আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কওমি হুজুরের এক হাত ঘুরা আত্নকাহিনী-১৯

কাগু ক্যান স্টার্ট অ্যা ফায়ার ইউজিং জাস্ট টু আইস কিউবস

একই গেরামে থাইকাও রাশেদা আপার লগে আমার মুবাইলে কথা হৈতে লাগল দিনে চাইর পাঁচ ঘন্টার মত কৈরা । আগে মুবাইলে হোক সরাসি হোক অনেকক্ষণ ধৈরা কথা বলা লুকজন নিয়া হাসাহাসি করতাম । এত কথা কিসের ? কথা বলার বিষয় কি দুইন্যাতে এত আছে নাকি ? এখন নিজে যা বুঝতাছি । কথা কওনের আসলে বিষয় লাগে না । আইজকা ঘরে রান্ধন হৈছে কি এইটা নিয়াও রাশেদা আপার সাথে ঘন্টাখানেক কথা হৈয়া যায় ।

নিজেই আসলে খেয়াল করতে পারিনা কি কথা হৈল না হৈল । খালি কথা কৈতে ভালো লাগে তাই কই । ঘরে পুরুষ মানুষ নাই । রাশেদা আপার তিন বৈন । তিনডাই বিয়াত্যা এবং শ্বশুর বাড়ীতে ।

দুই ভাই মিডিলিস্টে । ঘরের টুকটাক বাজারসদাই মাইয়ার ছুডখাড চিকিৎসা এইগুলার জৈন্য ডাক পড়ে আমারই । কাজে কামে হৈলে যাওন যায় । কিন্তু খাজুইরা আলাপের জৈন্য ঘরে গিয়া বৈসা থাকন যায় না । রটনা রটানির এই সুযোগ গেরামের পাব্লিক ছাড়বো না ।

আব্বার পাগলামি শুরু হৈল মেঝ ভাই ছৌদি যাওনের বছরখানেক পর । একদিন অনেকটা হঠাৎ কৈরাই । রুযার শেষ দশদিনে ফেনীর এক মসজিদে তাবলীগের সাথিগো লগে এতেকাফে বসছিলেন । ঈদের দিন বাড়ীতে আইস শুরু করলেন পরকালের মাগফিরাত এবং নাযাত সংক্রান্ত লেকচার । প্রথমে আমরা কেউ তেমন গুরুত্ব দিই নাই ।

এইরকম লেকচার তিনি প্রায়ই মারেন । আম্মা আছেন অসীম ধৈর্য নিয়া শুনেন । আইজকাল আমার কাছে তেমন একটা মারতেন না লেকচার । মারলেও এদিক সেদিক একটা কথা বৈলা আমি উইঠা যাইতাম । অনেকদিন হয় কিছু বলেন না এখন আর ।

কিন্তু ঈদের পরদিন আমি এইরকম একটা লেকচারের মাইঝখানে দোকান খুলতে যাইতাছি বৈলা উঠতে গেলে ধমক দিয়া আমাকে বসাইয়া দিলেন । আরো কিছুক্ষণ পর আমি উইঠা গেলে আমারে শুরু করলেন দৌড়ানি । হঠাৎ ভ্যাবাচ্যাকা খাইয়া আমি দৌড়ামু কিনা বুঝতে পারলাম না । ধৈরা ফেইলা আমারে এক ধাক্কায় দিলেন পুকুরে ফালাইয়া । ছুড পুলাপান হাসতে ছিল ।

ওদেরকে চুপ করতে বৈলা আমি পুকুর থাইকা উঠতে উঠতে তিনি স্বাভাবিক মাইনষের মত হাইটা মসজিদের দিকে চৈলা গেলেন । কিছু বুঝলাম না । এইভাবে শুরু হৈলেও দুই তিনদিনের মইধ্যে আব্বার পাগলামি চুড়ান্ত পর্যায়ে উঠল । পরদিন ভোররাতে ঘুম থাইকা উইঠা কাউরে কিছু না বৈলা চৈলা গেলেন দুই গেরাম দক্ষিণে আমার জ্যাঠাত বৈনের শ্বশুরবাড়ী । জ্যাঠাত বৈনের দুই পুলা ।

