আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বর্তমান অস্থির সময়ে একান্ত অনুভূতিগুলো

সাধারন একজন এই পোস্ট টি সবার জন্য নয়। যারা অপরের মতামত কে শ্রদ্ধা করেন একমত না হলেও এবং অন্ধ আবেগ পোষন করেন না তারাই কমেন্ট করবেন বা পড়বেন। অস্থির একটি ট্রানজিশনাল সময় পার করছি। দেশের পরিস্থিতি আসলে কেমন যেন। প্রথম দিন থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিন ই শাহবাগে যাই।

আসলে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের কাছেই আমি থাকি। গভীর রাত পর্যন্ত মিছিল যায় নিচ দিয়ে,রুমে শুয়ে সারারাত স্লোগান শুনি। বুকের ভেতর অন্যরকম ভাললাগা কাজ করে। যাক যুব সমাজ অমিত সম্ভাবনাময়,অনেক কিছু পারে। দেশে চেন্জ আসবে অবশ্যই,আসতে বাধ্য।

গভীর আশা নিয়ে নতুন দিনের পথ চেয়ে থাকি। কিন্তু কিছু এলোমেলো কথাও মনে ভীড় করে। অবশ্য এগুলো একান্তই ব্যাক্তিগত অনুভূতি। কারো মতের সাথে না মিললেও আমি দুঃখিত নই। কারন নিজের মত প্রকাশ করতে পারব বলেই ব্লগে একাউন্ট খুলেছি।

যা হোক শাহবাগের জমায়েত সম্পর্কে একটা সাইকোলজি মাথায় এল,এখানে কেউ আসে ডেটিং করতে(কারন প্রতিদিন অনেক জুটি দেখি),কেউ কেউ অফিস শেষ করে বাসায় কিছু করবার নেই বলে একটু আড্ডা দিতে(আমার কতিপয় ফ্রেন্ড),কেউ আসে হুজুগে চারদিকে এত মিডিয়া এত কাভারেজ(ঢাকায় রাস্তায় খোড়াখুড়ি হলেও শখানেক লোক পাওয়া যায় যারা গভীর আগ্রহ নিয়ে দেখে এই দলের),অনেকেই দল বেেধঁ স্কুল কলেজ থেকে আসে কারন প্রতিদিন বিভিন্ন গনমাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠান গুলোর নাম বা কারো কারো সাক্ষাৎকার থাকে। অনেকেই আসে কৌতুহলের কারনে। মিডিয়া যে হারে হাইলাইট করছে তাতে না এসেও উপায় নাই। উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা আসছে কারন না এলে ভারচুয়াল জগতে ক্ষ্যাত বা দেশদ্রোহী হিসেবে প্রমানিত হবে। তবে স্যালুট তাদের যারা প্রথম থেকে সাহস করে ঘর থেকে বের হয়ে মাটি কামড়ে পড়ে থেকেছে।

তাদের কারনেই শাহবাগে আজ মানুষের অভাব নেই। এ থেকে বিপ্লবের একটা ফর্মুলা মাথায় এল,আপনাকে ২০০-৩০০ সমমনা আদর্শবাদী মানুষ দরকার(ভাড়া করা নয়) যারা মাটিকামড়ে পড়ে থাকতে পারবে,ব্যাপক মিডিয়া সমর্থন। এভাবে দুই তিন দিন টিকে থাকতে পারলেই সমর্থনের অভাব হবে না(আরব বিশ্ব উদাহরন,ব্যাপক মিডিয়া কাভারেজ সমগ্র বিশ্বকে সহানুভূতিশীল করে তুলেছিল বলে সমর্থনের অভাব হয়নি বলে আমার বিশ্বাস)। কিন্তু বের হবে কে,মানে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধঁবে কে?এজন্যই বড় বড় অন্যায় ঘটে গেলেও আমাদের রাজনীতিবিদরা পার পেয়ে যায়। অনেকেই বলছেন অন্যদলের রাজাকারদের কি হবে?আমি আশাবাদী মানুষ।

সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন কখনো ভাল ফল বয়ে আনে না। এতে ব্যাপক প্রানহানি ঘটার সম্ভাবনা থাকে,দেশ অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। তবে থেমে থাকা চলবে না,ব্লগ অনলাইন ফেসবুকের মাধ্যমে লেখালেখি করে মানুষদের সচেতন করেও প্রতিবাদ সম্ভব। আরে ভাই কেউ তো আর চিরদিন ক্ষমতায় থাকে না। এখন যদি ৪০ বছর আগের অপরাধের বিচার এখন করবার দাবী জানানো যায়,তবে অপেক্ষা করতে দোষ কি? (এই পর্যন্ত দুই তিন দিন আগে লিখেছিলাম) আজ বাকি টুকু লিখছি।

কয়েকদিন হল কেমন দমবন্ধ দমবন্ধ লাগছে। শাহবাগ আন্দোলন কোন দিকে যাচ্ছে?বেশ কিছু আশঙ্কা জাগছে। আন্দোলনকে দারুনভাবে ব্যবহার করে ঘুরে দাড়িয়েছে আওয়ামী লীগ। তাদের সব ব্যর্থতা আড়ালে চলে গিয়েছে। বিএনপি বরাবরই ক্ষীণ বুদ্ধির দল হিসেবে একেবারেই ব্যাকফুটে।

তারা ভয়ে আছে কিছু বললেই না ছাগু বা রাজাকার ট্যাগ লাগে কি না। ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে মনে হয়েছে জামাতী মিডিয়া বন্ধ(সোনা ব্লগ,আমার দেশ এগুলো) করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কারন মত প্রকাশের অধিকার সবার থাকা উচিৎ। ওদের এগুলো বন্ধ হলে ব্লগে কার সাথে ফাইট করব,ওদের গতিবিধি কিভাবে জানব?আর সব সময় যে আমার জানাটা সত্য তা না ও হতে পারে। অন্য একটা ভিউ ও তো থাকতে পারে,এটাও চিন্তা করা উচিৎ।

সুতরাং নিষিদ্ধ করা কোন সমাধান নয়। একজন ব্লগার হিসেবে ভিন্নমতের হলেও আমি তাদের শ্রদ্ধা করি যতক্ষন তারা কলমযুদ্ধে আছে। আরেকটি বড় চিন্তার বিষয় হল জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ হলে ওরা পুরোপুরি জঙ্গি হয়ে যাবে না ত?দেশ আবার ফাকিস্তানের মত চোরা গোপ্তা হামলায় অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে না ত?তবে ওদের কেটে ছেটে সাইজে রাখা অবশ্যই প্রয়োজন। এই প্রথম শিবিরের জন্য করুনা হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরেই ক্যাম্পাসগুলোতে তারা যে ভাবে থাকত,তাতে মনে হত ওদের কখোনো কিছু করা সম্ভব নয়।

অথচ এখন বেচারারা..চুক চুক.. নাস্তিকতা এখন ফ্যাশন হয়ে উঠছে। এ সম্পর্কে আমার ভিউ হল,আপনি নাস্তিক,আপনাকে স্যালুট। হয়ত আপনার কাছে ধর্মপালন করার পক্ষে শক্ত যুক্তি নেই,তাই নাস্তিক। এপর্যন্ত ঠিক আছে। কিন্তু আপনি লাখ লাখ ধর্ম পালনকারীদের ধর্ম নিয়ে উল্টা পাল্টা কথা লিখবেন কটাক্ষ করবেন এটা ঠিক না।

নিজের মত নিজের কাছে রাখুন। কোন ধর্মকে নিয়ে কটাক্ষ করবেন না। কেননা আপনি সবজান্তা নন,আপনার জানার বাইরেও অনেক কিছু আছে। পরিশেষে সামনের দিন গুলো কঠিন আসছে। একই ভাবে অনির্দিষ্টকাল আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া কতটুকু সম্ভব জানি না।

একসময় সব সহনীয় হয়ে আসবে,মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। তাই আন্দোলন জোরদার করবার জন্য সময়সীমা বেধে দেয়া,চাপ সৃষ্টি করা ইত্যাদি প্রয়োজন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.