ধর্মের সুশীতল ছায়াতলে সর্ব দীক্ষায়,সর্ব গুনে গুণী হয়ে মানবতার সেবায় নিঃস্বার্থ ভাবে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে সৎ,নিষ্ঠা আর সততার সাথে মহৎ কিছু সৃষ্টি করার মাঝে কি যে আনন্দ,কি যে অনাবিল শান্তি তা তিনি উপলব্ধি করেছিলেন অন্তর দিয়ে। তিনি সত্যিই মহান তাই তো সততাকে করেছেন নিজ জীবনের হাতিয়ার। ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে চান সততার সাথে আর মৃত্যুর পর বাঁচতে চান প্রতিটা মানুষের হৃদয়ে সততার প্রতীক সৎ মানুষ হিসেবে। অনুমান করতে পারছেন আমি কার কথা বলছি?আমি দৃঢ় চিত্তে বলছি সবাই বুঝে গিয়েছেন যে, আমি কাজী আবেদ হোসেনের কথা বলছি। তার কথা না বলে থাকা যায় না।
তিনি এমনই একজন মানুষ “যিনি অমরত্বের প্রত্যাশা করেন না,যার নেই কোন দাবী-দাওয়া,তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন এই নশ্বর জীবনের মানেই শুধু দেশ আর দেশের মানুষের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়ে ভাল কিছু করা,যার সুফল দেশের মানুষ ভোগ করবে জন্ম-জন্মান্তর ধরে। ”আর তাই তো নিজের মনের ইচ্ছে,দেশের মানুষের জন্যে কিছু করার প্রবল ইচ্ছের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিলেন তার কর্মস্থল নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জে। ২০০৮সাল কাজী আবেদ হোসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্ব নিয়ে মোহনগঞ্জে আসেন মোহনগঞ্জ বাসীর আশীর্বাদ স্বরূপ। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই পরিলক্ষিত হয় সরকারি কর্মকর্তাগণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে চাকুরী করতে অনীহা পোষণ করেন। শুধু তা-ই নয় বিভিন্ন তদবীরের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নিজেদের পছন্দের জায়গায় দ্রুত বদলীর জন্য সচেষ্ট থাকেন।
কিন্তু তিনি এমনই একজন কর্মকর্তা যিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসে খুবই খুশি হলেন আর স্বাচ্ছন্দে নিজেকে মানিয়ে নিলেন। তিনি উন্নত কোন সদর উপজেলা বা নামী-দামী কোন উপজেলায় চাকুরী করার কথা ভাবলেন না। তিনি ভাবলেন কিভাবে মোহনগঞ্জ উপজেলা আর এই উপজেলাবাসীর উত্তর উত্তর উন্নয়ন সাধন করা যায়?এই ভাবনাকে মাথায় রেখে মোহনগঞ্জে যোগদানের সাথে সাথে তিনি একা একা পুরো মোহনগঞ্জ শহর ঘুরে দেখতে লাগলেন। ঘুরতে ঘুরতে একদিন একলোকের সঙ্গে তার দেখা হল । তিনি লোকটির কাছ থেকে এলাকা সম্পর্কে জানছিলেন।
একসময় লোকটি তার পরিচয় জানতে চাইল কিন্তু তিনি নিজের পরিচয় না দিয়ে ভাল করে এলাকা সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছিলেন। এখানে কাজী আবেদ হোসেন অণুসরণ করছিলেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর(রঃ)কে। তার মনে পড়ে গিয়েছিল হযরত ওমর (রাঃ)কথা। তিনি হযরত ওমর(রাঃ)এর জীবণী পড়েছেন । তাতে তিনি দেখেছেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হয়েও হযরত ওমর(রাঃ) গভীর রাতে ছদ্দবেশে ঘুরে ঘুরে মানুষের দুঃখ ঘুচানোর চেষ্টা করেছেন।
আবেদ হোসেন হযরত ওমর(রাঃ)এই কর্মকে গভীর মর্মে উপলব্ধি করেছিলেন। তিনি শুধু দেশপ্রেমিকই নন সত্যিকার অর্থে একজন ধর্ম অনুরাগীও তাই তো তিনি ধর্মকেও নিজ জীবনে কাজে লাগিয়েছেন যতন করে। কাজী আবেদ হোসেন নিজের পরিচয় গোপন করলেন কারণ তিনি জানতেন তার পরিচয় দিলে অনেক সত্যি তথ্য তার অজানা থেকে যাবে। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল সত্যিকে সঠিকভাবে জেনে সঠিক পদ্ধতিতে সুন্দর ভাবে বাস্তবায়ন করা। তাই তো তিনি আনন্দিত কন্ঠে গেয়ে ওঠেন”জন্মেছি আমি আগেও অনেক মরেছি তোমারই কোলে মুক্তি পা্ইনি শুধু তোমাকে আবার দেখব বলে, বারবার ফিরে এসেছি আমরা এই পৃথিবীর টানে।
কখনো ঘাঙ্গোর কখনো কো পাই কপোতাক্ষের গানে। ”দেশকে তিনি যেন খুঁজে পান সমস্ত প্রকৃতির মাঝে কন্ঠ ছেড়ে তার মনের আনন্দে গাওয়া উপরের গান এটাই প্রমান করে।
(চলবে)
বিঃদ্রঃলেখণীর শেষ পর্বে সমস্ত লেখার তথ্যসূত্র দেয়া হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।