আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে লেনিন: যশোরে বেনজিন খান এর একক জনসভায় বক্তৃতা

শাফি সমুদ্র

জৈনক উপস্থাপক: প্রিয় যশোরবাসী আস্সালামুআলাইকুম। নির্ধারিত বক্তব্য এখন শুরু হবে। তো নির্ধারিত বক্তব্য শুরু হবার আগে এই জনপদের হাজার হাজার বছর ধরে যে লোক দার্শনিক আছেন তারা তাদের বক্তব্য গানের ভাষায় বলে গেছেন। এই যশোর অঞ্চলের একজন লোক দার্শিনিক তার নাম ইসরাইল শাই- ‘আাল্লাহ তোমায় খুঁজতে গিয়ে পড়ে গেছি ভীষম দায়, তুমি মানুষ দিয়ে মানুষ বানাও তুমি থাকো কোন জায়গায়...’ এই গানটি দিয়ে আমরা শুরু করবো আজকের নির্ধারিত বক্তৃতা। গানটি পরিবেশন করবেন আমাদের অত্র অহ্চলের অনেকেরই পরিচিত কিন্তু আসলে তিনি একজন দার্শনিক হোসেন ডাক্তার।

মঞ্চে আসছেন হোসেন ডাক্তার। আমি এখন হোসেন ডাক্তারকে ইসরাইল শাইর গানটি পরিবেশন করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আল্লাহ তোমায় খুঁজতে গিয়ে পড়ে গেছি ভীষম দায় তুমি মানুষ দিয়ে মানুষ বানাও তুমি থাকো কোন জায়গায়\ থাকলে তুমি নবীর মাঝে দিদার হইতো কার ছবি আবার আদম সুরাত করতো দাবী তাও দেখিনু ভিন গায়ে আল্লাহ তোমায় খুঁজতে গিয়ে পড়ে গেছি ভিষম দায়। সংসারের চাপে পড়ে হারাম-হালাল কতোই খাই এই সুরাত তোমার হইবে তুমিতো খাইছো তাই। আমি যদি দোযখে যাই তুমি থাকবা কোন জায়গায় আল্লাহ তোমায় খুঁজতে গিয়ে পড়ে গেছি ভিষম দায়।

তুমি মানুষ দিয়ে মানুষ বানাও তুমি থাকো কোন জায়গায়\ আবার চুরি ক’রে ধরা পড়লে মুখে লাগাও চুন-কালি আল্লা তুমি রক্ষা করো এই কথা কতই বলি। তুমি দেখলে নাকো নয়ন মেলে ভয় দেখাচ্ছো কোন লজ্জায়। । আল্লাহ তোমায় খুঁজতে গিয়ে পড়ে গেছি ভীষম দায় তুমি মানুষ দিয়ে মানুষ বানাও তুমি থাকো কোন জায়গায়\ প্রিয় সুধী ম-লী আমরা ডা. হোসেন আলীর গান শুনলাম। এই গান নিয়ে নতুন করে ব্যাখ্যা দেবার কিছু নাই।

আমার বিশ্বাস এই গান লিখেছেন একজন মাটির মানুষ, আর মাটির মাুনষই এ গান শুনেছেন। বিজ্ঞান বলে যে একটি মানুষ কিভাবে অথবা কি ভাববে তা সে জানেনা, আসলে তার পারিপার্শ্ব , সামাজিক বাস্তবতা আসলে তাকে যা ভাবায় সে তখন তাই ভাবে। অর্থ্যাৎ কথাটা এই দাড়ালো এতোকাল আমরা জানতাম আমার চিন্তা ভূইথোড় আকাশ থেকে আসে আমি তাই বলি। কিন্তু বিজ্ঞান বলছে না, আমি আসলে তাই ভাবি এই পরিপার্শ্ব আমাকে যা ভাবায়। ভাবনার জনক হচ্ছে পারিপার্শ্ব।

এই ভাবসার কর্তা-সর্তা হচ্ছে এই বিশ্ব প্রকৃতি। সেখান থেকেই আমার সমস্ত ইন্দ্রিয় যেটা রিসিভ করে সেটাই পুঞ্জিভূত হয়ে ভাষা হয়ে পৃথিবীর আরেকটা অর্গান ‘আমি' তখন প্রকৃতি আমার কণ্ঠ দিয়ে অথবা হাত দিয়ে অথবা আমার কর্মকা-ের মধ্যে দিয়ে সেই চিন্তা প্রকাশিত হয়। সেকারণেই এই বিশ্ব প্রকৃতি এই পারিপার্শ্ব থেকেই যে চিন্তার জš§ হয়েছে সেই চিন্তা একটি বাক্যের মধ্য দিয়ে আসাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে। এই গানের আর ব্যাখ্যার প্রয়োজন হবেনা। আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় করেছি ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে লেনিন।

এখানে এই সমগ্র আলোচনা আমরা এক ঘন্টায় আলোচনা করতে পারবো। এই বিষয়ের মধ্যে আসলে তিনটা প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা হবে। উত্তর দিয়ে দেবো এই ধৃষ্টতা দেখাবো না কেননা আমরা কেউ উত্তর দিতে পারবোন। এই পরিপার্শ্ব থেকে যেহেতু প্রশ্ন তাই উত্তর এই পরিপার্শ্ব এর ভিতরে রয়েছে। প্রকৃতির অর্গান হিসেবেই আমার আলোচনায় প্রকৃতির মধ্যেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবো।

প্রশ্নটা থাকবে এই যে এই বিশ্বব্রক্ষ্মান্ড এই যে জগৎ-চন্দ্র-সূর্য-গ্রহ-তারা-নক্ষত্র জানা-অজানার বাইরের যতো যা কিছু আছে এই সবকিছুর আদি কারণ কি? কোথা থেকে এই বিশ্ব ব্রক্ষান্ড সৃষ্টি হলো। পৃথিবীর পূর্বে কি ছিলো এবং যা ছিলো তা কিভাবে ছিলো? এবং তার কর্তা কে? এ এক মহা প্রশ্ন মানুষের। আমরা তাই প্রশ্ন করছি এই বিশ্বব্রক্ষ্মা- আদিতে তা কি ছিলো! দুই নং প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা হবে এই জগতের সকল জীব-অনুজীব-বস্তু-অবস্তু পারস্পারিক সম্পর্ক ও তার ভিত্তি কি? তিন নং প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হবে মানব সৃষ্টর লক্ষ্য কি? আজকের বিষয় কিন্তু ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে লেনিন। আমি বলেছি লেনিন আমার ওছিলা। লেনিন এর ওসিলায় প্রশ্ন উঠতে পারে ওসিলা লেনিন হলো কেন? সে প্রশ্নের কারণে শুরুতে একটু ব্যাখ্যা দিতে চাই।

