মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক লাখ ৩৫ হাজার সদস্য একসঙ্গে চালাচ্ছেন অভিযান। ৪ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে ধরা এবং দেশ থেকে বহিষ্কারের টার্গেট নিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছেন তারা। এ অভিযানে মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে অবস্থানরত প্রায় ২ লাখ ৬৮ হাজার বাংলাদেশি অভিবাসী চরম বিপাকে পড়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার ভয়ে তারা লুকিয়ে থাকার চেষ্টা করছেন। বৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের একাংশ কাগজপত্রের অভাবে একইভাবে নিগৃহের শিকার হচ্ছেন। মালয়েশিয়া সরকার তাদের দেশকে অবৈধ অভিবাসীমুক্ত করতে চাচ্ছে। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় কিংবা অবৈধ পথে মালয়েশিয়ায় যারা গিয়েছেন তারা এতকাল কাজ করেছেন নিয়োগদাতাদের সহযোগিতায়। জেল-জরিমানার ভয়ে মালিকপক্ষ এখন এসব কর্মীর দায়-দায়িত্ব অস্বীকার করছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা অননুমোদিতভাবে সে দেশে থাকা কর্মীদের ধরিয়েও দিচ্ছেন। গত চার মাস ধরে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের কারণে হতভাগা শ্রমিকরা এখন সত্যিকার অর্থেই বিপদাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন। তাদের কেউ বসবাস করছেন মেঝের নিচে খোঁড়া গর্তে। বাসার ছাদের নিচে আলো-বাতাসহীন জায়গায় তাদের রাত কাটাতে হচ্ছে। স্মর্তব্য, ২০১১ সালে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ সে দেশে অবস্থানরত বিদেশি শ্রমিকদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিল। ওই সময় বাংলাদেশের ২ লাখ ৭০ হাজার অভিবাসী নিবন্ধিত হয়েছিল। পরে তারা তাদের নিবন্ধন নবায়ন না করায় এখন বহিষ্কারের সম্মুখীন হচ্ছে। অননুমোদিতভাবে কোনো দেশে অবস্থান করা নিঃসন্দেহে অপরাধের শামিল। তবে হতভাগ্য শ্রমিকদের সিংহভাগই এ বিষয়ে সচেতন না হওয়ায় অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ অবস্থায় আড়াই লাখেরও বেশি বাংলাদেশি অভিবাসীকে রক্ষায় সরকার মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করে তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমার ব্যবস্থা করতে পারে। মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের ক্ষমা করলে আড়াই লাখেরও বেশি পরিবার যেমন বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে, তেমনি দেশের রেমিট্যান্স আয়ও বড় ধরনের ধকল থেকে বেঁচে যাবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।