_________________সেলাই গাছের কারখানা _______________________________________
দেহের সবক
সৈয়দ আফসার
ভ্রূ
চক্রাকারে ঘুরে ঘুরে তোমার প্রকাশ চোখের উপরে
দৃষ্টির র্মমভেদ শাসন হলো মগজের রাশটেনে
মান-অভিমান কিম্বা মিশ্রণ লক্ষ্য রাখছি যাতে
নিজের ছায়ার সাথে চোখ দুটি জাগে
কিন্তু তোমার ভ্রূ'তে আই-ভ্রূ ছাড়া কিছুই দেখি না আগে
তোমার ইচ্ছে পূরণ, আমারি অর্ধেক সন্তরণ...
পেরোবে হয়ত সবুজ সমীকরণ
কিন্তু এ-বসন্তের দিনে বনে বনে যত আয়োজন
মনেই থাকে না সরি! মনের ভেতর কার খর্বদারি
কার ঘনিষ্টতা কতটুকু তাও জিজ্ঞেস করিনি
এটুকু নিশ্চিত শুধু--
সে-ও মনপাখি, নারীপ্রিয়; শাড়িবাসিনী
নাক
বাহিরের দৃশ্য দেখে দেখে মিটে যাচ্ছে সাধ
এখন অপরাদ মেখে বেঁচে আছি শবদেহে
তবে তোমার গতিবেগ ছুঁতে আরো কিছু দিন
শ্বাস টেনে টেনে তোমার ব্যবধান খুঁজে নেবো
জপমালায়
ভীষণ শীতরাতে তারে আবিস্কার করি, কারণ
কার জন্য বেছে নেয়া এ-নির্বাসন
ঘুমের আমেজে নাক টেনে টেনে জ্বলছে-নিভছে
কিছু জিজ্ঞাসাবাদ
কষ্ট সহে এগুতে চাই, যা-হোক; কিন্তু সংশয়...!
দাঁত
খাওয়ার আগে রান্নাবাড়ার ঘ্রাণ ভাললাগে খুব
মাছ-মাংসের হাড়গোড় চিবানো মানেই তৃপ্তি
বাড়তি স্বাদ উপভোগ
এতো যে বলো ভুলে যাওয়া ভালো, হবে সবি
পরে হবে, এমন বাহানায় খুলে নিতে হলো
অতি-নর্মেরফল, যেমন দৃশ্য-দরশন; পূর্ণ বিবরণ
এ-সম্পর্ক জানতে না-চাইলেও বলো-
হাত ধরো। ভুলে যাও।
ভালো থেকো। নিরাপদে থেকো।
সুখে দুঃখে কিংবা ঠাট্টার ছলে হউক গভীর ক্ষরণ... ঘনিষ্ঠতা
ওহ! দাঁতের যন্ত্রণা... কামড়া-কামড়ি ছাড়া সব স্বাদ ব্যথা
কপাল
শীতরাত্রির পাশে যারা আমাকেও মিথ্যে রোমন্থনে
ফেলে রেখেছে তারাও জানে-- কোথায়; কবে
কার তাড়া খেতে খেতে, কার কথার লোভে স্বস্তি এলো মনে
কারণ নিয়তির দোষ দেবো না ভিন্নদেশে খেয়ে-পরে
নিজের ভেতর প্রশ্ন করি, কেন টানছি গ্লানি শূন্যতা
তোমরাই প্রশ্ন করো? জানতে চাও! ভোঁতাজীবনের কথকতা
আমি শীত না-সহে তোমাদের কিভাবে বলি শৈত্য-অভিজ্ঞতা
সুখ ভালোই আছে, টেমস্ নদীর পাড়ে
শুধু তোমাদের জন্য দুঃখ ফোটাই দিবারাত্রিভোরে
জিব্হা
কারও বাসনায় শুকনো কামনা লালার ফাঁকে
গড়িয়ে নামবে না জেনে তৃষ্ণা-সম্ভবা-জল
কুড়িয়ে রাখছি; ঢাকছি তোমার করুণা খুলে
বাকিসব সারিবাঁধা আতচকাচের দিকে
ফেনিয়ে উঠছে, চেঁচিয়ে উঠছে; ছোঁয়ালে
জিব্হার স্বাদ লবণহীন দেখছি লালার ফাঁকে
আমাকে টানছে আজ জল পিপাসার দিকে
স্তন
অজানা ব্যবধির পাশে রূপ ধরে আছে
স্পর্শ কেঁপে ওঠার আগে
অবাক চোখে তাকাই তার প্রাজ্ঞতা নিয়ে
দৃষ্টি ঝুলে পড়ার আগে, আপেল বনে--
সামনে দাঁড়ালে পাশ ফিরে তাকাই
ইচ্ছেকে খুন করে করে নিজেই খুন হতে চাই
হাত
আশা নিতে নিতে তৈরি হচ্ছে দু'হাতের স্বর
এ-ও কি আশা নিজের ভেতর চলে যেতে যেতে
সহজ নিথর
ভীতু ঠোঁট নিয়ম ভেঙে আদর করল তালুতে
এমন ধারণায় প্রথমবার ঘ্রাণ লেগেছে মনে
গুপ্তচর্চায় বলবো না; এরই নাম হয়ত অসহায়
বলছি যদি হাতে রাখো হাত, স্মৃতি-প্রীতি-সুধা
মনে থেকে যায়; কার স্পর্শে কে পুড়ে
কে-বা হারায় মুখরতায়, তসবিদানায়
বুক
তোকে খুলতে না-পারা তারও কি দর্শন আছে?
