স্বপ্নের নগরী লন্ডন এক সময় অনেক দুরে হলেও আজ তা মটেও দুরে নয়। ম্যাছ মাইগ্রেশনের যুগে অনেকেই এখন লন্ডনে যাচ্ছেন খুবই সহজে। স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে গত কয়েক মাসে পনেরো হাজারেরও অধিক ভিসা প্রদান তারই প্রমান।
কিন্তু বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পরা লন্ডনের বর্তমান অবস্হা জেনে সে ভাবে মানষিক প্রস্তুতি নিয়ে আসাটা খুবই গুরুত্বপূর্ন। তা নাহলে স্বপ্ন এবং বাস্তবাতে হতে পারে ব্যাপক ফাঁড়াক।
তবে যারা এখন আসছেন এবং আসবেন ৩টা জিনিস পরখ বা যাচাই বাছাই করে আসাটা তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন:
১. কাদের মাধ্যমে আসছেন? ভিসা কলেজ নাতো?
লন্ডনের কলেজের নাম শুনে সবারই ইমাজিনেশনটা একটু ভিন্ন হয় কারন লন্ডন/ইংল্যান্ড হচ্ছে উচ্চ শিক্ষার প্রান কেণ্দ্র। কিন্তু আজ কাল লন্ডনে গজিয়েছে অনেক কলেজ যাদের কাজ হচ্ছে ছাএদের নিয়ে ব্যবসা করা। লন্ডনে এসব কলেজ ভিসা কলেজ নামে পরিচিত। নিদ্রিষ্ট ভাবে কোনো কলেজের নাম না এ বললাম। এসব ভিসা কলেজ বাংলাদেশর পেপার, এজেন্ট এবং মিডিয়ার মাধ্যমে নিজেদের কে বড় করে তুললেও বাস্তবতা ঠিকা উল্টো।
তাদের না আছে ছাএ আ্যাকোমডেট করার ব্যবস্হা, না আছে জেনুইন (পিজিছিই) করা লেকচারার আর না আছে লারনিং রিসোর্স। যদিও তারা বিভিন্ন ইউনিভার্রসিটির এক্সটারনাল কোর্স করান কিন্তু যারা শিক্ষা অর্জন করতে চান এটা তাদের জন্য শুভংকের ফাঁকি ছাড়া আর কিছু নয়। যারা ভিসা কলেজকে ইউনিভার্রসিটির সাথে না জেনে তুলনা করেন তারা হয়তো ইউ,কে তে জেনুইন ইউনিভার্রসিটি দেখেননি বা ছাএ ছিলেননা।
আজ কাল এসন ভিসা কলেজ TIER 4 এর সুবিধা নিয়ে ছাএদের কে অনেকটা জিম্মি করছেন। কারন ভিসাতে কলেজের কোড থাকে।
দেশে তাদের নিয়োগপ্রাপ্ত এবং তাদের সাথে জড়িত দালালরা হাতিয়ে কলেজ ফির থেকে অতিরিক্ত টাকা।
তাই যারা লেখাপড়া করার জন্য আসতে চান তাদের কে এ ব্যপারে বুঝতে হবে। যদি উপার্যনের জন্য আসেন ভিসা কলেজ আপনার জন্য বেস্ট চয়েচ। ভিসা কলেজ আপনাকে ভিসা এক্সটেনশনের জন্য সাহায্য করতে পারবে অনেক কম খরচে।
২. প্ল্যান কি? লেখাপড়া করবেন না উপার্যন?
যদি ভাবেন লেখাপড়া করবেন তাহলে ভিসা কলেজ এড়িয়ে চলতে হবে।
লেখাপড়া দেওয়ার মত তাদের কিছু নেই। টাকা নিবে কিন্তু কিছু দিতে পারবেনা। কলেজ পাল্টাতে গেলে গলাবাজী করা তাদের স্বভাব। তাছাড়া কাজ করে টিউশন ফি দিতে গেলে লেখাপড়া কারার সময় থাকেনা এবং ভালো রেজাল্ট অনেকটাই অসম্ভব। অনেকই হয়তো পারছেন তবে তার সংখ্যা অনেকটাই নগন্য।
তবে যদি উপার্যন করতে আসতে চান তাহলে ভিসা কলেজ একটা ভাল অপশন। তবে টাকা যত কম দিয়ে পারবেন ততই ভাল।
৩. জব মার্কেটের বর্তমান অবস্হা
একের পর এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বসে যাওয়াতে বর্তমানে ইউ,কে তে বেকারের সংখ্যা প্রায় ৩ মিলিয়নে পৌছেছে। চাকরী যে নাই তা নয় তবে প্রতিযোগীতা এতো বেশী যা অনেকের পক্ষে চিন্তা করা সম্ভব নয়। নরমাল যে কাজ ছাএরা করে সে দিকে যদি তাকাই তাহলেও জব মার্কেটের বর্তমান অবস্হা সুবিধা নয়।
সুপারস্টোর গুলোতে লোক ওনেক গুন কম নিচ্ছে বলা চলে লোক নেয়া বন্ধ এবং নিলেও লিংক ছাড়া কাজ নেই। এটা বলা বাহুল্য যে লন্ডনে লেবার সেক্টরের নিয়োগ অনেকটা এ বন্ধ। এমন কি রাস্তাতে পেপার ডিসট্রবিউশনের(হকারীর)মত কাজ পাওয়াটাও ভাড়। গ্রেট সিটি লন্ডন যে রিয়াল ডিপ্রেশনে ভুগছে সেটা এখন না দেখলে বোঝা সম্ভব নয়।
তবে ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে কাজ করতে পারেন।
রেছেশনের ধুয়া তুলে তারাও বেতন কমিয়েছে। বেশি ভাগ সময়ে একাজের জন্য লন্ডনের বাহিরে যেতে হবে। সেখান থেকে এসে নিয়মিত ক্লাস করতে পারাটা ৯০ ভাগ লোকের পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া ইমিগ্রেশনের ভয়তো আছে আরো আছে ইন্ডিয়ান নামক বাংলাদেশী রেস্টুরেন্টেটে কাজের অসহ্য যন্ত্রনা। বিস্তারিত না হয় নাই বললাম।
.....কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে.......
তবে থাকা খাওয়া ফ্রি পাবেন।
এটা একটা বাস্তব ভিত্তিক লেখা। বর্তমানের বাস্তব চিএ আপনাদের সামনে তুকে ধরলাম। আমাকে ভুল বুঝবেন না। আপনাদেরকে লন্ডনে আসতে না করছি না বা ডিসকারেজ ও করছিনা।
বাস্তবতা এবং পরিস্হিতি বুঝে প্রস্তুতি নিয়ে আসতে বলছি।
তবে দু:খের ব্যপার যে দেশের থেকে মেধাবী ছাএরা লন্ডনে এসে বিভিন্ন সমস্যার কারনে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট থেকে এভাবে ছিটকে পরছেন যা দেশের জন্য মোটেও সুখবর নয়। বর্তমানে এটা "ব্রেইন ড্রেন" বলাই বাহুল্য। ভাল টাকা উপার্যনের সুযোগ থাকলে অনেকে হাই রেমিটেন্সে দিয়ে ব্যপারটা জাস্টিফাই করার চেস্টা করতেন। কিন্তু সবই যেন ক্যামন তাল গোল পাকিয়ে বিষন্নতায় ঢেকে যাচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।