আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চাঁপাই নবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত



বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফ এর গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত এবং দুই জন আহত হয়েছে। বিডিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিহত দুই জনের লাশ এবং আহত ২ জনকে বিএসএফ ভারতীয় সীমান্তে নিয়ে গেছে। লাশ ফেরত দেবার দাবিতে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। ৩৯ রাইফেল ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল জায়েদ হোসেন জানিয়েছেন, আজ বুধবার ভোরে চাঁপাই নবাবগঞ্জের চৌকি সীমান্তে বাংলাদেশী গরু ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে বিএসএফ গুলি চালায়। এতে দুই গরু ব্যবসায়ী নিহত এবং অপর দুই জন আহত হয়।

এর আগে শনিবার কুড়িগ্রাম সীমান্তে এক বাংলাদেশী কিশোরী বিএসএফর গুলিতে মারা যায়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তার প্রতিবাদ করা হয়েছে। তবে প্রতিদিনই সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে নিরীহ বাংলাদেশীদের নিহত হবার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও মানবাধিকার কর্মীসহ বিভিন্ন মহল। তারা এই ধরণের হত্যাকান্ড বন্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, একদিকে সন্ত্রাস দমনের নামে আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনী বিনা বিচারে হত্যাকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

অন্যদিকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীও একের পর এক বাংলাদেশীদের হত্যা করে চরমভাবে মানবাধিকার লংঘন করছে। সম্প্রতি মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অক্টোবর মাসেই বিএসএফ এর হাতে ৬ বাংলাদেশী নিহত হয়েছে। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বিনা বিচারে বাংলাদেশীদের হত্যাকান্ডের বিষয়ে বার বার দুই দেশের মধ্যে বৈঠক হলেও তার কোন ফলই বাস্তবে কাজে আসছে না। বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও বিডিআরের সাবেক ডিজি মোহাম্মদ ফজলুর রহমান এই হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সরকারকে অবিলম্বে এই হত্যাকান্ড বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।

রেডিও তেহরানকে তিনি বলেছেন, আমাদের দুর্বলতার সুযোগেই বিএসএফ বিনা বিচারে বাংলাদেশীদের হত্যা করছে। ফজলুর রহমান বলেছেন, আমরা জানি ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের সাথে বর্তমান সরকারের ভাল সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু এই সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর পরই মাঝখানে পিলখানা হত্যাকান্ডের পর কিছু দিন বিএসএফ তাদের এই হত্যাকান্ড বন্ধ রাখলেও আবার বিএসএফ তাদের হত্যাকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। বিডিআরের সাবেক ডিজি আরো বলেছেন, এই হত্যাকান্ড বন্ধে সরকারের উচিত ভারতের হাইকমিশনারকে ডেকে এনে ক্ষতিপূরণ দাবি করা। মানবাধিকার কর্মী ও মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিচালক নাসিরউদ্দিন এলেন এই বিষয়ে রেডিও তেহরানকে বলেছেন, বিএসএফ যে ভাবে বিনাবিচারে বাংলাদেশীদের হত্যা করছে তাতে চরমভাবে মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে।

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের কোন নাগরিক যদি ভিসা ছাড়া অবৈধভাবে ভারতীয় এলাকায় প্রবেশ করে তাহলে তাদের হত্যা করার অধিকার বিএসএফএর নেই। তারা আমাদের কাছে তাদের ফেরত দিতে পারে। কিন্তু আমরা দেখছি বিএসএফ নিজেরাই আমাদের সীমান্তে এসে আমাদের লোকজনকে গুলি করে হত্যা করছে। নাসিরউদ্দিন এলেন আরো বলেছেন, বিডিআর ও বিএসএফ এর মধ্যে সীমান্তে হত্যাকান্ড কমিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন সময়ে বৈঠক হলেও ভারত সেই বৈঠকে তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি কখনই রাখেনি। তিনি বলেছেন, বিএসএফ এর এই হত্যাকান্ড বন্ধে এখন ডিজি পর্যায়ের আলোচনা না করে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনা দরকার।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএসএফ শুধু মাত্র তাদের সীমান্তে বাংলাদেশীরা অনুপ্রবেশ করলে তাদেরকেই হত্যা করছে না, তারা বিভিন্ন সীমান্তে বাংলাদেশ ভূখন্ডে প্রবেশ করে বাংলাদেশীদের হত্যা করছে। এতে করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাই সরকারকে অবিলম্বে এই হত্যাকান্ড বন্ধে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.