সত্য কাঁদে নিভৃতে, সাথে তার থাকে শুধু মহাকাল। সত্যের দ্বীপশিখা চিরদিন জ্বলে । সত্য কখনো মিথ্যাকে করে নাকো ক্ষমা।
উইপোকায় খাচ্ছে পাটখড়ির বেড়া। এদিক-ওদিক ভাঙা।
হু হু করে ঢুকছে হিমেল হাওয়া। নড়বড়ে হয়ে গেছে দোচালা ঘরের খুঁটিগুলো।
এমনি একটি ঘরেই ধুঁকে ধুঁকে জীবন কাটছে মুক্তিযোদ্ধা জাফর মোল্লার (৭০)। অথচ এই মানুষটিই কিনা একদিন হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করেছেন। আমাদের দিয়েছেন স্বাধীন একটি দেশ, একটি পতাকা।
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের চলনালী গ্রামে তাঁর বাড়ি।
জাফর মোল্লা জানান, দেশ স্বাধীনের পর তিনি লাশ টেনে জীবিকা নির্বাহ করতেন। লাশ টানতে টানতেই জীবনটা পার করেছেন। সেই ১৯৮০ সাল থেকে নাটোর জেলা সদরের হাসপাতাল মর্গে লাশ টানার কাজ শুরু করেন। এখন বয়স হয়েছে।
বছর পাঁচেক ধরে ওই পেশায় আর নেই। ফলে রোজগারের পথটিও বন্ধ। এখন সরকারি ভাতার দুই হাজার টাকাই তাঁর একমাত্র সম্বল। অনাহার-অর্ধাহার আর দুশ্চিন্তায় মানুষটি এখন রোগ-শোকে জর্জরিত। সংসারে তাঁর চার ছেলে ও স্ত্রী রয়েছেন।
বড় তিন ছেলে বিয়ে করে অনেক আগেই পৃথক হয়ে গেছে। বাড়ি করার মতো জায়গা ছিল না এই মুক্তিযোদ্ধার।
তাঁর দৈন্যদশা দেখে পাঁচ শতাংশ খাস জমি দেয় সরকার। সেখানেই কোনো রকমে ছাপরা তুলে বাস করছেন। একটি চৌকি পর্যন্ত কিনতে পারেননি।
বাঁশের মাচা করে তার ওপরই ঘুমান। মাথার ওপরের পুরোনো পাতলা টিনের চালাটিও শতছিদ্র। একটুখানি বৃষ্টি হলেই ঘরে পানি পড়ে। ছোট ছেলেটিকে এইচএসসি পাস করাতে পারলেও টাকার অভাবে তার উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা হচ্ছে না। ( প্রথম আলো- ১৩/১২/২০১২)
মোঃ আলাউদ্দিন একজন মুক্তিযোদ্ধা।
জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ বছর ধরে রিক্সা চালান। এখনও চালাচ্ছেন। যারা জানতে পারেন যে তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা তারা তাকে শ্রদ্ধা করেন।
ধিরেন্দ্রনাথ দাস তিনি সিরাজগঞ্জে যুদ্ধ করেছেন। পেশায় তিনি মুচি।
মানুষের জুতা পালিশ করেন, সেলাই করেন। ২৫/৩০ বছর হল তিনি এই পেশায় আছেন। দারিদ্রতার কঠিন অভিশাপে এই মানুষগুলোর জর্জরিত।
এই দেশের ভাগ্য যারা পরিবর্তন করেছেন সেই মানুষদের কত কষ্ট তা আমরা কেউ জানিনা। এরকম আরো কত নাম না জানা মানুষ আছেন যাদের কথা আমরা কেউ জানিনা।
গত বছর আমি একটা পত্রিকায় পরেছিলাম একজন মুক্তিযোদ্ধার পরিবার দারিদ্রতার কষাঘাতে খারাপ পেশা বেঁছে নিয়েছে। যা পড়ে অনেক খারাপ লেগেছিল। মাঝে মাঝে টিভিতে দেখি কোন কোন মুক্তিযোদ্ধা বস্তিতে থাকেন।
গতকাল বিজয় দিবসে সরকারি সব ভবনগুলোতে এতো আলক-সজ্জা ছিল কি বলব। আলোয় আলোয় ভরা ছিল চারদিক।
কত উল্লাস কত আনন্দ করেছে মানুষ। আমার এই আনন্দ দেখে হাসি পেয়েছে। যারা এই দেশ যুদ্ধ করে স্বাধিন করেছেন। তাদের খবর কেউ রাখেনা। কি পেয়েছেন তারা?? যুদ্ধ অপরাধির বিচার হোক আমরা সবাই চাই।
কিন্তু কয়জন এভাবে গলা বারিয়ে বলে যে যারা এই দেশ স্বাধিন করেছেন তাদের কে সাহায্য করা হোক। তাদের কে সঠিক সম্মাননা দেয়া হোক। কাল টিভিতে দেখলাম ঢাকাতে মুক্তিযোদ্ধাদের অভ্যর্থনা দিতে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় সেখানে অনেক মুক্তিযোদ্ধা দাঁড়িয়ে ছিল। বসার জায়গা পায়নি। আর যারা মুক্তিযোদ্ধা না তারা বসে ছিল।
আজব দেশ আমার বাংলাদেশ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।