নাকি সংযমের অভিজ্ঞতা, সহনশীলতা
জানা যাবে আরো... আরো কিছু কাল পরে
অর্ন্তলোকে--
যখন তোর সরলতাটুকু হেসে হেসে ভাসবে সাতরঙা জলে
নিজের খুশিমতো নিজের ভেতর একাকি খুলে যাওয়া
কি যে আনন্দের, বুঝবে তখনই
যখন আমাকে শাসন করা হবে চোখের উপরে
তোকে খুলতে না-পারা ব্যর্থতা নয়, গুনে গুনে ত্রিফলা
গোপনে তাড়াতে পারিস্ গোলকধাঁধাঁ, রজঃস্বলা
নাভি
একবিন্দু জল থেকে জন্ম-- তিন পাক খুলে
এ-ও জানি গড়াগড়ি শিখেছি জলের আদরে
আলো বাতাসে বেড়ে ওঠা মায়ের জঠরে
জন্মের পর কেঁটে দিলে বাঁচি! কি লাভ বেঁচে?
একদিন ফুরাবে দেহের মায়া জগৎ সংসারে
মাটির দেহ মাটিতে গলে-পচে হবে কংকাল
রূপ নেবে কম্পোষ্ট সারে
নাড়ির টানে পিতা-প্রপিতামহ ফিরছেন জনে জনে
আমিও বারবার ফিরি আমার মায়ের টানে
লোম
তুমি যাই বলো, যাই করো কিছুই বলবো না
সহোদর; কেউ যদি কান পেতে শুনে
মনে রেখো সহৃদয়ে
ভাবো মনে মনে
তোমার বিপক্ষে আমার স্ব-বস্থান প্রলয়ের দিনে
কোমর
বেঁধে রাখো তামা-কাসা; পঞ্চধাতুর কবজ
শূন্যান্তরে বেঁচে আছে জন্মঋণ
প্রথাগত নিয়ম বলে দেয়, কোমরে কালোতাগা
প্রথম বেঁধে ছিল মা--
কিন্তু সম্পর্কস্থাপন বশ করে মিশ্র জীবনের কারুকাজ
কার অনুভবে ইচ্ছের সাথে মিশে যাচ্ছে দেহের লাজ
যশ-খ্যাতি যা পাবার গোপনে পেয়ে যাবো আজ
তুমি তাবিজে রেখেছো লাজ-শরম অজানাসূত্রসন্ধান
কবজে রেখেছো ইচ্ছে শাসনসহ মোহ উপাদান
আঙুল
মুঠো খুলে দেখি তোমার মৌন সমর্পণে
খুলে যাচ্ছে বাতাসের কথা; বুক ও হৃদয়
রেখার অক্ষমতায় পুরো দশ আঙুল খুলছি
অঙ্গুঁরীর ভালোবাসায়
নখ
কেউ স্বাধীন ভাবে বাঁচতে দেয় না
যাদের কাছে ওসব কথা ছোট হয়ে গেছে
তাদেরও চিনি না আমি, অভিন্ন হৃদয়ে
বেড়ে উঠলে নিজেরও হু-হু করে মন
কৌতূহল মিশে, ডুবে যেতে যেতে
পরগাছাও ভালো পোষাকের ভেতর
লোমে ও বোতামে
এতো কাঁটাকুঁটি এতো ঘষামাজা ইস্পাতে
পাশে রেখো তোমার ওই দরদীয়া হাতে
পা
দৃশ্য পান করা মায়া-র সাথে যদি
স্ব-ভাবি ছায়া কোনোমতে পর্দায়
দোল খেয়ে সুখ-স্বপ্নে ফিরে আসে
দেহে ঢুকে যদি দুলিয়ে যায় মন
নিশ্চুপ দেহের শিহরণ...
তবে কি পুষিয়ে নেয়া যাবে?
তোমার দু'পায়ের ফাঁকে আগলে রাখা
হাঁটার শূন্যস্থান---
কেবল তুমিই যদি পথ দেখাও
চোখ মেপে দেখবো দেহ খেলে আসা
রূপ-পরিবর্তনের হাওয়া কোথা হতে এলো
দেখতে কেমন...
স্ব-গৃহে ফিরবে না কেউ যারা চলে গেছে
ডানায় উড়ে, হাঁটার ক্লান্তি পায়ের তলায় রেখে
আমিও হারাবো একদিন বেঁড়িবাঁধা পায়ে
____________________হল শেষ_________________
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।