সাবধান!! এখানে সিআইএ-র গোপন ক্যামেরা আছে
সৃষ্টি জগতে দেখা যায় সূর্য, পৃথিবী, চন্দ্র থেকে শুরু করে অণু-পরমাণু, ইলেক্ট্রন, প্রোটন পর্যন্ত সবকিছুই দলবদ্ধ বা পরিবারভুক্ত হয়ে বিরাজ করছে। চতুর্দিকে গ্রহ-উপগ্রহ নিয়ে সৌর জগতের অবস্থান। একই বা বিভিন্ন প্রকারের পরমাণুর সম্মিলনে অণুর সৃষ্টি, আবার ইলেক্ট্রন, প্রোটন প্রভৃতি নিয়ে পরমাণুর অবস্থিতি। এই সবই পরিবার ভুক্তির প্রমাণ বহন করে।
পরিবার আমাদের ভারসাম্য রক্ষাকারী একটা ব্যবস্থা।
প্রেম, যৌন মিলন, সন্তান লাভ, সন্তানের প্রতি অহেতুক আকর্ষণ প্রভৃতি পরিবার সৃষ্টি ও রক্ষণের পরিপূরকক। পরিবার বড় হলে আকর্ষণ শক্তি হ্রাসের দরুণ একটি পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে কয়েকটি পরিবারে পরিণত হতে পারে সন্দেহ নেই। কিন্তু তাই বলে পরিবারকে পরিত্যাগ কাম্য নয়। মানব জাতির শান্তি, সহযোগিতা ও প্রগতিই যদি আমাদের কাম্য হয়- তাহলে এই পদ্ধতিটিকে অবহেলা করলে প্রতিক্রিয়াকেই প্রশ্রয় দেওয়া হয়। একক কে বাদ দিয়ে যারা বৃহত্তর সমাজের কল্পনা করেন, তারা আর যাই করুন বাস্তব চিন্তা করেন না।
বর্তমানে আমাদের সমাজে যে গৃহকেন্দ্রিক বা পরিবারকেন্দ্রিক ব্যবস্থা রয়েছে তাতে অনেকে মনে করেন নারীর কোনো মর্যাদা নেই। কিন্তু আমার মতে, এই ব্যবস্থায় নারীর মর্যাদার অধিকতর সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও ঐ ব্যবস্থার অনেক সংস্কারের প্রয়োজন। এই ব্যবস্থায় নারী যে কাজ করে, তা যেমন মর্যাদাকর তেমনি আনন্দদায়কও। নারী কাজ করে আপন জনের জন্য, তাদের সুখ-শান্তির জন্য।
প্রাণপ্রিয় সন্তানের, স্বামীর বা পিতার জন্যে কাজ করে আনন্দ পায় না এমন নারী বিরল। একে কেউ অমর্যাদাকর ভাববে, এমন বিকৃতমনা লোক অতি অল্পই আছে। অবশ্য প্রত্যেক কাজের একটি সীমা আছে । অতিরিক্ত খাটুনি প্রিয়জনের জন্য বিরক্তি উদ্রেক করে বৈকি।
কিন্তু পুরুষের বেলায় (বিশেষ করে শিক্ষিত) একথা খাটে না।
পুরুষ আপন জনের জন্য কাজ করে বটে কিন্তু তার কাজ বাইরে, আপন জনের মধ্যে এর কাজ সীমাবদ্ধ নয়। তাকে চাকুরী করতে বা অন্য কাজ করতে হয় অপরের- সে সরকারী অফিসে হোক বা অন্যত্র হোক। চাকুরী তো নয়, অনেক সময় এ দাসত্ব। এক হিসেবে পরের অধীনে কাজ করার মতো অমর্যাদাকর ও দুঃখজনক ব্যাপার অনেক মর্যাদাসম্পন্ন লোকের কাছে খুব কমই আছে। তবুও কর্তব্য কর্ম করতে হয়।
এর বদলে অর্থ হয়তো উপার্জিত হয়, কিন্তু তার বদলে অনেক সময় বিবেক, স্বাস্থ্য, স্বাধীন মত, স্বাধীনভাবে চলাচল সব কিছু বিসর্জন দিতে হয়। আমাদের সমাজে নারীরা হয়তো অধীন। কিন্তু সে আপন জনের পিতা কিংবা স্বামীর সুসম্পর্কিত হলে তা হবে অত্যন্ত মধুর। কিন্তু পুরুষ অধীন হয়, আপন জনের নয় পরের ; উপরস্থ কর্মচারীর আদেশের বিরুদ্ধে কাজ করা তাদের সাধ্যাতীত। সময়ের নিয়মেও তারা বাঁধা।
স্বাধীনতা এখানে সীমাবদ্ধ, কাজের কিংবা নির্দিষ্ট সময়ের এদিক-ওদিক কার তাদের আয়ত্তের বাইরে।
সুতরাং বলা যেতে পারে এদেশী সমাজ নারীই অধিকতর মর্যাদার আসনে আসীন, পুরুষ নয়। পুরুষ এক হিসেবে অত্যন্ত হতভাগ্য। অর্থের জন্য তাকে অধিকাংশ সময় পরের অধীনে খাটাতে হয় নিজের সত্তা ও মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেও।
নারীর চাকুরী করা বা মুজুরী করা অসম্ভব বা অন্যায় একথা আমি বলছি না।
আমার বক্তব্য হলো- চাকুরী-মুজুরী দরকার হলে নারী করবে।
নারী স্বভাবতঃ শান্তিপ্রিয় ও গৃহপ্রিয় এটা সর্বজনস্বীকৃত। এই জন্যই উচ্চশিক্ষিতা অবিবাহিতা চাকুরে মহিলাকে কয়েক বছর পর বলতে শোনা যায়- চাকুরী তাদের আর ধাতে সয় না, পরের চাকুরী করতে করতে তারা হাঁপিয়ে উঠেছেন, শান্তি কোথাও পাচ্ছেন না। অর্থ উপার্জনের এই দাসত্বটা আর কারও ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে মুক্তি নিতে পারলে তারা বেঁচে যেতেন।
একথা সকলের জন্য প্রযোজ্য না ও হতে পারে।
তবুও একথার মধ্যে যথেষ্ট সত্য রয়েছে। এমনও দেখা গেছে স্ত্রী শিক্ষকতার কাজ করছেন, স্বামী বিদেশে। বিদেশ থেকে ফেরার পর মহিলা চাকুরী ছেড়ে সন্তান পালন, গৃহকার্য ও স্বামীর সাহায্য করছেন।
তার মতে টাকার যতদিন দরকার ছিল, ততদিন তিনি চাকুরী করেছেন। এখন টাকার দরকার নেই, কারণ স্বামী যা টাকা পান তা একটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট।
টাকা শান্তি ও সুখের জন্যে। অতিরিক্ত টাকার জন্য দুজনের দুই দূরস্থানে গিয়ে চাকুরী করা ৩/৪ টি সন্তানের ভবিষ্যতকে অপরের হাতে ছেড়ে দেওয়া কোনো মতেই তিনি বাঞ্চনীয় মনে করেন না।
ব্যতিক্রম নিশ্চয়ই থাকবে। সব ক্ষেত্রে চাকুরী ছাড়াও দরকার হবে না। কিন্তু তবু মানুষের সুখ-শান্তিকে ছোট করে দেখা ঠিক নয়।
কারণ সুখ-শান্তির জন্যেই চাকুরী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।