অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা
পুরোনো একটা কৌতুক মনে পড়লো-
এক মহিলা শিশু কোলে নিয়ে বাসে উঠছেন, ঠিক দরজার সামনেই ড্রাইভার তাকে শুনিয়ে বললো এমন কদাকার মানুষের বাচ্চা আমি আর দেখি নি।
মহিলা রাগে গজগজ করতে করতে গিয়ে বসলো একেবারে পেছনের সীটে।
পাশের ভদ্রলোক গজগজানি শুনে বললো, কি হয়েছে আপনার।
ড্রাইভার অকথ্য অপমান করেছে।
যান ঐ ব্যাটাকে দু-চার কথা শুনিয়ে আসুন, ততক্ষণ আপনার বাঁদরটাকে আমি সামলাবো।
শাপলুর শেষ পোষ্ট পড়ে এই কৌতুকটাই মনে হলো প্রথমে। আমাদের কঠোর মডারেশন সাইটকে এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে, আমি চমৎকৃত হই তাদের সুশীলতায়। তারা অবশ্যই ভদ্র মানুষ, ভদ্রতার সুনাম যেহেতু অন্তর্জালে ছড়িয়ে আছে, তাদের ঔদ্ধত্ব্যও সে কারণে অসহনীয় লাগলেও যারা ভুক্তভোগী তাদের বিকার নেই।
প্রায় ২০০ বছর আগে এক ইংরেজ মহিলা প্রথম নারী স্বাধীনতার আওয়াজ তুললেন, তারপর নারীবাদিতা অনেক ধাঁচেই ছড়িয়েছে পৃথিবীতে, যারা স্বামীর নামের ল্যাজ নিজের নামের পেছনে নিয়ে ঘুরেন এইসব সম্ভ্রান্ত মহিলার মতোই সচল লেখক নিজের নামের পাশে ট্যাগ ঝুলিয়ে রাখলে সেটাও দোষণীয় হতে পারে না। কেউ সভ্রান্ততার ধারণার সাথে স্বামীর পদবীকে এক করে নিজের আত্মবিস্মৃতিকে বিস্মৃত হয়ে থাকতে পারেই।
এমন সব বাস্তবতায় একজনের উপলব্ধি ছিলো, নারীর এই হীনতার দায় নারীকেই নিতে হবে, তারাই আসলে পুরুষতান্ত্রিকতার খপ্পর থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে না, তাদের চিরন্তন ভাবনা কাঠামোই তাদের পুরুষতান্ত্রিকতাকে স্বীকার করে নিতে এবং সেই কাঠামোতেই নিজের স্বাচ্ছন্দ্যকে স্বীকার করে নিতে প্ররোচিত করে।
যারা সচলে নিয়মিত লিখেন তারা এটাতেই অভ্যস্ত,
হিমু প্রস্তাব দিয়েছে হয়তো তারা এক সপ্তাহ মডারেশনবিহীন সচলায়তন রাখা হবে, এই প্রস্তাবে তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হলো হঠাৎ করেই যেনো লেডিস হোস্টেলে পুরুষ ঢুকে পড়েছে। না না এসবের কি দরকার, আমরা মডারেশন ভালোবাসি, আমরা মডারেটেড। এই লেডিস হোস্টেল গেস্টরুম সিনড্রোম এবং ২০০ বছর আগের এক নারীর উপলব্ধি মিলিয়ে বুঝলাম কেউ কেউ নিজের মেরুদন্ড নিয়ে দাঁড়ানোর সৎসাহস রাখে না।
-------------------------------------------------------------------------------
আমরা নিজেদের অনেক কাজের ফাঁকে ফাঁকে আপনাদের জন্য ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো মডারেশনের গুরুদায়িত্ব নিয়েছি, আপনাদের নতজানু হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত।
এই মনোভাবটুকু, এবং তাদের নরম কাঁধে মডারেশন জোয়াল থাকবার ক্লান্তি তারা যে স্বরে প্রকাশ করে তা দেখে মনে হয়, কি দরকার বাপু তোমার জোয়াল টেনে ঘুরে বেড়ানোর, ছেড়ে দাও, এতই যন্ত্রনা যদি তবে কেনো বয়ে বেড়ানো এই জোয়াল, প্রতি সপ্তাহে একেক দলের কাছে মডারেশনের ছড়ি হস্তান্তর করো, দেখো কারা সবচেয়ে ভালো নিয়ন্ত্রন করতে পারে, এমনিতেই তাদের সাইটের নিয়মিত ভিজিটরে সংখ্যা কমতির দিকে, সবসময়ই দেখা গেছে পর্ণ সাইটের ভিজিটর বেশী সুতরাং সচল নিজেদের জনপ্রিয়তার জন্য এইসব লেখকনিয়ন্ত্রন প্রকল্প না নিয়ে বরং আদিরসের দিকে ঝুঁকতে পারে, হিমুর রসসিক্ত আদিরসের ভান্ডার কম নেই, সে এটাতে ব্যপক সাফল্য লাভ করতে পারে।
মডারেশন শেষ পর্যন্ত একজন কিংবা একদল মানুষের নিজস্ব স্বাধীন অভিরুচির প্রয়োগ, সেটা সব সময়ই সুপাত্রে এবং সৎপাত্রে পদান করা নাও হতে পারে।
তাই প্রতিটা মডারেশন নীতিমালার প্রয়োগে ভিন্নতা আনে।
সচলে প্রথম মডারেশন খাওয়ার পর কিংবা পোষ্ট ব্যন খাওয়ার পরে আমি তারেককে প্রশ্ন করেছিলাম, কেনো ভাই, আমার লেখাটা ঠিক কোন নীতিমালা ভঙ্গ করলো?
