পতাকায় ফালগুন মানচিত্রে বসন্ত
অভিজাত ও আধুনিক পদ্ধতিতে রান্না ও খাদ্যবস্তু পরিবেশনের চর্চা বিস্তারলাভ করার আগে শতরঞ্জি বা মাদুর পেতে সবাই মিলে মেঝেতে বসে খাবারগ্রহন জনপ্রিয় ছিল। তবে ১৭৯৩ সালের পর নায়েব নাজিমদের আমলে ঢাকা শহরে পৃথক ভোজনকক্ষ বা ডাইনিং রুমে খাদ্য গ্রহণ জনপ্রিয় হয়েছিল বলেও জানা যায়।
মুঘল শাসনকালে বাংলায় উন্নত ও সুস্বাদু খাদ্য রান্না ও পরিবেশন গুরুত্ব পায়। মুঘল যুগে বাংলার রাজধানী ঢাকায় আধুনিক রান্না ও পরিবেশনের চর্চা শুরু হয়।
মুঘল আমলের শেষ দিকে ঢাকায় প্রচলন হয় পৃথক ভোজন কক্ষে আধুনিক খাদ্যগ্রহণ পদ্ধতির, যা ১৮৪০ সাল নাগাদ ঢাকায় অভিজাত ইংরেজ ও মুসলিমদের মধ্যে চালু হয়েছিল।
১৮৫৭ সালে উপমহাদেশ জুড়ে ইংরেজ বিরোধী যে সিপাহী বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল, তার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল ঢাকা। এই বিদ্রোহ চলাকালে ইংরেজদের সহায়তাকারীরা তাদের সুনজরে আসে এবং ঢাকা দ্রুত উন্নতি লাভ করে। সহায়তাকারীদের মধ্যে মুসলিম ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের লোকই ছিল।
তবে সাধারণভাবে মুসলিম সমাজ এ সময়ে বিশেষভাবে ইংরেজ বিদ্বেষী হয়ে ওঠে স্বভাবতই অভিজাত্ হিন্দুরা ইংরেজদের আনুকল্য পায়। ফলে সম্ভ্রান্ত হিন্দুদের জীবনযাত্রায়ও অগ্রগতি আসে।
ধারণা করা হয়, ডাইনিং রুম তাদের মধ্যে এ সময় থেকেই জনপ্রিয় হয়েছিল।
দীর্ঘ দুশো বছর পর ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ কার্যকর হবার পর ঢাকা পুণরায় রাজধানী হয় এবং প্রথমে উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারে ও পরে দেশ বিভাগ উত্তরকালে মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যেও ব্যাপকভাবে প্রচলন হয় ডাইনিং রুম ও ডাইনিং টেবিলে বসে খাদ্যগ্রহণের প্রচলন।
এর পর বাঙালিরা আর বসে থাকেনি তাদের বাড়িতে-বাড়িতে ডাইনিং রুম বা ভোজন কক্ষ এবং প্রতিষ্ঠান গুলোতে গড়ে উঠতে শুরু করে ডাইনিং হল।
যা এখন রীতিমতো শিল্প হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। ডাইনিং রুম এবং নানামাত্রিক টেবিলই অনেকক্ষেত্রে আভিজাত্য প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।