sorry vai আপনি কি পাচ ইন্দ্রিয় আর কার্যকরী সকল অংগ কার্যকর রেখে আমার দেশে চলতে পারেন? অবশ্যই না। বিরাট টিকেটের লাইনে দাড়িয়ে আছেন, হঠাত এক আবাল কয়েকশো মানুষকে ওভারকাম করে দিব্যি নির্লজ্জের মত ঢুকে গেল সামনের সারিতে। আপনার মুখ নামক অংগটি কোনমতে চললেও, পেশির শক্তি কিন্তু অব্যাবহৃতই থেকে যায়। বরং প্রতিবাদ করতে গেলে আরও এলাকার দাপট, মাস্তানি কথাবার্তা হজম করে ঘরে ফিরে আসতে হয়। কেননা, আপনার পাশে এত মানুষ, অথচ কেউ কথা বলে না।
নিজেকে হার মেনেই ফিরে আসতে হয়। তারপর সে যণ্ত্রণা হজমেও লেগে যায় দু একদিন বা আরও বেশী।
আপনি রাস্তার ধারে আপনার স্বাধীন দেশের হাওয়া খাচ্ছেন, পুলিশ এসে প্রথম বাক্যেই তুই সম্বোধন করে বলবে, কি রে ছোকরা, কি করিস এখানে। তারপর একটি লজিকালি কথা বলতে গেলেই আপনাকে শুনতে হবে আপনার মা তুলে গালি। আপনার কন্ঠ এখানে স্তব্দ।
হোস্টেলে (বিশেষত ছত্রী হোস্টেল) মেন্যুতে বাহারী খাবারের কথা বলে কাড়ি কাড়ি টাকা নিয়ে পচা মাছ আর আধোয়া সবজি খাওয়াবে দিনের পর দিন। আপনি কিছুই বলতে পারবেন না। এখানে আপনার প্রাপ্য অধিকার বঞ্জিত। টগবগে রক্ত নিস্তরঙ্গ।
অজস্র মানুষের সামনে আপরার বোনের জামা ধরে টান দিচ্ছে বখাটে তরুণ।
আপনি মুখটা মাটির দিকে নামিয়ে হেটে যাবেন। এখানে আপরার যৌবনের
এরকম অজস্র ব্যাপার ঘটছেই তো প্রতিনিয়ত। খুব সাধারণ শুনায় কথাগুলো, তাইনা? কোন তত্ত্ব নেই, ফিলোসফি নেই। আমরা সবাই জানি এগুলো। এবার আমি যদি বলি এটা আমাদের একটা কালচারাল ক্যান্সার? যুদ বলি যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা অভ্যাসের এটা একটা মারক ভাইরাস আক্রান্ত ক্ষত।
যদি বলি এটা আমাদের একটা আচরণগত দুরারোগ্য ব্যাধি?
এটাকে যদি বলি একটা সময় প্রসূত প্যারালাইসিস? ভুল হবে কি? এটার মধ্যে কি লুকিয়ে নেই আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের উদ্ভাসিত হয়ে গড়ে ওঠার নিয়ামক ধ্বংসকারী একটা এটম বোমা?
একটা মজার ঘটনা বলি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে হলটাতে আমি থাকতাম সেখানকার ডাইনিংয়ের বেসিনে সাবান শেষ হয়ে গেলে কেই আর নতুন করে চেয়ে নিতো না। অথচ চাইলেই এটা পাওয়া যায়। শুধু মুখ দিয়ে একটু ঠোট যুগল নেড়ে তোলা। না।
কেউ বলবে না। সাবানের কেইস এ কোনমতে হাত ঘসে প্যান্টের মধ্যে বাকিটা ঘসতে ঘসতে রুমে ফিরে। বাথরুমে বদনাটা দিনের পর দিন ফুটা হয়ে আছে, নল ভেঙে আছে। কেউ বললেই হয়। বলবেনা।
আমাদের এই আচরণগত বন্ধত্য নিয়ে রআমরা টয়লেটের বদনার কথাই বলতে পারি না, লাইনের লোকটাকে কিভাবে বলব যে আপনি কিছুতে এতগেলো লোক ডিঙিয়ে আগে যেতে পারবেন না। আর পুলিশ সে তো মেলাদূর। এই বন্ধ্যাত্ত্ব কি আমাদের প্রতিবাদের জাতীয় মঞ্চ তৈরী হবার পথেও একটা বিশাল অন্তরায় নয়?
আজ শাহবাগ জেগে উঠেছে একটা ইসু্তে। কাল এটা নিয়ে আসতে পারে পরিবর্তনের সুবিশাল ক্যানভাস। যদি আমরা আজ থেকেই পথে ঘাটে নিজেদের আত্নার ভেতর এককটা শাহবাগ নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
যদি ভাবি আমার হৃদযন্ত্রের পাশে শাহবাগ নামের একটা জ্বলজ্বলে মঞ্চ দাড়িয়ে আছে। আমরা সেই শক্তি নিয়ে, সেই মঞ্চের হাক ছেড়ে সেই পুলিশের দিকে, সেই লাইন ভংকারীর দিকে একবার আত্নুবিশ্বাসী দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠতে পারি, তাহলে কি একেকটা শাহবাগ দাড়িয়ে যাবেনা আমাদর সাহসের পাশে ? এভাবেই তো হয়ে উঠে, এভাবেই তো জেগে উঠে আত্নার শাহবাগ। এভাবেই একদিন দেখবেন আমরা দুর্নীতিবাজদের ধাওয়া করেছি, এভাবেই একদিন আমরা আমদের বুকের উপর চড়ে বসা একটা আদিম পাথরকে ছুড়ে ফেলতে পেরেছি, আমরা কোন এক ভোরে দেখবেন এভাবেই ওদের গুটিকয় চাপাতির সামনে আমাদের প্রেমিকাদের নির্ভয়ে চুম্বন করে চলছি।
এভাবেই তো হয়।
এভাবেই জেগে উঠুক ষোল কোটি আত্নার শাহবাগ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।