ব্লাডঃ এবি নেগেটিভ।
সেদিন সকাল বেলা। আমার বিছানা ছাড়ার আগেই। অফিসে যাবার পথে একটু আগে ভাগেই হন্ত দন্ত হয়ে এই প্রচন্ড কুয়াশাচ্ছন্ন শীত সকালে আমার দরজায় এসে কড়া নাড়ছেন। জোরে, প্রচন্ড জোরে।
দরজা ভাঙ্গার মতো অবস্থা। রাজ্যের বিরক্তিবোধ নিয়ে দরজা খূলতেই-
# তোমার ইন্টারনেটটা চালু করতো ! তাড়াতাড়ী !
* কেন কী হয়েছে ?
# পরে বলছি, আগে চালু কর।
* আচ্ছা তা না-হয় করলাম। কী হয়েছে বলবেনতো ?
# বলছি, তুমি ইন্টারনেট খুল। বলেই-
স্বভাব সুলভ ভাবে গড়গড়িয়ে আওড়াতে লাগলেন রাজ্যের- যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার, আল-বদরেরা যা শুরু করছে না।
দেশে আর থাকা যাবেনা .. .. ..।
উনি আমার সিনিয়র সহকর্মী। জিয়া হাসান। যা বলবে তো বলবেই। ব্যাখ্যা চাওয়ার উপায় নেই।
যা বলবেন তা-ই ঠিক, উল্টানোর উপায় নেই। মাঝে মাঝে একটা কথাই শুধু উনার গলার নরম সুরে শুনি- কেন যে আমার নামটা ”জিয়া হাসান” হলো? বুঝা যায় সহজেই ”শক্তপন্থী” আওয়ামী লীগ করেন।
# এবার যদি আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করে তাহলে আওয়ামী লীগের খবর আছে !
* আর যা-ই বলেন আমি কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইনা, এও চাইনা এটা আওয়ামী লীগই করুক।
# কী কও তুমি ? (মাথায় যেন তার আকাশ ভেঙ্গে পড়লো !) তুমিতো দেখছি জামায়াত শিবিরের ভক্ত !
* না। তা-ও না।
# তাহলেতো দেখছি তুমি একটা পূরো যুদ্ধাপরাধী .. .. ..
* আচ্ছা বলেনতো স্যার, বার বার আপনারা কেন বদমাইশগুলোকে যুদ্ধাপরাধী বলছেন ? তারা কি কখনোও যুদ্ধ করেছে ? যুদ্ধই যদি না করলো, যুদ্ধেই যদি না গেলো তাহলে তারা যুদ্ধাপরাধ করলো কীভাবে ?
# যুদ্ধতো করেনাই-ই করেছে যুদ্ধের বিরোধীতা। কত যে মা-বোনের সর্বনাশ .. .. ..
* তাইতো, একজন সৈনিক, যুদ্ধা যদি যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ না করে যুদ্ধের নীতি বিরোধী কোন কাজ করে তাহলে তাকে যুদ্ধাপরাধী বলা যায়। তার শাস্তি হতে পারে। যুদ্ধ নীতিমালায় তার বিচার হতে পারে। বিচার করতে পারে যুদ্ধ সংশ্লিষ্ট বিচারকরা, না-কি ? কিন্তু যে যুদ্ধেই যায় নাই, উপরন্তু বিরোধীতা করেছে তার বিচার করার এখতিয়ার কার ? অপরাধীর নিজেরই।
# হ তুমিতো বলবাই ! করোতো শিবির!
* হাসলাম।
# দেখতো সাকা চৌঃ কী কইছে ?
একমনে প্রথম আলোর পেইজগুলো দেখছি-
* আমার মতে- ওদের বিচার কেউ করতে পারবেনা। ওদের বিচার ওদেরকেই করতে হবে।
# ওরা আবার ওদের কী বিচার করবে ?
* আমি চাই ওরা প্রকাশ্যে পল্টন ময়দানে স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করবে, নয়তো পায়ে শিকল লাগিয়ে বুকে-পিঠে ”আমি জাতীয় বে-ঈমান” -লিখে সারাদেশে বিচরণ করবে।
# তোমার যত তামাশা।
”বে-ঈমান” লিখবে কেন ? ওদের কি ঈমান আছে, না-কি ছিল ?
* আরে এইজন্যেই তো লিখবে। কারন, ওদের ঈমান নেই, ছিলোনা। অথচ ঈমানের নামেই তো ওরা মা-বোনদের ইজ্জত লুটেছে .. .. ..। যুদ্ধে যায় নাই, সামান্যতম সহযোগিতা করে নাই, অতএব, যুদ্ধাপরাধও করেনাই। যুদ্ধে গেলে যুদ্ধপরাধ করাটাও স্বাভাবিক ছিলো।
কারন খেলা থাকলেইতো ফাউল থাকবে। কিন্তু যুদ্ধে না গিয়ে দেশ, দেশের মানুষ, মা-মাটির সাথে বে-ঈমানী করেছে। খেলতেও যায় নাই ফাউলও করেছে। সুতরাং আমি ওদেরকে যুদ্ধাপরাধীর চেয়েও নিকৃষ্ট নামে ডাকতে সরি থু-থু দিতে চাই- ”জাতীয় বে-ঈমান”। আপনি কী বলেন ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।