২২শে এপ্রিল কমরেড লেনিন এর ১৩৯তম জš§ বার্ষিকী গেল। আসলে ঐ দিন টাকে সামনে রেখে আমি আমার বক্তব্য শুরু করেছি। এখন লেনিনের ১৩৯তম জš§বার্ষিকী গেল কিন্তু পৃথিবীর আর কারো কি জš§বার্ষিকী ছিলোনা? লেনিনের জন্য ওসিলা? আজকে আমরা এমন এক পৃথিবীতে বসবাস করছি পৃথিবী দুঃখময় হয়ে গেছে। সারা পৃথিবীর সামনে আজকে প্রশ্ন যে দুঃখ আছে এটা সত্য কিভাবে দুঃখ আছে দুঃখ কতো প্রকার এটার ব্যাখ্যা লাগবেনা। দুঃখ আছে এটা বাস্তব।

ঘটনা হলো এই দুঃখের কারণ কি? দুঃখের নিশ্চয়ই একটা কারণ আছে। এই কারনের কারণ কি? নিশ্চয় তারও একটি কারণ আছে! এবং সব কারণের মূল কারণ কি আসলে? যুগে যুগে সব দার্শনিকের সেইসব কারণ মাহাকারণের সব দিক খুঁজে বের করেছে। ভারত বর্ষের এক দার্শনিক যিশু খ্রিস্টের জšে§রও প্রায় পাঁচশত বছর আগে গৌতমবুদ্ধ বলেছেন অবিদ্যাই হচ্ছে দুঃখের কারণ। আর আমরা জানি সেনেটিক জনপদ ওই আরব বিশ্বে রসুল করীম (সাকে আল্লাহ তার প্রথম বাণীটি পৌছিয়েছিলেন সেটা হচ্ছে ‘এক্রা' মানে ‘পড়’। রসুল বললেন হে প্রভূ! আমি তো পড়তে জানি না।

আল্লাহ বললেন একরা বিসমি রব্বুকা আল্লাজী খালাক। পড় তোমার প্রভূর নামে। আল্লার প্রথম বাণী প্রথম বক্তব্য পড়। এই পড়ার মাদ্যমেই তুমি জানতে পারবে প্রকৃতপক্ষে দুঃখের কারণ কি। তো মানুষ এই বিশ্বজগতকে পাঠ করে পৌছে গেছে দুঃখের কারণ কি তার সন্ধান সে করে ফেলেছে।

কি সেই কারণ? সে কারণ মানুষের সামনে উপস্থিত হয়েছে এইভাবে এই সমস্ত বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ড এ এক সত্ত্বা থেকে সৃষ্টি। এক পূর্বে আর কিছু ছিলোনা। অঙ্কেও আমরা এক এর পূর্বে কিছু পাইনা। অঙ্কের পিছনে যেতে গেলে মাইনাস হাফ বানাতে হয়। এভাবে নানান ভাবে পিছনে যেতে হয়।

এভাবেই এক এর থেকে শুরু করতে হয় অথবা এক থেকে পিছনে যেতে হয়। তাহলে এক থেকে যদি বিশ্বব্রক্ষ্মা- সৃষ্টি হয়, সবকিছু যখন এক গর্ব থেকে আসলো বিশ্বব্রক্ষান্ডের যা কিছু আমি দেখছি এতো আর পরসম্পর্ক নয়, এসব তো পরম আত্মার সম্পক, নিকট আত্মীয়র সম্পর্ক। এখানে কোন বিভেদ থাকতে পারেনা। এই জায়গা থেকে বিশ্বের দার্শনিকরা দেখলো আমরা যখন পৃথিবীর সমস্ত জীব-অনুজীব বস্তু-অবস্তু সবকিছুকে যখন আলাদা আলাদা করে দেখেছি পরস্পর একটার সাথে আরেকটার সম্পর্ক আছে আমরা যখন এগুলো বুঝতে চাইনি তখনই দুঃখের সৃষ্টি হয়েছে। কিভাবে দুঃখটা সৃষ্টি হলো? এই দুঃখ’র মধ্য দিয়ে মানুষ কি করলো? মানুষ যেটা করলো-সে ব্যক্তিগতভাবে সমগ্র পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের প্রতিটি জীবের তার হক থেকে সে বঞ্চিত করতে থাকলো।

ব্যাক্তিগত ভাবে সে কুক্ষিগত করতে থাকলো। যাকে অর্থনীতির ভাষায় বলা হচ্ছে ব্যক্তিগত সম্পত্তি। বিশ্বজগতের সবকিছুর মালিক আমি, ব্যক্তি, অন্যে না। যখন এই ব্যক্তি ধারণা ব্যাক্তিগত সম্পত্তির মালিকানার ধারণা তখন থেকে মানুষ এই বিশ্ব জগতের সমস্ত নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হতে থাকলো। একজন তা পেল আর একজন তা পেলনা।

ফলে মানুষদেরকে এই নিয়ামত থেকে যারা বঞ্চিত করেছে যুগে যুগে তাদেরই বিরুদ্ধে আজকে আমরা যাদের মহান মানুষ বলি সেই মহান মানুষেরা যুগে যুগে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেতে এসেছিলেন। এই যে দুনিয়া এই দুনিয়াকে সমাজবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় পূঁজিবাদী দুনিয়া। এই পুঁজিবাদী দুনিয়ার জš§ হয়েছিলো ইতিহাসের সপ্তদশ শতাব্দিতে ইংল্যা-ে বর্জুয়া শিল্প বিকাশের মধ্য দিয়ে। এর আগে পৃথিবীতে প্রতিষ্টিত ছিলো দীর্ঘকাল ধরে যাকে বলা হতো সামন্ততান্ত্রিক সমাজ। তারও আগে পৃথিবীতে একটি সমাজ প্রতিষ্ঠিত ছিলো যাকে বলা হতো দাসতান্ত্রিক সমাজ।

