মনের জানালায় দাঁড়িয়ে ভাবনাগুলোর মিলিয়ে যাওয়া দেখি। গুচ্ছ গুচ্ছ মেঘ হয়ে, ঐ দূর দিগন্ত পানে...
বিডি আইডলের বদান্যতায় মনপুরা পুরোটা দেখার সৌভাগ্য হলো। তাও ডিভিডি প্রিন্টে। ধন্যবাদ তাকে
খুঁতখুঁতে মন মুভি শুরু হতে না হতেই খুঁতখুঁতানো শুরু করলো। এটা সেটা বের করে গাইগুঁই করতে থাকলো।
ক্যামেরার অতিরিক্ত মুভমেন্ট বের করে, লাইটিংয়ে সমস্যা ধরে, গানে আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারে নাক কোঁচকায়, সংলাপের সাথে ঠোঁট মেলানোর সমস্যা বের করে, চিত্রনাট্যে খুঁত ধরে, রাতের শুটিংয়ে দুটো তিনটে চাঁদ বের করতে মরিয়া হয়।
কিন্তু আর্শ্চয্য হয়ে লক্ষ্য করলাম মুভিটি দেখতে আমার ভালো লাগছে। শুধু তাই নয়। একবার শেষ করে দৃতীয়বার দেখার জন্যও ভিতরে ভিতরে প্রস্তুত হয়ে আছি। বুঝলাম শুরুর দিকের খুঁতখুঁতানিটা হয়েছে এই মুভিটি নিয়ে সমালোচনাগুলো পড়ে।
কয়েকটা পড়েছি এই ব্লগেই।
শেষ করেই আমার মনে পরলো আফজাল হোসেনের পরিচালককে উদ্দেশ্য করে লেখা খোলা চিঠিটির কথা। প্রথম আলোর আনন্দতে ছাপিয়েছিল, "মনপুরা" যখন বেরুবো বেরুবো করছিল। আফজাল হোসেনের উচ্ছ্বাস চোখে ভাসছে যেন। এই মুভিটি নিয়ে যে পরিমান আশা ছিল মুভি শেষ করে উঠে এই বিশ্বাস জন্মালো যে, পরিচালক তার সাড়ে পনেরো আনাই পূরণে সমর্থ্য হয়েছেন।
বাকি আধ আনাও সানন্দে পরিচালকের পকেটে পুরে দেয়া যায় যদি বলা হয় যে এটি পরিচালক এবং অধিকাংশ কলা-কুশলীর প্রথম মুভি।
কাহিনীর গতিশীলতা, অভিনয় দক্ষতা, সূক্ষ্মাতি-সূক্ষ্ম বিষয়ের উপর নজর, পরিচালকের গুণীপনা, লোকেশন, ছবির মান, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে নান্দনিকতার ছোঁয়া আর সর্বোপরি গান এবং গানের কথাগুলো - ঠিক একটা শব্দে এই মুভির সমস্ত শিল্পকলার কীর্তন গাওয়া দুঃসাধ্য। এমন কিছু দৃশ্য আছে, এমন কিছু মূহুর্ত আছে শুধু যার জন্যই সানন্দে মুভিটি আরেকবার দেখতে বসে যাওয়া যায়।
এই মুভির একান্ত নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, কাহিনীতে মৌলিকত্ব আছে, লোকগীতি থেকে নেয়া গান আছে, সবার উপরে আছে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কিছু মানুষের কথা, পরী এবং সোনাইয়ের কথা। সব মিলিয়ে এটি বাংলাদেশেরই মুভি।
চঞ্চল আর মিলির অভিনয় নিয়ে না বললেই নয়। মিলি আর চঞ্চল দুজনের হাসি দুটি এতো মিষ্টি যে দুজনকে হাসতে দেখলেই ঠোটেঁর কোণায় হাসি চলে আসে। একটা দৃশ্যের কথা মনে পরছে, সোনাই যখন পরীকে নৌকায় করে পৌছে দিতে যায়, দুজনের ঠোঁটে যখন মিষ্টি মিষ্টি হাসি, পরীর পেছনে মেঘমুক্ত নীল আকাশ, নৌকা যখন দুলছে মৃদু মৃদু। পরীকে তখন ঠিক ঠিক লাগছিল নীল আকাশের পরীর মত।
জহির রায়হান, তানভীর মোকাম্মেল, তারেক মাসুদের পর আরেকজন পছন্দের বাংলাদেশী পরিচালককে পেয়ে গেলাম।
এই মুভিটি আমার দেখা সেরা বাংলাদেশী মুভির একটি হিসেবে নির্দ্বিধায় ঠাঁই করে নিবে।
...
কাল আরেকটা মুভি দেখছিলাম। সামুড়াই ৩। তোশিরো মিফিয়নের ভক্ত আমি অনেক আগে থেকেই। চলতে ফিরতে যে একজন জীবন্ত সামুড়াই।
তার প্রতিটা ভঙ্গী, প্রতিটা উক্তি মুগ্ধ করে দেয়। সামুড়াই সিরিজের এটি সর্বোশেষ মুভি। জাপানের বিখ্যাত সোর্ডসম্যান মিয়ামুতো মুশাশিকে নিয়েই এই ছবির কাহিনী। মুভির সারাংশ নিয়ে আর বলছিনা। একটি লাইনে বলতে পারি মুভিটা আমার ভালো লেগেছে।
একটু বেশীই। তোশিরো মিফিয়ন বলে কথা। IMDB-র রেটিং ১০ এ ৭.৯।
http://www.imdb.com/title/tt0049710/
মিয়ামুতো মুশাশিকে নিয়ে আরো জানতে চাইলে উইকিপিডিয়া থেকে জেনে নিতে পারেন : http://en.wikipedia.org/wiki/Miyamoto_Musashi
আমার দেখা ভালোলাগা কিছু মুভির তালিকা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।