লোভ
তুহিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগের মাস্টার্সে পড়া তুখোড় মেধাবী ছাত্র। গায়ের রং কালো হলেও সুদর্শন। থাকে ঢাকার ফার্মগেট এলাকায়।
এক বন্ধুর বড় ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে পরিচয় হয় বগুড়ার মেয়ে কারিতার সাথে।
কারিতা ঢাকায় থাকে। পড়ে এক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে। লম্বা, সুন্দরী, স্লিম। ইংলিশ মুভির নায়িকাদের মতো চেহারা। আবার আচরণেও যথেষ্ট স্মার্ট।
পরিচয়ের সূত্র ধরে ঘনিষ্ঠতা বারতে থাকে। ইতোমদ্ধে মাস্র্টাস শেষ করে তুহিন যোগ দেয় লিভার ব্রাদার্সে [ বর্তমান নাম ইউনিলিভার]। ভালো পদ, উচ্চ বেতন। একই সাথে এম.ফিল ও করতে থাকে।
উভয় পরিবারে তুহিন- কারিতার বিষয়টি জানাজানি হয়।
দু’পরিবারই সম্পর্কটা মেনে নেয়। অবশ্য মেনে না নেওয়ারও কোন কারণ নেই। একসময় আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিয়ে সুসম্পন্ন হয়।
এমফিল শেষ হলে পি.এইচ.ডি করার জন্য স্কলারশীপের আবেদন করে। স্কলারশীপ পাওয়ায় তুহিন লিভারব্রাদার্স ছেড়ে সস্ত্রীক কানাডা চলে যায়।
স্কলারশীপ শেষে সে খুব ভালো বেতনের সরকারী চাকুরী নেয় এবং কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেয়। একসময় গ্রীনকার্ড পেয়েও যায়।
দু’ছেলে-মেয়ে নিয়ে তুহিন-কারিতার সুখী পরিবার। কিন্তু সভ্য দেশে বাস করার সুবাদে কারিতাও সভ্য হয়ে উঠে। শপিং, ক্লাব, যখন-তখন ঘুরতে যাওয়া, বাসায় থাকলে অনলাইনে বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে চ্যাটিং।
আবার চ্যাটিংয়ের কারনে বেশী রাত করে ঘুমাতে যাওয়া, দেরীতে ঘুম থেকে ওঠা কারিতার নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিনত হয়।
ফলে কাজ থেকে ফিরে সারাদিন পারিশ্রমের পরও প্রায় সব কাজই তুহিনকে করতে হতো। এসব নিয়ে কারিতার সাথে তুহিনের মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। কারিতা তুহিনের সাথে ছেলেমেয়েদেরও অবহেলা করা শুরু করে।
কারিতা একসময় উশৃঙ্খল জীবন যাপনে অভ্যস্থ হয়ে পড়ে।
দিনের বেশীরভাগ সময় সে চ্যাটিংয়ে সময় কাটায়। তুহিন জানতে পারে কারিতার চ্যাটিং বন্ধুটির নাম জাংলী। সে বৃটিশ-ডাচ গ্যাস উত্তোলন কোম্পানী শেল এ উচ্চ বেতনে কর্মরত। নাম জাংলী হলে কি হবে, সে অতি সুদর্শন ও স্মার্ট। কারিতা জাংলীর প্রেমে দিওয়ানা।
তুহিন কারিতাকে কয়েকবার সতর্ক করার পরও কারিতার আচরনে কোন পরিবর্তন হয়নি। অবশেষে তুহিন সেপারেশনের চুরান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এ সিদ্ধান্তটি কারিতাকে জানানোর পূর্বেই কারিতা পালিয়ে যায় জাংলীর কাছে এবং ফোনে তুহিনকে তার আশা ছেড়ে দিতে বলে।
তুহিন ছেলে- মেয়েদের নিয়ে পড়ে বিপাকে। ছেলে-মেয়েদের লালন-পালনের সুবিধার্থে তুহিন দেশ থেকে বাবা-মা কে কানাডায় নিয়ে যায়।
এভাবে কোনমতে তুহিনের দিন কাটতে থাকে।
বিয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেও ছেলে-মেয়ের কথা চিন্তা করে বিয়ের ভাবনা ও বাদ দেয়।
এভাবেই চলছে তুহিনের জীবন। সে ভেবে পায় না- কারিতা তার ভালোবাসাকে কেন এভাবে অবমূল্যায়ন করলো। নাকি তার ভালোবাসা একতরফা ছিল কারিতার কাছে ?
মো. শহীদুল কায়সার লিমন
বড়নল, ভিটিপাড়া ( বরমী), শ্রীপুর, গাজীপুর-১৭৪৩
মোবাইল- ০১৯১১৭৫৮৫৩৩, ০১৭১১১০৮৬৮৪
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।