আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এদের কোন ঘরে স্হান হবে?

ভোরের তারা হয়ে একাকি পথ খুজি

"এখন শ্রীঘরে" -শিরোনামে প্রথম আলোর প্রথম পাতায় প্রথম কলামে একটা লেখা বেরিয়েছে। বিষয়টা এরকম- "ভুয়া পরিচয় দিয়ে সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করে আমির হোসেন খান নামের এক যুবক এখন শ্রীঘরে। পুলিশ জানায় নৌবাহিনীর কর্মকর্তার পদে চাকরি করেন-এমন ভুয়া পরিচয় দিয়ে ২০০৭ সালের ২ এপ্রিল শিরুয়াইল ইউনিয়নের এক মেয়েকে বিয়ে করেন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ....আমির। এক পর্যায়ে তার আসল পরিচয় ফাস হয়ে যায়। গতকাল শুক্রবার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

" শিরুয়াইল ইউনিয়নের সাহসী মানুষ গুলোকে সালাম জানাই। তারা এই রক্ষনশীল সমাজ ব্যবস্হায় থেকেও বিয়ের আড়াই বছর পর এমন একটা পদক্ষেপ নিতে পেরেছেন। লোকলজ্জা, অর্থনৈতিক দৈনতা কোন কিছুই তাদের দমাতে পারে নাই। কারন তারা সঠিক সিদ্ধা্ন্তটাই নিয়েছে। যে ভুল হয়েছে তা আর দ্বিতীয়বার তারা করে নাই, এই প্রতারক ভবিষ্যতে মেয়েটিকে কষ্ট দেয়া ছাড়া আর কিছুই দিবে না।

অথচ খোদ ঢাকা শহরে সম্ভ্রা্ন্ত পরিবারের অনেক উচ্চ শিক্ষীত দূদার্ন্ত সুন্দরী ডাক্তার ইঞ্জিনীয়ার মেয়ে আছে যারা সমাজে লোকলজ্জার ভয়ে মুখ বুজে প্রতারক স্বামীর সংসার করে চলেছেন। যাদের প্রতারিত হবার খবর কেউ জানে না, এরা নীরবে নিভৃতে যৌতুকের চাপ, শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার সয়ে চলেছেন দিনের পর দিন। তাদের কেউ কেউ তীব্র মানসিক অত্যাচারে চোখ হারিয়েছেন, কেউবা মানসিক ভারসাম্য হারাবার পথে......। কেউ আছেন মিথ্যা ভালোবাসার ফাদে পড়ে বাবা মায়ের অমতে বিয়ে করেছেন। হয়তবা সুন্দর একটা সাজানো গোছানো সংসারের স্বপ্ন ছিলো চোখে।

বেচারির স্বপ্নের প্রথম মৃত্যু ঘটে যখন জানলেন স্বামী প্রবরটির তার পাশে দাড়ানোর মত তেমন কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা রাখে না, এতদিন যা বলেছে তা মিথ্যা। অথচ ভালবাসার মানুষটির জন্য সে দেশ বিদেশের কত পিএইচডি, ডাক্তার, ইঞ্জিনীয়ার, ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের পাঠানো প্রস্তাব নাকচ করেছিল। পরবর্তীতে চেষ্টা করেছিল স্বামীকে শিক্ষীত করতে, পারেননি। তার স্বপ্নের দ্বিতীয় মৃত্যু ঘটে যখন দেখলেন বিয়ের সাত মাসের মাথায় মধ্যরাতে তার ভালবেসে বিয়ে করা মানুষটি তাকে ধরে রেখেছে এবং শ্বাশুড়ী ননদ মিলে তাকে মেরে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। বড় অচেনা লাগে তখন মানুষটিকে, ভাবে "এই লোকটির জন্য সে সারা দুনিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ব করেছে, বাবা মাকে রাজী করানোর জন্য দিনের পর দিন না খেয়ে থেকেছে, এমনকি ফাসি পর্যন্ত নিতে গেছে " ।

তার স্বপ্নের তৃতীয় মৃত্যু ঘটে যখন দেখলেন বছরের পর বছর ধারের নাম দিয়ে বাপের বাড়ী থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার যৌতুক আনতে বাধ্য করা হচ্ছে এবং তুলে দিতে হয়েছে সমস্ত স্বর্ণালন্কার। তার স্বপ্নের চতুর্থ মৃত্যু ঘটে যখন দেখলেন তার বাবার রেখে যাওয়া শেষ সম্বল বাড়ীটি প্রতারক স্বামী জাল দলিল করে ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নেবার চেষ্টা করছে। সেই সাথে চলছে অন্য পুরুষকে জড়িয়ে সন্দেহ করা এবং মাস শেষ হলে তার অতি কষ্টে উপার্জিত বেতন কেড়ে নেয়া। স্বামী জাতের লোকটি কখনও নিজেকে বাচাতে স্ত্রীকে লেলিয়ে দিত পাওনাদারের দিকে, আর পাওনাদাররা মনের আশ মিটিয়ে মেয়েটিকে অপমান করতো। পাষন্ড স্বামী কখনওবা স্ত্রীর সই জাল করে চেক পাওনাদারের হাতে তুলে দিয়েছে, পরবর্তীতে চেক ডিজঅর্নার হবার কারনে পাওনাদার মেয়েটির বিরুদ্বে ছয় ছয়টি কেস করেছে।

যার কোন কিছুই মেয়েটি জানতো না, বেচারি এখন বিরাট অর্থ দন্ড এবং হাজতবাসের মুখে দাড়িয়ে আছে। আজ তার খবর কে রাখে? তার ক্ষয়ে যাবার খবর কেউ রাখে না, তার স্বপ্নের অপমৃত্যুর খবর কেউ জানে না, সে যে কত চোখের পানি ফেলেছে তা কেউ দেখে না, কষ্টে তার বুকের ভিতরটা ব্যাথা করে। তারা অন্তরে অন্তরেই নিঃশেষ হয়ে চলেছেন। এই সবই এ সমাজে ঘটে যাওয়া অতি সত্য ঘটনা, এক বিন্দুও মিথ্যে নয়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.