রূদ্ধ সম্ভাবনার অসম্ভবে অবিরত কর্ষণে উচ্ছল পংক্তিমালা কান্ত হয়নি কখনও
ত্রিশোর্ধ, কৃষকায়, বিবর্ণ এক নদী-কুল নারী।
গাঢ় সবুজ মলিন শাড়ী, তামাটে নথ, প্লাস্টিক চুড়ি।
ঝড়ো জীবনের ঝড়ে, বিধ্বস্থ তার এলো খোপার ঘূর্ণি,
উন্মত্ত বাতাস খুলে নিতেচায়, টেনে রাখে শাড়ী।
ঝিরি ঝিরি কাঁপে ছনের চালার জোড়া তালি ভাঁজ
ধুসর মানচিত্র আঁকা অবয়ব তার আনত সলাজ।
উত্তাল উন্মাত্ততায় ভাঙছে যেখানে মেঘনার বাঁধ-
জীর্ণ ডেরায়, নি:স্ব কুটিরে ওখানে তার সন্তান।
গেরস্থ বাড়ীতে করে দুমুঠো খাবারের সংস্থান;
মুহূর্তেই কেড়ে নিতে পারে ভাঙ্গনের দুর্বিণীত গ্রাস,
স্বজনহীন, শংকাকুল, অরক্ষিত এই নিরূপায় বসবাস।
দু:স্বপ্ন ঘেরা রাত আর দিনভর কেবলই দুশ্চিন্তা;
অবলম্বন তবুও সুনিবিড় এক স্বপ্নময় আকাংখা,
প্রসারিত হয় যদি কোন সামর্থ্য অলৌকিক,
ভাঙ্গন ছাড়িয়ে জোটে যদি কোন একদিন
শুধু বসবাসের উপযুক্ত ভিটেমাটি এক টুকরো;
বেঁধে নেবে বাঁশ খড়ে ছাওয়া নিজস্ব চালা।
স্বপ্ন আরও হয় যদি গোসল করার ছোট্ট একটা কূয়া;
ঘাটে বেআব্রু হওয়া থেকে, হবে বড় বাঁচা বেঁচে যাওয়া।
সীমানা ঘিরে দিবে সুপারি পাতার আওতা বেড়া।
পথ বানাতে দেবে না কাউকে বাড়ীর আঙিনা দিয়ে।
ঘুমাবে নিশ্চিন্তে হাত রেখে শিথানের চকচকে ছেনীতে।
যাত্রাদলের এক বাঈজী মেয়ের সাথে চলে গেছে,
বোকা-পাঁঠা তার স্বামীটা কে জানে কোন নিরুদ্দেশে।
গেরস্থ বাড়ীতে খেটেই বুঝি কোলের ছেলেটা বাঁচাতে হবে।
বারনারী বাঈজী মেয়ের কাছে কতটুকু ভালবাসাইবা আছে।
বুকভরা মমতা তার, জড়ায় ব্যথা ভরা দীর্ঘশ্বাসে।
আপন ভাবনা ছেড়েছে কবেই পোড় খাওয়া এই নারী,
শুধু চাই সন্তানের নিরাপত্তা আর বেড়ে ওঠার স্বাধীনতা,
নিজের ঘর, নদীতে তলিয়ে যাবার উৎকণ্ঠাহীন রাত,
আপন বারান্দায় ক্লান্ত বিকেলের মুক্ত অবকাশ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।