আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলার কৃষক!!!



ভগবান তের পদের হিন্দু পয়দা করিয়াছেন, এই অভিযোগে ক্ষিপ্ত হইয়া, সনাতনী পদ্ধতির অবসানে ইখতিয়র উদ্দীন মুহম্মদ বীন বখতিয়ার খিলজী অষ্টাদশ অশ্বে অস্ত্র-শস্ত্র বোঝাই করিয়া দীনের দাওয়াতে হরিজনকে পাশে পাইয়া দিল্লীর সিংহাসনে তসরিফ আনিলেন। তাহার পর তাজমহলের রূপে ক্ষুব্ধ হইয়া বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ও সফল উপন্যাসিক (ইহা আমার ব্যাক্তিগত মত) “আনন্দ মঠ”-এ কড়জোরে বোম্বাই বন্দরে বাণিজ্য সফল ইংরেজকে ভারতের সিংহাসনে আরোহনের নমস্কারে নতজানু হইলেন। বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব গভীর রাতে মুজরার মূর্ছণায় আচ্ছন্ন। লুৎফার অশ্রুতে বালিশ সিক্ত। ঘষেটি বেগম মীর জাফরের সাথে ইষ্টিন্ডিয়া কোম্পানীর আশ্রয়ে বাংলার সিংহাসনে আরোহনের স্বপ্নে বিভোর।

পলাশীর সকল আমের মুকুল কুয়াশায় ঝরিয়া পড়িবার পর পলায়ন কারী নবাব ধৃত ও মীর জাফরের পুত্র মিরনের নির্দেশে মোহাম্মদী বেগ নামক ঘাতকের হস্তে নির্মম ভাবে হত হইবার একশত বছর পর ইংরেজ সৈন্য ঘোড়ার উপর তাম্বুড়া করিয়া বান্জারামপুরে খাজনা আদায় করিতে আসিলেন। খাজনা মাফ করিয়াছিলেন নবাব আলীবর্দী খাঁ, কৃষকদের এই প্রবোধে ইংরেজ রাজা ক্ষিপ্ত হইয়া ধানের জমিতে নীল চাষের এত্তেলা দিয়া আরো অপচয়ের হাত হইতে বাংলাকে রক্ষা করিলেন। শিল্প বিপ্লবের বিপদ মসলিনকে তাড়াইতে শিল্পীদের হস্ত কর্তণ করিয়া বাষ্পীয় ইঞ্জিনের আবিষ্কর্তারা বিলাতী পণ্যের পশরা বিশ্বের দরবারে মেলিয়া ধরিলেন। তাহাতে ক্ষিপ্ত হইয়া দীন বন্ধু মিত্র নীল দর্পণ রচিলেন। দন্ড-মুন্ডের নতুন প্রভুরা তাহা পঠন-পাঠন ও সংরক্ষণের জন্য রহিত করিলেন।

ক্ষণপরে শরৎ চন্দ্র চাটুজ্যে “রবি”-র পাশে গগনে উদিত হইয়া পথের দাবী রচনা করিলেন। নিজের দেশে পরবাসী ইহা কিমতে পশিব! পথের দাবী প্রত্যাখ্যানর পর, শরৎ বাবু “দুই বিঘা জমি”-র জমিদারের স্মরণাপন্ন হইলেন। তিনি জমিদারীর হালখাতা হইতে দৃষ্টি অসীমের পানে প্রসারিত করিয়া কহিলেন; বৎস্য ইংরেজর মত রাজা জগৎ খুঁজিয়া আর দ্বিতীয়টি পাইবেনা। তাদের মহানুভবতায় আমি চিরস্থায়ী জমিদার হইয়া কাব্য রচিয়া চলিয়াছি। তোমার মত উত্তরাধিকার সূত্রে কেবল সাহিত্য প্রেমে তৃপ্ত থাকিতে হয় নাই! তাহার পর কত রাজার উদয়-অস্ত গগনে খেলিয়া গেল! শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু নাম ধারণ করিয়া কৃষকের ক্লেশ ঘূচাইতে প্রাণপাত করিল! তাহার স্বপ্নের সোনার বাংলায় এখন ইষ্টিন্ডিয়া কোম্পানী কৃষকের সম্মুখে হাইব্রীড বীজের মুলাটা ঝুলাইয়া গর্দানটা লইতেছে।

কর্পোরেট বাণিজ্যের বাংগালী কেরানীর কৃষকের কৃতী সন্তান বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের কারণে তাহা দেখিতে না পাইয়া গুমরাইয়া কাঁদিতেছে!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.