তারও আগে আরেকটা সমাজ প্রতিষ্ঠিত ছিলো যাকে বলা হতো আদিম সাম্যবাদী সমাজ। পুঁজিবাদী সমাজ প্রথিবীতে আসার আগে যে সমাজ পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত ছিলো সামন্তবাদী সমাজ। এই সামন্তবাদী সামাজের শাসক শ্রেণী সারা পৃথিবীর মানুষকে পৃথিবীর এই নিয়ামত থেকে যখন বঞ্চিত করতো তখন সে একটি আশ্রয়ের উপর আশ্রয় করতো। সেটি হলো এই তারা একটি তত্ত্ব দিয়েছিলো সেই সময় মানুষের সামনে যে, আমি রাজা, আমি নিজের ইচ্ছায় রাজা হয়নি, আমি আমার প্রচেষ্টায় রাজা হয়নি ঈশ্বর আমাকে রাজা বানিয়েছে তাই আমি রাজা। অর্থ্যাৎ আমি ঈশ্বরের মনোনীত।

ঈশ্বর কর্তৃক প্রাপ্ত। এই রাষ্ট্র এই সম্পদ এই যে প্রাচূর্য সব ঈশ্বর আমাকে দিয়েছেন। সুতরাং আমি ঈশ্বরের প্রতিনিধি। তাই আমার জৌলুস, আমার ভোগ আমার সম্পদ আমার মৃত্যু এইসব নিয়ে যদি তোমরা প্রশ্ন তোলো মনে রেখো তোমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে প্রশ্ন রেখেছো। দীর্ঘদিন ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে তৎকালীন রাজারা তৎকালীন শাসকেরা পৃথিবীর মানুষদেরকে শোসন করতো।

এর বিরুদ্ধে শপ্তদশ শতাব্দি থেকে আমি আলোচনা করছি আমরা কিন্তু আলোচনায় যাবো শপ্তদশ শতাব্দি থেকে বহু পিছনে। শপ্তদশ শতাব্দিতে বর্জুয়ারা আজকে আমরা যাদেরকে পূঁজিবাদ বলি এই বর্জুয়ারা শাসক শ্রেণী ছিলোনা। আকাঙ্খ্যা ছিলো শাসক হওয়ার। মনে হয়েছিলো ওই রাজার মতো সমগ্র দুনিয়ার সম্পত্তির মালিক আমি হবো। কিন্তু সে আসতে পারতোনা, কেন? রাজারা প্রচার করতো সে ঈশ্বরের প্রতিনিধি আর মানুষ বিশ্বাস করতো সে ঈশ্বরের প্রতিনিধি।

তাই রাজার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুললে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলা হবে। পাপ হবে। সেই পাপের ভয়ে মানুষ কিছু করতো না। তৎকালীন সময়ের দার্শনিকেরা এই পুঁজির যারা আকাঙ্খ্যা করে সম্পত্তির মালিক হতে চায় তাই তারা তখন বললো না ঈশ্বর যারে রাজা বানায় সে রাজা নয়, এটা ধাপ্পাবাজী। ও রাজা গায়ের জোরে হয়েছে।

ওকে গায়ের জোরে সরাতে হবে। তাহলে শাসক হবে কে? শাসক হবে এই পৃথিবীর আশরাফুল মাকলুকাত এই পৃথিবীর মানুষেরা যাকে শাসক বানাবে সেই হবে শাসক। এ চিন্তা আমদের সামনে পৃথিবীর মানুষদের সামনে হাজির করা হলো। তখন সবাই দেখলো এতো এক মহান বাণী, মানুষ সার্বভৌম হলো। মানুষ নির্বাচন করবে প্রত্যেকটা মানুষ ভোট দেবে যে লোকটা ভালো সে শাসক হবে।

এতো ভালো কথা। তাহলে জনগনের এই রাজার উৎসতো ঈশ্বর না, জনগন। এতো ভালো। এ চিন্তা তো মানুষদেরকে সম্মানিত করলো। সঙ্গত কারণে সামন্তবাদ পৃথিবীর ইতিহাস থেকে বিদায় নিলো, নিচ্ছে।

ইংল্যা-ে প্রথমে এই ঘটনা ঘটলো। যার নেতৃত্বে ঘটেছিলো তার নাম ছিলো অলিভার ক্রমওয়েল। ক্রমওয়েলের নেতৃত্বে তৎকালীন রাজতন্ত্র উচ্ছেদ হয়েছিলো এবং বর্জুয়ারা ক্ষমতায় গিয়েছিলে জনগন কর্তৃক নির্বাচিত হয়ে। আবার নির্বানে ক্রমওয়েল পরাজিত হলো সমন্তবাদীরা ক্ষমতায় আসলো। ক্রমওয়েলের মৃত্যু হয়েছিলো আগেই।

কবর থেকে তার লাশের হাড়-গোড় উঠিয়ে এনে পুনরায় ফাঁসিতে ঝুলানো হলো। রাজার বিরুদ্ধে সেøাগান, রাজার বিরুদ্ধে দ্রোহ! সে তো ঈশ্বরের বিরুদ্ধে দ্রোহ! সে কারনে তাকে কবর থেকে হাড়-গোড় তুলে এনে ফাঁসি দেয়া হয়েছিলো। এরপর অষ্টদশ শতাব্দিতে ফ্রান্সে ফরাসী বিপ্লব হলো। সেই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সরা পৃথিবীতে বর্জুয়ারা আজকে সমস্ত ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করলো। এই বর্জুয়া ব্যবস্থা কিভাবে টিকবে কিভাবে মানুষ তার রাজাকে নির্বাচন করবে এভাবে এক মহান দার্শনিক সেই সময়ের প্রেক্ষিতে তিনি আরশাফুল মকলুকাতের মর্যাদার সৃষ্টিতে তিনি মানুষের সামনে এসে হাজির হলেন তার নাম জাজাক রুশো।

তিনি তার বিখ্যাত গ্রন্থ সমাজ সংস্থা ‘ঃযব ঝড়পরধষ ঈড়হঃৎঁপঃ’ এই গ্রন্থের মধ্যেই মানব জাতির ইতিহাস এবং মুক্তির পথ তিনি বাতলে দিলেন। তার মধ্য দিয়ে তিনি জনগনকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী করলেন। জনগনই হবে সকল ক্ষমতার উৎস। আর মহিমা ব্যক্ত করলেন এই জনগন এর মালিক স্রষ্ঠা। তাহলে স্রষ্ঠার সৃষ্টিকে সš§ানিত করেছে যে তত্ত্ব, প্রকারন্তে সেটা আল্লার তত্ত্ব।