তখন উত্তর আসলো ভীমরুলের সাথে ইমরুলে একটা ছন্দোবদ্ধ মিল আছে ,সুতরাং আমার লেখাটি ব্যক্তি আক্রমনাত্মক।
এই উত্তর দেখে আমার তারেকের প্রতি মুগ্ধতা বেড়ে গেলো।
ছেলেটা অনেক দুর পর্যন্ত ভাবে। অনেক কিছুই ভাবে।
তবে যে আমার ব্যক্তি আক্রমনের সাথে সচলসদস্যদের ব্যক্তিআক্রমনের পার্থক্য কিংবা রসবোধের পার্থক্য আছে। সুতারাং রাইসু কিংবা সুমন রহমানকে নিয়ে করা ক্যারিকেচারে মডারেটর এবং সাধারণ সচল তীব্র উৎসাহে ব্যক্তিআক্রমন করে যাচ্ছেন, কিন্তু এক্ষেত্রে একটাই সান্তনা- এই দুজনই সচলশত্রু। শত্রুকে নিয়ে ব্যঙ্গ করা যাবে, সেটা নীতিমালায় আটকায় না কিন্তু কৌমের সদস্যদের কিছু বলা যাবে না, তাদের নামের আশেপাশে যেতে পারে এমন যেকোনো শব্দই ব্যক্তিআক্রমনাত্মক বিবেচিত হবে।
এই কৌমবাদ ছোটোকাগজের বৈশিষ্ঠ্য। তারাও নিজেদের অনেক বড় কিছু মনে করে, মনে করে তারাই দেশ-জাতিকে উদ্ধার করছে। তাদের কারণেই এখনও পৃথিবীতে সূর্য্য উঠে, চন্দ্র অস্ত যায়।
সচলসদস্যদের নিজস্ব নীচতার একটা দৃষ্টান্ত দেখেছিলাম সচলব্যন সময়ে, তারা সুশান্তকে গিয়ে হুমকি দিয়ে অকথ্য গালাগালি করে এসেছিলো। একজন মডারেটরের সাথে ব্যক্তিগত পরিচয়ে বললাম তোমরা এটা কি শুরু করেছো।
আপাতত নিজেদের অনুগত কুকুরদের সামলাও, তারা যা করছে সেটা কম্যুনিটি হিসেবে তোমাদের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
সে ঘুরে এসে বললো কই কিছুই তো নেই।
বললাম একটু ভালো করে খুঁজে দেখো, মুছে ফেলবার পরে অনেক "বাল"ই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মন্তব্যে- এসব অবশিষ্ট বালের পরিমাণ দেখে অনুমাণ করতে পারবে কত বাল ফেলেছিলো সেইসব অনুগত কুকুরেরা।
সে ঘটনার পরে আবার দেখলাম একই নোংরামি-
এবার ফারুক ওয়াসিফ প্রসঙ্গে, এখানেই একটা ব্লগ খোলা হয়েছে, তার শিরোণাম, "ফারুক ওয়াসিফের পুটকি"
আপাতত এটুকুই বলি নিজেদের সুশীলতার প্রমাণ রাখতে হলে এইসব অনুগত কুকুরদেরও নিয়ন্ত্রন করতে শিখো। সেটাই তোমার এবং তোমাদের জন্য ভালো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।