আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লন্ডন এবং আমাদের দেশের ছাত্ররা!!!!



লন্ডনে হঠাৎ হঠাৎ শোরগোল শোনা যায় যে আজ এই নতুন নিয়ম আসছে এবার এখানে থাকা খুব কষ্টকর হয়ে উঠবে। আর এ নিয়ে চলে নানা জল্পনা কল্পনা, কে কিভাবে টিকে থাকবে তার পরিকল্পনা চলে কাজের ফাকে যখন সবাই এক সাথে হয়। যাই হোক আমি যেটা বলতে চাইছি সেটা হলো এবার জীবন বোধহয় একটু কঠিন হবে সত্যিকার অর্থেই। এই অর্থনৈতিক মন্দার সময় তারা যখন হন্নে হয়ে খুজছে উপায় ঠিক তখনই এদেশের নীতি নির্ধারকদের চোখের সামনে অন্যতম সমাধার হয়ে দেখা যায় আর্ন্তজাতিক (এশিয়ান) সমাজ যারা খুব সহজে লন্ডন নাম উচ্চারনের সাথে সাথে এক ধরনের সপ্নের জগতে চলে যায়। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান তিনটি দেশ বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান থেকে আগামী সেপ্টেম্বের সেশনে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে ঠিক কত সংখ্যক ছাত্র এদেশে আসছে তা যদিও আমি বলতে পারছিনা তবে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ত্রিশ চল্লিশ হাজার ছাত্র আসছে এদেশে তাদের জীবন ফেরাতে!!! কিন্তু এখানেই একটা বড় প্রশ্ন দেখা দেয় এবং সেটা হলো আসলেই কি আমাদের দেশের ছাত্রদের ভাগ্য ফিরবে নাকি এটা এদেশের ভাগ্য ফেরানোর উপায়? আমি যদি একটা সামান্য পরিসংখ্যান তুলে ধরি তাহলে ব্যাপারটি আপনাদের কাছে পরিস্কার হয়ে যাবে।

গত অর্থ বছরে ৮০০ মিলিয়ন পাউন্ড জমা পড়েছে ব্রিটিশ রাজকোসে যা এসেছে টিউশন ফি বাবদ এদেশের কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি প্রদ্ত্ত টাকা থেকে, প্রতিটি ছাত্ররা সাথে করে এদেশে যে পরিমান টাকা নিয়ে আসবে তার কথা নয়ন নাই বা ধরলাম। এবার দেখা যাক ছাত্রদের পকেটের কি অবস্থা! লন্ডনে প্রতিটি ছাত্রের খরচ চালানোর জন্য সর্বনিম্ন ৩০০ থেকে ৩৩০ পাউন্ড প্রয়োজন। একটা ছোট হিসাব: বাসা ভাড়া- £১৫০ ইউটিলিটি বিলস- £২৫ খাবার(বাসায় খেলে)- £৫৫ যাতায়াত- £৭০ ফোন- £১৫ মোট- £৩১৫ এখন এই টাকাটা জোগার করার দুটি উপায় আছে। ১. কেউ যদি এদেশে এসেই যদি বাংলাদেশি যে রেস্টুরেন্টগুলো আছে লন্ডনের বাইরের শহরগুলোতে সেগুলোতে চলে যাওয়া তাহলে তাকে আর থাকা অথবা খাওয়া কোনটা নিয়েই চিন্তা করতে হবে না কারণ রেস্টুরেন্ট যেহেতু খাবারতো আছেই আর পাশাপাশি থাকারও ব্যবস্থা আছে ফ্রি। পাশাপাশি প্রতি মাসে ৪০০ পাউন্ড বেতন।

এপর্যন্ত শুনে হয়ত সবার ভাল লাগছে কিন্তু এত কিছুর বিনিময়ে আপনাকেও তো কিছু দিতে হবে, আর আপনার থেকে মালিক যা নেবে সেটা হলো চরম পরিশ্রম, সপ্তাহে ৬ দিন কাজ একদিন ছুটি, কলেজে যাওয়া বন্ধ । ২. কেউ যদি লন্ডনেই থাকে আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায় তাহলে তার জন্য অপেক্ষা করছে নানা ধরনের সমস্যা যার সব গুলোর বর্ণনা করা সম্ভব নয়। যদি কারো দেশ থেকে টাকা আসার উপায় থাকে তাহলে লন্ডন তার জন্য উপযুক্ত জায়গা। কিন্তু আমার জানা মতে দেশের টাকায় বিদেশে পড়ার মত সামর্থ মনে হয় শুধু বড় বড় ঋণখেলাপী ব্যবসায়ী, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীপরিষদের সদস্যবৃন্দের ছেলেমেয়েদেরই আছে। আর এক শ্রেণীর আছে যারা আমাদের দেশের গর্ব মেধাবীরা।

এছাড়া আমরা যারা মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান তাদেরকে এখানেই কাজ করে জীবিকা আহোরণ করতে হয়। আর এই কাজ পাওয়াটাই আজকাল খুব কঠিন হয়ে দাডিয়েছে অর্থনৈতিক মন্দার কারনে। পাশাপাশি ছাত্রদের জন্য সমস্যা হয়েছে হোম অফিসের নতুন নতুন নিয়ম কড়াকড়ি। যার ফলে ছাত্ররা আর আগের মত ক্লাশ না করে শুধু টাকা আয় করতে পারছে না, কারন হোম অফিস এখন কোন অনিয়মের জন্য সরাসরি কলেজকে ধরবে এবং লাইসেন্স বাতিল করবে। তার ফলে যেটা হবে সেটা হলো কলেজ তার ব্যবসা ঠিক রাখার জন্য ছাত্রদের উপর চাপ প্রয়োগ করছে।

যার ফলে ছাত্ররা আছে এখন উভয় সংকটে। না হবে চাকরি না হবে পড়াশোনা। আমি খুব জোর গলায় বলতে পারি প্রতিটি ছেলে মেয়ে যারা এদেশে আসার ভিসা পায় তারা কখনো ভাবতে পারেনা যে তাদের জীবন এক ধরনের নিশ্চিত অনিশ্চতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। চলবে

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.