আর জনগন শাসক নির্বাচন করবেন এটা সৃষ্টিকর্তারই বক্তব্য। রুশো এভাবে আনলেন এবং পুঁজিবাদের যাত্রা সারা পৃথিবীতে এভাবে প্রতিষ্ঠিত হলো। আজকে এখনো পর্যন্ত আমরা সেই পুঁজিবাদের শাসনের মধ্যে রয়েছি। কিন্তু পুঁজিবাদ আসলে যে বক্তব্য উপস্থাপন করেছিলো, তাদের যে আকাঙ্খ্যা ছিলো এই বক্তব্য বা আকাঙ্খ্যার ভিতরে যে কি গভীর ফারাক ছিলো সেটা মানুষ বুঝতে পারে নাই। এই গভীর ফারাক আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ইউরোপের আরেক দার্শনিক তার নাম কার্ল মার্কস।

সেই পুঁজির ঊষালগ্নে বলেছিলেন এই পুঁজি আসলে যাবে কোথায়? কালমার্কস বললেন এই পুঁজির এই পুঁজির আল্টিমেট লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের মস্তিষ্কের ভিতর থেকে ঈশ্বরকে তাড়িয়ে দেয়া, আল্লাহকে তাড়িয়ে দেয়া। কেন? পূঁজি বিশ্বাস করেছে এখনো এই বিশ্বব্রক্ষ্মা-ের মালিক হচ্ছে আল্লাহ। আল্লাহকে সবাই নমস্য দেয়। কিন্তু চেয়ারে বসার আকাঙ্খ্যা দুইজনের। কিন্তু চেয়ার তো একটা হয় আল্লাহ থাকবে নয়তো পুঁজি থাকবে।

গভীর ভাবে ষড়যন্ত্র করে দার্শনিক মননের মধ্য দিয়ে সে মানুষের সামনে হাজির করলো-‘ঞযবৎব রং ঘড় এড়ড়ফ’. এই বিশ্ব জগতের কোন স্রষ্ঠা নেই এবং পুঁজি তখন এভাবেই ব্যাখ্যা দেয়া শুরু করলো মানুষ এই যে চিন্তা করে এই চিন্তা বিকশিত হতে পারে তখন যখন সে কারোর দাসত্ব আর করেনা। মানুষের চিন্তা পরিপার্শ্বিক থেকেও আসেনা। চিন্তার ভিতরে পুঞ্জিভূত হয় এবং সে চিন্তা থেকে তার কর্মকা- করে। আর এই চিন্তার ভিতরে পুঞ্জিভূত হওয়ার কারণ তার বায়োলজী যদি রিক্সহীন অর্থ্যাৎ তার সমস্ত দেহসত্ত্বা যদি অধিকমাত্রায় সুখে থাকতে পারে সুস্থ্য মস্তিষ্কগুলো কর্মকা- করতে পারে এবং সে তার কর্মকা-ের মধ্য দিয়ে মহিমা ব্যক্ত করতে পারে। পুঁজি এভাবেই আল্লাহকে সরি দিয়ে চেয়ারে বসতে শূরু করলো এবং পুঁজি বললো সমস্ত মানুষ হচ্ছে জৈবসত্ত্বা এবং পূঁজি হচ্ছে জড়সত্ত্বা।

আমরা পুঁজি কাকে বলি পুঁজি এখন অনেক কিছু, টাকা পুঁজি, পানি পুঁজি, মাটি পুঁজি এমন কি মানুষের চিন্তাও পুঁজি সবকিছু এখন পুঁচি হয়ে গেছ্ ে। সেই পুঁজির ঊষালগ্নে মার্কস বুঝেছিলেন-এই পুঁজি পৃথিবীর সারা মানুষদেরকে জড়বস্তুতে পরিণত করবে। মাকর্স বলেছিলেন পুঁজি এমন এক জায়গায় চলে যাবে যে পুঁজি তখন জৈব বস্তুতে পরিণত হবে। তার সাধ-আহাদ থাকবে, তার কান্তি থাকবে, তার রেস্টের প্রয়োজন হবে। আর মানুষ জড়বস্তুতে এমন পরিণত হবে যার কোন কান্তি নেই ক্ষুধা নেই, ঘুম নেই মানুষ এমন অবস্থায় পরিণত হবে।

আমরা দেখবো এইকথা কিভাবে আজ থেকে আরো ১৪০০ বছর আগে হযরত আলী এবং রসুল পাক (সা কিভাবে বলেছিলেন। আমরা সে ব্যাখ্যায় যাবো। পুঁজি বললো যে মানুষ জড়বস্তু হবে আর জড়বস্তু আরো জীবনময় সার্থ হবে। আপনাকে বিশাল এক প্রাচীরে ঘেরা তালা দিয়ে অস্ত্র নিয়ে ঘুমাতে হয়। এর মধ্যে একটা বিড়াল দৌড়ালে আপনার ঘুম ভেঙে যায়।

টর্চ লাইট অস্ত্র নিয়ে জেগে থাকেন পূঁজিকে পাহারা দেন। পুজি ঘুমিয়ে থাকে, পুঁজির ঘুম দরকার, আর আপনার? মানুষ সারারাত জেগে থাকছে পুঁজির নিরাপত্তার জন্যে। তার মানে পুঁজি মানুষ আর মানুষ জড়বস্তু। এই অবস্থা তৈরী হবে? পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ না খেয়ে মরবে, একজন বমি করবে আর একজন বমি খেয়ে ফেলবে এটা হবে। সে সময় কার্লমার্কস বলেছিলেন এর থেকে মুক্তির পথ হচ্ছে এই বিশ্বপ্রকৃতির যে নিয়ম এই নিয়ম ফিরিয়ে আনা।

অর্থ্যাৎ এই বিশ্ব প্রকৃতিতে মানুষ আসার আগে অগ্রবর্তি বাহিনীর মতো প্রতিটি জীব-অনুজীব আগে এসেছিলো। এই মানুষ যা খেয়ে বেঁচে ছিলো তা আগে পৃথিবীতে এসেছিলো। মানুষ অক্সিজেন নিয়ে বেঁচে থাকে অক্সিজেন পৃথিবীতে আগে এসেছে তারপর মানুষ এসেছে। মানুষ পানি খেয়ে বেঁচে থাকে তাই পৃথিবীতে পানি আগে এসেছে তারপর মানুষ এসেছে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য পৃথিবীতে যা যা প্রয়োজন তা সবই আগে সৃষ্টি হয়েছে তারপরে মানুষ এসেছে।

