মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যম ছেলে। টিপিক্যাল মধ্যবিত্ত আবেগ নিত্যসঙ্গী। তার ভিতরও নিয়ম ভাঙ্গার চেষ্টা করি মধ্যবিত্ত আচরণ দিয়েই.............
নাস্তিক শব্দটা ব্যক্তিগতভাবে অপছন্দ করি। এর বদলে না-ধর্মী শব্দটা ব্যবহারে স্বস্তি পাই। কারণ নাস্তিক শব্দের ভিতরে সর্বশক্তিমান একজনের অস্তিত্ত প্রচ্ছন্নভাবে হলেও স্বীকার করে নেবার একটা ব্যাপার চলে আসে।
না-ধর্মীদের প্রসঙ্গ আসলেই আস্তিকদের মনের ভিতর সাধারণ কিছু প্রশ্ন উদয় হয়। যার উত্তর তারা নিজেরাও একটু ভাবলেই পেয়ে যান। কিন্তু সেটা না করে তারা না-ধর্মীদেরকেই সেই প্রশ্নগুলো করেন। তারা হয়ত ভাবেন এগুলো খুবই সুচিন্তিত প্রশ্ন এবং এই প্রশ্নগুলোর উত্তর না-ধর্মীরা দিতে পারবেন না।
যদিও আমার ব্লগ বয়স খুবই কম তবুও বারংবার একই ধাঁচের প্রশ্ন দেখতে দেখতে কিছু উত্তর লেখার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছি।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
--প্রশ্ন ১:- না-ধর্মীদের নৈতিকতার ভিত্তি কি হবে সেটা আস্তিকদের প্রথম প্রশ্ন। এই প্রশ্নটাকে আর দৃঢ় করবার জন্য তারা মা-বোনের সাথে সহবাসের প্রসঙ্গও নিয়ে আসেন।
>> আস্তিকদের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, এই প্রসঙ্গটা আপনাদের কাছে যেমন অশালীন মনে হয়, না-ধর্মী কার জন্যেও তেমনই অশালীন। বরং বোনের সাথে সহবাসের প্রমাণ কিন্তু দেখা যায় বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের পাতায়। যদিও তাকে পরবর্তীতে ধর্মগ্রন্থেই সংশোধন করা হয়েছে, এই বলে যে সময়ের প্রয়োজনে এটা করা হয়েছিল।
না-ধর্মীর নৈতিকতার ভিত্তি মূলতঃ তাদের চিন্তার মুক্ত জানালাটা। যেই জানালা দিয়ে দেখে একজন না-ধর্মী ধর্মগ্রন্থের পাতায় লেখা তথাকথিত নৈতিকতার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে নৈতিকতায় সংশোধন আনতে পারে।
একজন ধার্মিকেরই ধর্মগ্রন্থে থাকা নৈতিকতার বিপক্ষে গিয়ে তাতে সংশোধন আনার দু’টো উদাহরণ দেই-
ক) সনাতন ধর্মে বিয়ের নিয়ম প্রচলিত ছিল না। তখন যে কেউ যে কোনো নারীকে ভোগ করতে পারত। এটাই স্বাভাবিক ছিল।
উদ্বালকের ছেলে শ্বেতকেতু সেই নৈতিকতার পরিবর্তন করে বিয়ের নিয়ম প্রচলন করে।
খ) ইসলামে একাধিক বিয়ে করা বা দাসীদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা অনৈতিক নয়। কিন্তু বর্তমান নৈতিকতার বিচারে সেটা কয়জন স্থাপন করে?
একটা সম্পুরক তথ্যঃ- বেসিক নৈতিকতা বাদে অন্যান্য নৈতিক শিক্ষাগুলো সমাজ ভেদে ভিন্ন হয়।
--প্রশ্ন ২:- না-ধর্মীদের বিয়ে প্রসঙ্গ। আদৌ বিয়ে করবে কি না? বা করলে সেটা কি নিয়মে হবে?
