একাকী নিরালায় কত কথা
কয়েকদিন আগে শেরপুর শহরের নালিতাবাড়ী উপজেলা গিয়েছিলাম। নালিতাবাড়ীর আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটা গবেষণামূলক প্রতিবেদন করতে। আমার দায়িত্ব ছিল ডালু এবং হদি আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাতকার নেওয়া, তাদের কাছে যুদ্ধের দিনলিপি শোনা, যুদ্ধকালীন সময়ে কেমন ছিল নালিতাবাড়ী উপজেলা।
নালিতাবাড়ী মোট ১২ টি ইউনিয়নে বেশ কয়েক জাতির আদিবাসী জনগোষ্ঠী আছে। এদের বতমান অবস্থা খুব একটা ভালো নয়।
কোন মতে দিন চলে যায় মুক্তি যোদ্ধাদের। আমার সাথে কথা হচ্ছিল হদি আদিবাসীর একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রবীন্দ্র'র সাথে। তিনি ১১ নং সেক্টরে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আপনারা কেমন সুয়োগ সুবিধা পান।
তিনি বেশ দুঃথখর সাথেই বললেন মুক্তিযোদ্ধারা মরার পর লাত্থি পায়।
অর্থাৎ মরার পর তাদেরকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করার সময় পুলিশরা স্যালুট করে এইটাই তাদের জীবনের একমাত্র পাপ্তি।
অনেকে আবার তাও পান না। শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার আর একজন গারো মুক্তিযোদ্ধা এন্দাপুল সাংমা। নালিতাবাড়ী উপজেলা থেকে প্রথম উইলিয়াম কোম্পানী যুদ্ধে যোগ দিয়েছলেন । এন্দাপুলণ সাংমা ছিলেন সেই কোম্পানীর একজন যোগ্য এবং সাহসী যোদ্ধা।
অথচ নালিতাবাড়ী ইপজেলার সরকারী মুক্তিযোদ্ধ্র তালিকায় তার নাম নেই। এই মুকিাতযোদ্ধা এখন ময়মনসিংহের ভালুকায় একটি ফিশারিজে মাত্র ৩০০০ টাকা বেতনে চাকরি করেন। দুই ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে দার স্ত্রী বায়োয়ারী গীর্জার পাশে ছোট্ট টিনের ছাপড়ায় মাথা গুজে থাকেন। এই যদি হয় দেশের মুক্তি যোদ্ধাদের অবস্থা তাহলে আমরা কোন দেশে বাস করি। একজন বাঙালি মুক্তিযোদ্ধার তুলনায় একজন ভিন্ন জাতের মুক্তি যোদ্বা অনেক বেশি কৃতিত্বের দাবিদার বলে আমি মনে করি।
আমরা রাজাকারের বিচার দাবি করি।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যু নিয়ে এবার শেখ হাসিনার মহাজোট নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছে।
একটি দেশের আদর্শ সেই দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের উপর নির্ভর করে। দেশের তরুণ সমাজ যারা দেশকে ভালবাসে তারা সবাই চায় দেশের বীর মতুক্তিযোদ্ধারা অন্তঃত শেষ জীবনে একটু ভালো থাক। এন্দাপুল সাংমা কি মরার আগে দেখে যেতে পারবেন না।
তিনি কি তবে দেশকে শুধুই দিয়েই গেলেন। তার টগবগে যৌবনের অনলে পুড় ছাই হয়েছে পাকিস্তানী দোসররা।
আমরা কি পারবো মুক্তি যোদ্ধাদের প্রকৃত মর্যাদা দিতে। তাদেরকে যথাযথ মূল্যায়ন করতে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।