সুতরাং এই অগ্রবর্তি বাহিনী এই জীব-অনুজীব-আকাশ-বাতাস-চন্দ্র-সূর্য-নদী-পানি-মাটি এই সবকিছুর সাথে মানুষের জৈব সত্ত্বার যে পারষ্পারিক সম্পর্ক রয়েছে এটি মাকর্স বললেন। মার্কস বলছেন যে পারিপার্শ্বিক নিয়ম এই মানুষ সৃষ্টি হওয়ার ক্ষেত্রে তার একজিষ্ট করার জন্যে তার বেঁচে থাকার জন্য যে পারপার্শ্বিক বাস্তবতা সহোযোগীতা করেছে এই পারিপার্শ্বিক নিয়মকে মানুষ লঙ্ঘন করতে পারেনা। পুঁজি এসব ভেঙে দেবে, ছারখার করে দেবে এবং মানুষের তখন এই প্রকৃতির নিয়ম প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম ছাড়া আর কোন পথ থাকবেনা। তখন মানুষের কি করতে হবে? কোটি কোটি মানুষ ব্যাক্তিকে উচ্ছেদ করবে যে ব্যক্তি কোটি কোটি মানুষের ব্যক্তিকে অস্বীকার করবে। সে বলে আমি ব্যক্তি হয়ে উঠতে না হতে পারলে আমি ব্যক্তিগত ভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে না পারলে ব্যক্তি বিকাশ হবেনা এবং এবং সভ্যতা বিকশিত হবেনা।

তখন মাকর্স প্রশ্ন তুললেন, তাহলে তোমার ব্যক্তি হয়ে ওঠার জন্যে যে লক্ষ্যকোটি মানুষ তার ব্যাক্তিহীন হয়ে গেল, তার মাথার মধ্যকার চিন্তা এই বিশ্ব সভ্যতায় কিভাবে প্রকাশিত হবে? তাহলে কোটি কোটি মানুষ ব্যক্তি নয়, ব্যাক্তি শুধু তুমি? মাকর্স বললেন এহেন ব্যক্তিকে ঝেটিয়ে বিদায় করতে হবে এবং এহেন মানুষদেরকে ঝেটিয়ে বিদায় করলে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ ব্যক্তি হয়ে উঠবে। এহেন ব্যক্তিদেরকে যদি আমরা উচ্ছেদ করি তবে পৃথিবীতে সমস্ত মানুষের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হবে। সরকারী রাস্তার ধারে সরকারী আম হলে আমরা যদি আম পাড়ি, হিন্দু হোক বৌদ্ধ কোহ মুসলিম হোক ফকির হোক মিস্কিন জোক রাজা হোকে যে কাউকে আমরা নিষেধ করতে পারিনা। সরকারী গাছ এ জন্য আমরা কেউ নিষেধ করতে পারি না যে আম পেড়না। তাহলে কি দাঁড়ায় আমি আম পেড়ে খাই তাহলে আমি মালিক! এর ব্যক্তিগত কোন মালিক নেই বলে আমি যখন পাড়ি তখন কেউ এটা নিষেধ করতে পারেনা।

তাহলে ব্যক্তিগত মালিকানা যখন উচ্ছেদ হলো তখন সামাজিক মালিকানা তখন প্রতিষ্ঠিত হয়ে উঠলো। প্রতিটি মানুষ তখন ব্যক্তি হয়ে উঠলো, প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিমালিকানা সুনির্দিষ্ট হলো। এ লড়াইয়ের তত্ত্ব মার্কস দিয়েছিলেন। কিন্তু পৃথিবীতে তিনি সে সমাজ প্রতিষ্ঠা করে যেতে পারেন নাই। তার কাজ সমাপ্ত করার জন্য পুজিবাদের ভিতর দিয়ে যে লোকটি পৃথিবীতে প্রথম ঘটিয়েছিলো তার নাম কমরেড লেনিন।

তিনি পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। সেই লেনিন যে লড়াই করলেন তাহলে আমরা দেখছি যে লেনিন সারা পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের মুক্তির কথা বলছেন আর সারা পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ লেনিনকে গ্রহণ করছেনা। আমরা দেখলাম ১৯১৭ সালে বিপ্লব হলো লেনিনের নেতৃত্বে, ১৯২০সালে লেনিন প্যারালাইসেস এ পড়লেন, ১৯২৪ সালে মারা যান। ১৯২২ সাল থেকে ১৯৫৩সাল পর্যন্ত লেনিনের যে চিন্তা প্রাকৃতিক যে নিয়মের মধ্যে সমাজ থাকবে সমাজের মালিকানা যে নিয়মের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত তা চলছিলো। ১৯৫৩ সালে কমরেড স্প্যালিনের মৃত্যুর পর তৎকালীন সময়ে আমরা যাদেরকে বলতাম সাম্রাজ্যবাদ ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তারা ধীরে ধীরে সেখানে আবার সেই ব্যক্তিমালিকানা আবার সেখানে পুঁজিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিলো।

সে সময়েও এর বিরুদ্ধে সারা পৃথিবীর মানুষ আমরা লড়াই করেছিলাম। এক ধরনের দাস এক ধরনের গোলাম এক ধরনের সাম্রাজ্যবাদের গর্ভজাত সন্তান তারা সেদিন এই সোভিয়ত সামাজিক সাম্রাজ্যবাদকে সমাজতন্ত্র বলে পৃথিবীর মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। তারা আবার মার্কস লেনিনের জš§দিন পালন করছে। রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে এই মানুষ, এরা বিভ্রান্ত করছে। সুতরাং দাস, গোলাম, দেউলিয়াদের বিরুদ্ধে প্রকৃতভাবে লেনিনকে উপস্থাপন করতে হবে।

তো লেনিন আজকে হারিয়ে গেল। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের মুক্তির রাস্তা যে তৈরী করলো আজ সে তাদের কাছে কাফের হিসেবে চিহ্নিত হয়, নাস্তিক হিসেবে চিহ্নত হয়। মানুষ বলে কথাগুলো ভালো বলে কিন্তু পথ যে নরকের! আমাদের দেখাতে হবে লেনিনরা কি নরকের পথে ছিলো? না, মোটেও তা না। বরং যারা লেনিনকে উপস্থাপন করেছে যারা মার্কসকে ব্যাখ্যা করেছে তারা মার্কস বোঝেনাই। মার্কেসর সাথে লেনিনের সাথে এদের কোন সম্পর্ক নাই, এরা মার্কস পড়ে নাই।

