আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উদাসী ডিসক্লেমার আর কিছু ব্যার্থ গল্প!

আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!

জেন বাথটাব থেকে নেমে মাথার চুলগুলো মুছে গায়ে তোয়ালেটা জড়িয়ে নিলো। আয়নার সামনে বেশ কিছুক্ষণ দাড়ালো। আজকে শরতের প্রথম দিন। শহরে অনেক আগেই কাশ ফুল ফুটেছে।

তবে আজ কাশ ফুল দেখতে যাবে না, অফিসেও যাবে না। আজকে ও ছুটি নেবে। কারন আছে! কিছু মুখে দিতে মন চাইছে না, ঘড়ির ঘন্টার কাটাটা কেমন যেনো ঠেলা গাড়ি হয়ে গেছে এগুতে চাইছে। একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস পড়লো। সাজতে শুরু করলা জেন।

একটা সাদা ফ্রক পড়লো, যদিও জানে এলাকা দিয়ে হাটতে গেলে হাজারটা শিষ অথবা দুয়েকটা উড়ো মন্তব্য অথবা কিছু ছেলের মাথা ঘুড়ে যাওয়া খুব স্বাভাবিক হয়ে গেছে তবুও একজন কেন অবাক হয় না সেটা সে কিছুতেই বুঝতে পারে না। তেমন কিছু না তবু প্রতিদিন মন খারাপ হয়ে থাকে। এটারও কারন আছে। জেন ফ্রক পড়েই রাস্তায় বেরুলো, গাড়িটা ওপারেই পার্ক করা। রাস্তা পার হতেই সোহেল নামের ছেলেটা সাইকেল উল্টে দিলো।

পাশের বাড়ীর আন্কেলটা ফেলে দিলো চায়ের কাপ ফুলের টবে। ও ওদিকে লক্ষ্য করলো না, চোখে সান গ্লাস চড়িয়ে গাড়িতে উঠলো। গড়িতে বসা মাত্রই ফ্রকের কাপড়টা হাটুর উপরে উঠে গেলো। দেখলো ফরসা হাটুর ছবি কে কে দেখতে চায়! মিচকি একটা হাসি দিয়ে দরজা আটকে ড্রাইভ শুরু করলো লং ওয়ের দিকে। রাস্তার ওপারে একটা মোটর বাইক পার্ক করে হেলান দিয়ে আছে শুভ্র।

ডানে বায়ে কি যেনো দেখছিলো অলস ভঙ্গিতে দাড়িয়ে। জেন গাড়ি থেকে নেমে অনেক থেকেই দেখছে ওকে। ওরা মূলত মুখোমুখিই মাঝখানে শুধু ব্যাস্ত একটা মোড়, অথচ নুভান খেয়াল করছে না। কাল রাতে ভুলে একটা মিসড কল চলে গিয়েছিলো। সাথে সাথে নুভান ব্যাক করে।

জেন বুঝতে পারে না, কলটা ধরবে কি না! রিংটোনের শেষের দিকে সে কল টা ধরে ফেলে। কথা হয় ৩০ মিনিট। জেন থরথরিয়ে কাপছিলো এখন যেমনটা সে কাপছে। সে জানে না কি করছে! নুভানের প্রতি ওর অবসেশনের কোনো কারন নেই, তবুও কেনো যেনো ও ওকে ছাড়া এক মিনিটও চিন্তা করতে পারে না। সমাজ ওদের সম্পর্ক মেনে নেবে না, কারন শুভ্র মুসলিম আর জেন খাটি ক্যাথোলিক ঘরানার।

জেন কি রাস্তা পার হবে? কারন শুভ্র ওকে দেখেই হাত ওয়েভ করলো। মোড়টায় এখন সিগনাল পড়েছে সবুজ। জেন বুঝতে পারছে না, ও এখন চেয়ে আছে সবুজ সিগন্যালটার দিকে। এটা কি ওর জীবনের সিগন্যাল নাকি শুধু ট্রাফিকের? এরকম গল্পের কখনো শেষ হয় না। মানুষ ভাবে এক হয় আরেক।