>> না-ধর্মীরা (আমাদের দেশের) বিয়ে করতে ইচ্ছুক।
কারণ আমাদের সামাজিক আচরনে বিবাহ বহির্ভুত একসাথে বসবাস অনৈতিক।
না-ধর্মীদের বিয়ের জন্যে আমাদের দেশে কোন রকম আইনী উপায় না থাকার কারণে ব্যবহৃত নিয়মটা বাধ্য হয়ে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে তার প্রাথমিক ধর্মের নিয়মেই পালন করতে হয়। কিন্তু হবু না-ধর্মী স্বামী-স্ত্রীর প্রাথমিক ধর্ম যদি ভিন্ন ভিন্ন হয় তাহলে তাদের জন্য কোর্ট-ম্যারেজের একটা ব্যাবস্থা রয়েছে।
সম্পুরক দাবীঃ- সরকারী ভাবে না-ধর্মীদের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।
--প্রশ্ন ৩:- মৃত্যুর পর না-ধর্মীদের শরীরের কি করা হবে? দাফন করা হবে না পুড়িয়ে ফেলা হবে না ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া হবে?
>> এক্ষেত্রে সবচাইতে সহজ সমাধান হলো দেহটাকে মানব কল্যাণের কাজে দান করে যাওয়া।
সেটা হতে পারে কোনো মেডিক্যাল কলেজে দান করে যাওয়া। বা দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আলাদা আলাদা ভাবে দান করে যাওয়া।
--প্রশ্ন ৪:- না-ধর্মীতা মানেই কি ইসলামের বিরোধিতা করা? অন্য ধর্ম নিয়ে না-ধর্মীরা লেখে না কেন? এই প্রশ্নটা আসলে এই ব্লগেই বেশি করা হয়ে থাকে।
>> একটু চিন্তা করে দেখেন, এই খানে যে না-ধর্মীরা লেখালেখি করে তাদের বেশিরভাগেরই প্রাথমিক ধর্ম ছিল ইসলাম। এই ইসলামিক পরিমন্ডল থেকে বের হয়ে আসার সময় তাদের প্রাথমিক অবিশ্বাসের শুরু ইসলামিক বিশ্বাসকে রিফিউট করার মাধ্যমে।
যার দরূন স্বাভাবিকভাবেই তাদের পড়াশোনাও এই বিষয়ে। অন্যান্য ধর্মের বিপক্ষেও তাদের পড়াশোনা রয়েছে। এছাড়া ইসলাম ভিন্ন অন্য ধর্মের রিফিউট করে অনেক মুসলিম নিজস্বঃ আস্তিকতার আঙ্গিক থেকে বিভিন্ন পোস্ট করেন। অতএব না-ধর্মীদের ঐ সংক্রান্ত পোস্ট দেবার দরকার আসলে তেমন ভাবে প্রয়োজন পড়েনা। সর্বশেষ যে কারণে না-ধর্মীরা ইসলামের বিরুদ্ধাচারণ করে পোস্ট দেন সেটা হল ইসলামিক জঙ্গীবাদের উত্থান।
অনেক জঙ্গীবাদী দলের মূল উদ্দেশ্য বিভিন্ন ভাবে আস্তিকদের নিজের দলে ভিড়িয়ে জঙ্গীবাদ কায়েম করা। না-ধর্মীরা মূলতঃ শান্তিকামী। যার জন্য এই ইসলামিক জঙ্গীবাদের উত্থান বন্ধ করবার লক্ষ্যেই ইসলামের বিভিন্ন সমস্যা উল্লেখ করে পোস্ট আসে যাতে আপনার অন্ধভাবে আগুনে ঝাঁপিয়ে না পড়েন।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ধন্যবাদ সবাইকে কস্ট করে লেখাটা পড়বার জন্য। আশাকরি ভবিষ্যতে না-ধর্মীদের সম্পর্কে নতুন করে এই প্রশ্নগুলো আর দেখতে হবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।