মনের আকাংখ্যা দিয়ে মনের মাধুরি মিশিয়ে তারা মার্কস-লেনিনকে নিজের মতো করে নিয়ে রাজনীতি করেছিলো। সে কারনে মার্কসের রাজনীতি যারা করেছেলো দেখেছিলাম আজো দেখি কতো বাড়ি কতো গাড়ি কতো সম্পদ সম্পদের পাহাড় হবে আবার মার্কসবাদী লেনিনবাদী হবে, তা হয়না। মার্কসবাদী লেনিনবাদী হতে গেলে ভিক্ষুক হতে হয়। সম্পত্তির কোন ব্যক্তি মালিকানা থাকবেনা। মার্কসের জীবনে কোন ব্যাক্তিমালিকানা ছিলোনা।

মৃত্যুর সময় লেনিন কোন ব্যক্তি মালিকানা রেখে যায়নি, মার্কসও রেখে জাননি, স্প্যালিনও রেখে জাননি কিন্তু জানি যাদেরকে আমরা সামাজতন্ত্র বলেছি ৯০ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ঘড়িটা গর্ভাসেফ হাতে দিতো পৃথিবীর সবচেয়ে দামি গাড়ীটা গর্বাসেফ ব্যবহার করতো। পৃথিবীর মানুষ বলেছে এহেন মার্কসবাদ আমাদের দরকার নাই, ঠিকই বলেছে মানুষ। ৯০সালে ঝেটিয়ে বিদায় করেছে ঠিকই করেছে। লেনিনকে বাঁচিয়ে দিয়েছে, মার্কসবাদকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। এজন্য লেনিনের ওসিলায় আমাকে কথা বলতে হচ্ছে।

যারা এই মার্কসবাদকে কাফেরদের মতবাদ বলে তাদেরকে বলবো আপনি কোথঅ থেকে বলেন? আপনি যে জায়গার দাবী করেন মুসলমান অথবা হিন্দু! আমি বলবো আপনি কি কোরআন থেকে কথা বলেন? আপনি কি বেদ-গীতা থেকে কথা বলেন? নাকি যেমন মার্কসবাদীরা মনের মাধুরী মিশিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে আপনিও কি মনের মাধুরী মিশিয়ে ব্যাখ্যা করছেন? আমি বলবো নিশ্চয়ই করছেন। তাহলে দেখা যাক কোরআনে-বেদে-গীতায় এমন কী বিজ্ঞানী আইনস্টাইনে কিভাবে এই বিশ্বপ্রকৃতি সম্পর্কে কি ব্যাখ্যা দেয়া আছে আমাদের সেখানে যেতে হবে। মুসলমানের সন্তান হিসেবে আমার প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে আমার জšে§র সময় আমার বাপ যে আযানটা দিয়েছে সে আযানের ব্যাখ্যা শুনতে চাওয়া। কেন আমার কানের মধ্যে এ ঢোকানো হয়েছে? প্রথম যে বানী আমার বাপ আমাকে পড়তে বলেছে তা আমার বোঝা উচিৎ। হিন্দু হিসেবে আমার প্রথম ফরজ কাজ হচ্ছে আমার বেদ-গীতাকে পড়া এবং বোঝা।

বাংলার মানুষ হিসেবে আমার প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে যদি মুসলমান হই তাহলে কোরআন বোঝা আর প্রধান প্রতিবেশী হিন্তু তার গীতাকে পড়া তার কিতাবকে বোঝা। আর যদি হিন্দু হই তাহলে প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে আগে তার বেদ-গীতা পড়া এবং প্রধান প্রতিবেশী কোরআনকে পাঠ করা। এগুলো যদি পাঠ না করি তবে এই পৃথিবী থেকে দুঃখ যাবেনা। আমি শুরু করতে চাই লেনিনের ওসিলঅয়, আমি শুরু করতে চাই মধ্যপ্রাচ্য থেকে এবং হযরত আদম (আঃ) থেকে। এজন্য আমার বিবেচনায় আমার জানা মতে যদি ভুল হয়ে থাকে, হতেই পারে যেহেতু মানুষের জ্ঞান সীমাবদ্ধ।

আপনাদের কাছে যদি কোন ইনফরমেশন থাকে আপনারা আমাকে দেবেন আমি শুধরে নেব। কোন প্রকার গোলামী এমন কি চেতনাকেও আমি দাসত্বকেও অন্যায় মনে করছি। আমার জšে§র সময় আমার বাপ যে প্রথম যে গ্রন্থ আমার কানের ভিতরে ঢুকিয়েছিলো সেই কোরআন বলছে- কোথাও কারওর দাসত্ব করা যাবেনা, একের ছাড়া, এক আল্লাহর ছাড়া। আমি চেতনার দাসত্ব করবোনা কিন্তু আমার জানা হচ্ছে এই [ওহংধৎঃ চধৎঃ ৩] ইব্রাহীম বললেন আজ থেকে সাড়ে চার হাজার বছর আগে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’। সে প্রথমে মূর্তিপূজা দেখেছে, অসংখ্য দেবতা, অসংখ্য ঈশ্বর, অসংখ্য আল্লাহ সে দেখেছে।

ইব্রাহীম বলল না তা হতে পারে না। অনেক বিতর্ক আছে, সে নিজে নিজে বিতর্ক করেছে আপনারা কোরআন শরীফে সূরা বাকারার ভিতরে দেখবেন। একপর্যায় বলছে আমার আল্লাহ হচ্ছে সূর্য দেখলো সে সূর্য ডুবে গেলো। এ হতে পারেনা, যখন চাঁদ উঠেছে তখন বলল আমার আল্লাহ চাঁদ, তারপর যখন চাঁদ ডুবে গেলো, তখন বলল না আমার আল্লাহ ডুবতে পারেনা। এশবার বলছে এ আমার আল্লাহ ও আমার আল্লাহ, এশভার ভাবছে না যা ডুবে যায়, দিন-রাত হয় এ আমার আল্লাহ হতে পারে না।