কেউ ধরে রাখে একজন তার হাবুডুবু খাচ্ছে আর সে ভাবে সে জীবনে এই মানুষটিকেই চরম ভাবে ঘৃণা করে। ভালোবাসা ঘৃণা মানুষকে শিখাতে হয় না, মানুষের এটা অনুভূতি দিয়ে প্রকাশ করে, এখানে যুক্তির পরিমাণ কম থাকে কখনো স্বার্থের পরিমান বেশী হয়ে যায়। আসলে একটা ডিসক্লেমার দিলে কেমন হয়? ডিসক্লেমার দেয়াটা একটু ফরজ হয়ে গেছে। আমি যে চরিত্র নিয়েই গল্প লেখি না কেন সেটা দেখা কারো জীবনের সাথে হুব হু মিলে যায়। এবং কাকতালীয় ভাবে ব্লগের কারো সাথেই।

যদিও জানি এ লেখা একান্ত আমার। আমি আরো কিছু লিখবো বলে ভাবছি, এই যেমন আমি আর আমার বন্ধুদের নিয়ে। উদাহরন হিসেবে ধরা যাক কোলড প্লের ভিভা লা ভিডা এ্যালবামের মত যেখানে ওরা ওদের বন্ধুদের নামে এ্যালবামটা করেছে। আমিও লিখবো ওদের নিয়ে। আমি জীবনে বেশি কিছু দেখি নি তবে খুব কমও দেখিনি।

এ জীবনে মূলত আছে সংগ্রামের দানা বাধা আবেগ, আছে কিছু সৎ কাজের অযাচিত মৃত্যু, আছে কিছু গতানুগতিক আবেগ অথবা না পাওয়া বেদনা। তবু জীবন কখনোই থেমে ছিলো না, থাকবেও না। জেনের যেমন শুভ্রকে পাওয়া না পাওয়া নিয়ে টেনশন, তেমনি আমাদের টেনশন ছিলো কিভাবে আমরা কালকের দিনটা কাটাবো। এমন ব হু কাল চলে গেছে, তবু আমরা বেচে আছি। তবু কিছু মুখ দুনিয়ার ভীড়ে হারিয়ে গেছে।

তবুও আমি ডিসক্লেমারে বলবো, আমার লেখার প্রতিটা ঘটনা আমার নিজের। কারো সাথে মিললেও মিলে যেতে পারে, কারন আমি জীবন থেকেই এসব সংগ্রহ করি। প্রতিদিন হাজারো মানুষের মুখ দেখি শুনি তাদের হাজারো কাহিনী। সেগুলোই আমি ডায়েরী আকারে সাজাতে চাই। কখনো হাসবো কখনো কাদবো আর বেশীর ভাগ টাইম উদাস।

উদাস থাকাটা আমার শৌখিনতা নয়, এটা আমার স্বভাব। আমি ছোটকাল থেকেই সবাইকে বলতাম আমি একদিন আকাশ ছুবোই, কেনো জানি মনে হয় আমি আকাশ ছুবো, কিভাবে কবে সেটা জানি না। এখনও আকাশ ছুবার তেমন লক্ষণও দেখি না। যদি কোনোদিন ছুয়ে ফেলি তাহলে আমার পুরো কাহিনীটাই লেখা হয়ে যাবে। তখন দারুন হবে না ব্যাপারটা? এক উদাসী ছেলে যার অস্তীত্বর তেমন কোনো মূল্য নেই, সে আকাশ ছুয়েছে এবং সে কিভাবে ছুয়েছে সবাইকে তা জানিয়ে দিয়েছে- এর চেয়ে অদ্ভুত আর কি হতে পারে? "গান্জ্ঞ মারো মান্জ্ঞা - উদাসী দিনকাল!"


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।