সাধারন, আশাবাদী এবং যুক্তিবাদী । কাদের মোল্লা একাত্তুরে যে মানবতাবিরুধী অপরাধ করেছিলেন তা আজ আদালত দ্বারা পরীক্ষিত এবং প্রমাণিত । কিন্তু কাদের মোল্লার রায় নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে যে অপরাধ অনুযায়ী সঠিক বিচার এবং প্রত্যাশিত রায় হয় নাই । এর কারণ অনেক । আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসি দিয়ে প্রমাণ করেছিল যে তারা সকল প্রকার প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে প্রচলিত আইনের ধারা অনুযায়ী রায় দিয়েছিলেন ।
এর ফলে কাদের মোল্লার রায় নিয়েও সবার মনে একটা প্রত্যাশা ছিল যে ট্রাইব্যুনাল সঠিক রায়টি দিবেন ।
কাদের মোল্লার রায় ঘোষণা করা হবে একথা শুনে জামায়াতে ইসলামী যখন হরতাল ডাকল আর চারিদিকে যখন জালাও, পোড়াও, দাওয়া, পাল্টা দাওয়া, মৃত্যু দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ল আর হরতালের দিনে প্রত্যাশাহীন রায় হল তখন থেকেই সন্দেহের বীজ জনমনে রোপণ হয়েছে । তাহলে কী সরকার জামায়াতের তাণ্ডব দেখে পিছু হটল ? নাকি গোপনে সরকার জামায়াতের সাথে আঁতাত করেছে আসন্ন ভোটব্যাংক বাড়ানোর জন্য ?
এটর্নি জেনারেল থেকে শুরু করে সরকারপক্ষের আইনজ্ঞরা বলেছেন যে তারা আপিল করবেন । একটা ব্যাপার তারা পরিষ্কার করে বলেন নাই যে কেবলমাএ অভিযুক্ত ব্যাক্তিই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন । ঘোষিত রায় বাড়ানো যায় না কেবল কমানো সম্ভব ।
আর যে রায়টিতে কাদের মোল্লা খালাস পেয়েছেন কেবলমাএ সেই রায়টি পুনরায় বিবেচনার সুযোগ আছে । এর ফলে সাধারন জনতা একটা ভুল ব্যাখ্যা পেয়েছে এবং কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে ফুঁসে উঠেছে । ফুঁসে উঠা যৌক্তিক কারণ সরকার জনমনের প্রত্যাশা পূরণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে ।
শাহবাগ মোড়ে ব্লগার এন্ড অনলাইন এক্টিভিষ্ট নেটওয়ার্ক রায়ের প্রতিবাদে যে আন্দোলন শুরু করেছে তা সুনামির মত সারাদেশে সাধারণ মানুষের বিবেগে ছড়িয়ে পড়েছে । ফলে এই আন্দোলন শুধু অনলাইনের কিছু তরুণদের আন্দোলন নয় ।
এ আন্দোলন এখন সর্বস্তরের মানুষের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে । এ আন্দোলন তাহিরির স্কয়ারের আরব বসন্তের সাথে তুলনা করলে অত্তুক্তি হবে না । আমাদের দেশেও বসন্ত সমাগত । আর এক সপ্তাহ পরে বসন্ত আসছে । তাই শাহবাগ মোড় আজ শাহবাগ স্কয়ার ।
সেখানে জনজোয়ারে রাস্তায় তিল ধারনের জায়গা নেই । সবারই এক দাবী কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই । তারা বলেছে যে দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা বাড়ি ফিরে যাবে না ।
এ জনজোয়ার আর একটি দিক সামনে নিয়ে এসেছে । তা হল এতদিন যারা বলত যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিতর্কিত এবং জনগণের মতামত যাচাই বাচাই করা হয় নাই ।
কিন্তু এই আন্দোলন প্রমাণ করেছে সবাই মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার চায় । অপরদিকে আন্দোলনটি সরকারকে এই বলে বার্তা দিচ্ছে যে পরবর্তী রায়ে যেন জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটে । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।