আল্লাহ কখনো ডুবতে পারেনা আমার আল্লাহ আছে, ছিলো এবং থাকবে। আমার আল্লাহ নিরাকার, অধরা, অছোঁয়া, নিরঞ্জন। তার রঙ নেই রূপ নেই রস নেই গন্ধ নেই আকার আকৃতি নেই নেই সাকার নেই তিনি সর্বত্র বিরাজমান। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ‘লা’ মানে নেই, ‘লা ইলাহা’ মানে নেই আল্লাহ ছাড়া। ইনি হচ্ছে ঐতিহাসিক ভাবে প্রথম মানুষ।

ভারতে আমরা যদি সব থেকে প্রাচীন মানুষ দেখি তবে ইতিহাসে আমরা গৌতমবুদ্ধকে চারবাককে দেখি খ্রীস্টপূর্ব ৫০০-৬০০ বছর আগে। আমরা যদি গ্রীকে সবচেয়ে প্রাচীন মানুষ দেখি তবে আমরা দেখবো থ্যালিসকে, খ্রীস্টপূর্ব ৯০০ বছর আগে। তারপরে পীথাগোরাস, ডেমোক্রেটাস, হেপাগ্রেটাস, সক্রেটিস, প্লেটো, এরিস্টেটল, ডেকাল্টে, কানটে এমনি ভাবে একেরপর এক। কিন্তু আজীবনভাবে আমরা যে দার্শনিককে পাচ্ছি তিনি থ্যালিস। চৈনিক সভ্যতায় তাকালে আমরা দেখছি কনফুসিয়াসকে তাও খ্রীস্টপূর্ব ৫৫০বছর আগে।

আমরা জাপানে গেলো দেখতে পাবো তাদের গুরুর নাম সিনথো খুবই সেদিনের। আমি সারা পৃথিবীতে ইব্রাহীমের পূর্বে আর কাউকে দেখছিনা। ধর্ম গ্রন্থ গীতায় যাই, বেদে যাই হিন্দু মিথোলজীতে যাই তবে দেখতে পাবো বেদ সর্ম্পকে বেদ স্বয়ং দাবী করছে খ্রীষ্টপূর্ব ১০০০ থেকে ১৫০০ বছর পূর্বে তারা এখানে এসেছে। লিখিত হয়েছে সর্বচ্চো খ্রীষ্টপূর্ব পনেরো শ তাহলেও ২২০০ হয়না। তাহলে আমি ইব্রাহীমকে পাচ্ছি শুরুতে।

আমরা যদি ইতিহাসে প্রথম সভ্যতার দিকে যাই সভ্যতায় মানুষ প্রথম কোথায় মানুষ হয়েছিলো? এর আগে মানুষ ছিলো যাযাবর প্রাণীর মত আরো আট-দশটা প্রাণীর মতো সংগ্রহ করে খেত এবং খাদ্য সংগ্রহ করে খাওয়ার কারণে জঙ্গলে যখন খাদ্য ঘাটতি হয়েছে তখন এক জঙ্গল থেকে আর এক জঙ্গলে গেছে। সেকারণে, সে যখন পশু শিকার করা শিখলো তখন এ জঙ্গলে যখন পশু শেষ এই জনপদে যখন পশু শেষ আরেক জনপদে পশু চলে গেছে তখন সে যাযাবরের হয়েছে। মানুষ যখন পশু শিকার করা শিখেছে তখন তার খাদ্য নিশ্চিত হয়েছে বটে কেননা পশু তো বাচ্চা দেয়। তখন পশুর খাদ্যের জন্য কাওরাদের মতো শুকর পালনের মতো সে এই জনপদ থেকে ঐ জনপদে যাযাবর ছিলো। লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি বছর মানুষ যাযাবর ছিলো।

যাযাবর জীবনের প্রথম অবসান ঘটেছিলো সে যখন মাছ শিকার করা শিকলো এবং এ ঘটনা পৃথিবীতে প্রথম ঘটেছিলো ভূ-মধ্যসাগর উপকূলে। ভূ-মধ্যসাগর উপকূল যেটা আজকে প্যালেস্টাইন এবং লেবানন। এবং এই মাছ যে ধরে মাছ যে আবার আসে এ মাছ পালিয়ে যায় না। আর সে পশূ শিকার আগেই করেছে ফলে পশু এবং মাছ যখন পর্যাপ্ত আসলো তখন তার বন থেকে ফল-মূল-ওলকচু সংগ্রহ করা গুহার পাশে পড়ে থেকেছে সে লক্ষ্য করেছে এ থেকে আবার গাছ জš§ায় এবং লক্ষ্য করেছে বৃষ্টি হলে এই গাছ আবার জীবন্ত হয়ে ওঠে। তখন সে পানি দিয়েছে।

ও বুঝেছে কি যেন এখান থেকে মাটির তলে যায় তখন সে বুঝেছে লুঠি দিয়ে একটু মাটি খুচিয়ে দিলে সহজ হবে, কষ্ট কম হবে। সে দিনই লাঙ্গল তৈরী হয়ে গেলো। যখন পনি দিলো তো সেচ ব্যবস্থা হয়ে গেলো। পৃথিবীতে প্রথম সেচ ব্যবস্থা চালু হলো প্যালেস্টাইন ও লেবাননে। পৃথিবীর প্রথম সভ্যতা ওষানে সৃষ্টি হয়েছিলো।

এখনো পর্যন্ত জানা ইতিহাস তাই বলে। প্যালেস্টাইন ও লেবানন থেকে সভ্যতা যখন সিরিয়ার দিকে আসলো তাকে আমরা বলছি আসুরীয় সভ্যতা। সভ্যতা বিকশিত হয়ে যখন ইউফ্রেটিস ও তাইগ্রীসের মাঝখানে আসলো তখন আমরা বলছি ব্যবলীয়নীয় সভ্যতা, সেই সভ্যতা যখন মিশরে আসলো তখন আমরা বলছি মিশরীয় সভ্যতা। আমরা দেখেছি একই সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশে সিন্ধু নদের অববাহিকা হরোপ্পা এবং মহেজ্ঞদাড়ো আজকের পাকিস্তানে সেখানে সভ্যতা গড়ে উঠলো তাকে আমরা বলছি সিন্ধু সভ্যতা। এই সিন্ধু থেক হিন্দু হয়ে আজকে হিন্দু সভ্যতা।

