বছরে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল ভারত থেকে পাচার হয়ে বাংলাদেশে আসছে। এতে বিশাল অঙ্কের টাকা ফেনসিডিলের পেছনে অপচয় হওয়ায় দেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৯৮৩ সালে প্রথম সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভারতে প্রস্তুতকারীর ওষুধ ফেনসিডিল সেবন শুরু করে তরুণেরা। সে সময়ের পেঁচা, বিলাই নামের ফেনসিডিল আজ ডাইল, ফেন্সি নামে মাদকসেবীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফেনসিডিলে আফিমের উপাদান কোডিন ফসফেট থাকায় ১৯৮৬ সালে প্রণীত ওষুধ নীতিতে ফেনসিডিলকে নিষিদ্ধ করা হয়।
সেই নিষিদ্ধ ফেনসিডিল এখন বাংলাদেশের সর্বত্র বিক্রি হচ্ছে।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ১৯৯০ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ফেনসিডিল পাচার ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ১৯৯৪ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ৮১ শতাংশ পাচার বৃদ্ধির ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ওই সময়ের চেয়ে ফেনসিডিল পাচার ও সেবন শতভাগ বেড়েছে। আহছানিয়া মিশনের ২০০৬ সালের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ২৫ লাখ।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে এ সংখ্যা ৫০ লাখ। ২০০৮ সালের ২৫ জুন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৪৬ লাখ। আর মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ৮০ হাজার থেকে এক লাখ মানুষ। কতোজন ফেনসিডিল সেবন করে তার কোনো তথ্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হাতে নেই। তবে মাদকাসক্তদের বেশির ভাগই ফেনসিডিলসেবী।
৪৬ লাখ মাদকাসক্তের মধ্যে ৩০ লাখ ফেনসিডিলসেবী ধরা হলে এবং প্রতিদিন একজন ফেনসিডিলসেবী দুই বোতল ফেনসিডিল পান করলে দিনে ৬০ লাখ বোতল, মাসে ১৮ কোটি বোতল, আর বছরে ২১৬ কোটি বোতল ফেনসিডিল পান করে। অন্যদিকে যে পরিমাণ ফেনসিডিল পাচার হয়ে আসে আটক হয় তার সামান্য অংশ। তারপরও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সীমান্ত পথে পাচার হয়ে আসার সময় গত বছর আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ৬০ হাজার বোতল ফেনসিডিল আটক করেছে। দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ৪০০ কিলোমিটার সীমান্ত পথ দিয়ে ফেনসিডিল পাচার হয়ে আসছে বানের পানির মতো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাত্রাতিরিক্ত কোডিন ফসফেট থাকায় ফেনসিডিল পানের কারণে যুব সমাজের স্মৃতিশক্তি লোপ পাচ্ছে।
মানসিক ও শারীরিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে অনেকের যৌনক্ষমতা। দীর্ঘদিন সেবনের কারণে অনেকে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে বাধ্য হচ্ছে। আসুন আমরা সবাই মিলে নেশা মুক্ত দেশ গড়ে তুলি ।
সূত্রঃ দৈনিক যায় যায় দিন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।