আপনার মেয়েটিকে ,বোনটিকে বিয়ে দিন ।
একটা ভুল সারটা জীবন নষ্ট করতে পারে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।