আমরা সমস্ত ভারতীয়রা দাবী করি আমরা হিন্দু সভ্যতার উত্তরাধিকার। পারস্যরা যখন ‘স’ উচ্চারণ করতে পারতোনা তখন তারা সিন্ধুকে হিন্দু বলতো। হিন্দু রিভার। হিন্দু নদী বলতো। সিন্ধু সভ্যতা হয়ে গেলো হিন্দু সভ্যতা।

গ্রীকরা যখন এসেছিলো ‘স’ উচ্চারন করতে পারতো ওরা তখন ‘ইন্ডু’ বলতো। সেজন্য ইংরেজীতে বলতো ই-াজভ্যালী সেখান থেকে ই-িয়া। পারস্যরা বলল সিন্ধু সভ্যতা থেকে হিন্দু। তাহলে ভারতেও আমি একজন হিন্দু। ভারতীয়রা হিন্দু সভ্যতার উত্তরাধীকার।

আজকে সভ্যতার মানুষেরা আবার দুইভাগে ভাগ হয়েছে হিন্দু এবং মুসলমানে। কেন? একজন বেদ গ্রহণ করেছে আরেকজন ইসলাম গ্রহণ করেছে। ইসলাম বহিরাগত ইসলাম আরব থেকে এসেছে আর বেদও বহিরাগত ঐ মধ্য এশিয়া থেকে এসেছে। ফলে ইসলাম গ্রহণ করলে যদি আমি বহিরাগত হয়ে যাই তাহলে বেদ গ্রহণ করলেও আমি বহিরাগত হয়ে যাবো। আমরা এইসব বিতর্কে যাবোনা।

এই দেশের মানুষ কেন বেদ গ্রহণ করলো? বেদের ভিতরে কি এমন স্পীড যা এদেশের মানুষ আত্মস্ত করলো, কোরআনের ভিতরে কি সেই স্পীড যা এইদেশের মানুষ তা আত্মস্ত করলো? প্রশ্ন এখানে রাখতে হবে। ইব্রাহীম থেকে শুরু করছিলাম এ জন্য যে ইব্রাহীম হচ্ছে প্রথম মানুষ। তিনি বললেন এই বিশ্বব্রক্ষ্মা-ের শুরুতে ছিলেন আল্লাহ। আল্লাহ থেকেই সবকিছু সৃষ্টি। আল্লাহ না বুঝলে এই বিশ্বব্রক্ষান্ডে সবকিছু আমরা একে অপরকে পর ভাববো।

এই যে আমরা এতো মানুষ আমরা এক মায়ের পেট থেকে এসেছি তাহলে তার কি আমার ভাই হবে নাকি পর হবে? ভাই হয়ে যাবে। আর যদি না জানি ও আর আমি একই মায়ের পেট থেকে এসেছি তাহলে জানবো ও কিন্তু আমার পর, তখন বিরোধ করবো। তাহলে বুছতে হবে আল্লাহকে বিশ্বাস করার ব্যাপার না, আপিনি বিশ্বাস করলে আল্লাহর কিছু আসে-যায়না না বিশ্বাস করলেও আল্লাহর কিছু আসে যায়না। এাঁই রিয়েলিটি, তাহলে আমরা দেখবো এই বিশ্বজগতের সবকিছু আমার কাছে অপর হয়ে যাবে। আপন হয়ে যাবে আমি কাকে ঠকাবো।

জীব-অনুজীবও অপর হয়ে যাবে। ‘অপর' মানে যে পর না। আমি যখন জানবো গাছ যে অক্সিজেন ছাড়ে আমি বেঁচে থাকি, তখন সে আমার নিকট আত্মীয়। আত্মীয় নয় আমার অঙ্গ। আমি যদি জানি সূর্য ও না থাকলে পৃথিবীতে প্রাণ হতো না, আমি হতাম না এবং আমার বহু উপাদান বেঁচে থাকার শর্ত যা সূর্যের তাপ থেকে আসে।

ফলে সূর্য আমার থেকে আলাদা নয়। আমি জানি এই মাটি আমার জীবন থেকে আলাদা নয়। এখানে যে খাদ্য হয় তা আমি খাই। সারা পৃথিবীর মানুষ যে মল ফেলে, পায়খানা করে এই মাটির উপরে। এই মাটির উপর বৃষ্টি হয়, এই পায়খানা মল হয়ে মাটির উপর থাকে সে মাটি সমস্ত মল-পায়খানা-দূর্গন্ধ তা ধুয়ে মুছে এডজাস্ট করে মাটি হয়ে যায় আর প্রকৃত পানি মাটির নিচে নিয়ে যায়, সে পানি যখন আমি টিউবওয়েল দিয়ে তুলে খাই আমি তখন আমি প্রাণ বেঁচে থাকি।

মাটির এ মহান ভূমিকা কিভাবে আমি অস্বীকার করবো? আমি জনি সমুদ্রে আজকে যে বর্জ্য ফেলছি সমুদ্রের পানি খাওয়া যায়না সত্যি, লালন বলছে- সমুদ্রের কিনারে বসে জল বিনে চাতকী মরে একথা সত্য। কিন্তু সূর্যের তাপে সমুদ্রের জল বাষ্প হয়ে আকাশে যেয়ে বর্ষা হয়ে যখন নেমে আসে তখনতো ডিস্ট্রিল ওয়াটার হয়ে যায়! সুতরাং বিশ্বজগতের প্রতিটি ব্যাপার যদি আমরা বুঝি তাহলে দেখতে পাবো কি গভীর আমাকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব পালন করছে। যাকে আমি কীট-পতঙ্গ বলে কীটনাশক দিয়ে হত্যা করছি আমি জানিনা আমাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সে কি মহান দায়িত্ব পালন করছে। আমি কীট-পতঙ্গ বলে হত্যা করছি, আমি আগাছা বলে গাছ-গাছালি কেটে ফেলছি। আমি জানিনা যে গাছ কেটে ফেলছি তা আমাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কী গভীর দায়িত্ব পালন করে।

গাছ আপনি কাটেন কিছু হবেনা। কিন্তু সবুজ না থাকলে তাপ আসবে বৃষ্টি হবেনা। আপনি যা খান তার জš§ হবেনা। সুতরাং আজকে আন্দোলন হচ্ছে বেশি বেশি করে গাছ লাগাও। কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেশি বেশি উৎপাদন হলে সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ভেঙে যাবে।

আল্ট্রাভায়োলেট রে চলে আসবে এবং ওজন স্তর ভেঙে যাবে। আজকে আন্দোলন তৈরী হচ্ছে ব্যপক গ্র।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.