তের আর এগার বয়স । ঐ দুইটারে ঘুম থাইকা উঠাইয়া মসজিদে নিয়া গেলেন । আসার পথে কি কারণে জানি আবার ঐ দুইটারে দৌড়ানি শুরু করলেন । ওরা অন্য পথে ঘুইরা আমাগো বাড়ীতে আইসা খবর দিলে, বুঝলাম আর হাতপা গুটাইয়া বৈসা থাকনের সময় নাই । দরবেশ আর আমি দুইজনে মিলা বাইর হৈলাম উনারে খুঁজতে ।

মাইর টাইর খাইয়া কুনোরকমে ধৈরা বাইন্ধা বাড়ীতে নিয়া আইলে শুরু হৈল আম্মার বকবকানি । আব্বা উল্টাপাল্টা কাজ করলেও কথা নাকি অসংলগ্ন কৈতাছেন না । সেটা একদিক দিয়া ঠিকও বটে । কুরানের আয়াত, বিভিন্ন হাদিস, ওলি আউলিয়াগো জীবনের বিভিন্ন ঘটান সমারে বকবক কৈরা যাইতাছেন । কিন্তু সব কিছুরইতো সময় আছে, অবস্থা আছে ।

সব অবস্থায় সবকিছুতো খাটে না । আম্মার বকাবকির মূল কথা হৈল আব্বারে ধৈরা বাইন্ধা রাইখলে বদ্দোয়া পড়বো । অতএব উনারে ছাইড়া দে । কথা কওয়া শেষ হৈলে এমনিতেই থাইমা যাইব । কিন্তু অবস্থা বেগতিক ।

আমরা খুইজা ফিরতাছি এর মইধ্যেই আরো কয়েকজনের সাথে উল্টাপাল্টা কথাবার্তা বৈলা আসছেন সেই খবর আইতে লাগল । ফেনী নিয়া গেলাম আম্মার কথার বিরুদ্ধে । মানসিক ডাক্তারের কাছে । পাওয়ারফুল ঘুমের ঔষধ দিয়া শেষ পইর্যন্ত আব্বারে শান্ত করা গেল । পাগলামির ঝামেলায় সপ্তাহখানেক রাশেদাআপার সাথে ফুনে কথা কৈতে না পাইরা আমার ভিতরে জৈমা গেছিল অনেক কথা ।

আব্বা শান্ত হওনের পরে সপ্তাহখানেক দোকানদারি অনেকটা দুনিয়াদারি ছাইড়াই কেবল ফুনে কথা বলা শুরু করি । রাহেলার নজরে পইড়া যাই । রাহেলা আমার ছুড বৈন । খোদেজার পরে । খোদেজার মতই কেলাশ এইট পার হৈতে না পাইরা ঘরে বেকার আজ দুই বছর ।

বেকার বলাডা অবশ্য ঠিক না । আম্মার বয়স হৈছে । খোদেজা ফাঁকিবাজ । ভাবীর শইল্যে সারা বছর সমস্যা । আমাগো বিশাল পরিবারের কামকাজ ধরতে গেলে একাই চালাইতাছে ।

রাহেলা যে মুবাইলের ব্যাপারস্যাপার বুঝে আমি জানতাম না । একদিন আমার কাছ থাইকা ফুন নিলো বান্ধবীরে ফুন করার জৈন্য । ফিরাইয়া দেওনের সময় কয় , রাশেদাআপার সাথে এত কথা কিয়ের আপনার । শুইনা একটু টাসকি খাই আমি । কল লিস্ট দেখাও শিখছে তাইলে ।

না , উনার মাইয়ার অসুখ ডাকতরের কাছে নিয়া গেছিলাম । ওষুধ খাওয়ানোর নিয়ম বুঝে না দেইখা বারবার খাওয়ানির সময় ফুন কৈরা জিজ্ঞাসা করে , এই ধরণের ধুনফুন বৈলা কথা কাটানির চেষ্টা করি আমি । নিজের কাছেই হাস্যকর লাগে । কিন্তু আকামতো হাছাই করছি । যুক্তিতো আসলেই নাই ।

চৈলা যাওনের সময় রাহেল কয় ঔষধ খাওয়ানির নিয়ম শিখাইতে কি এক ঘন্টা লাগে নাকি । আরেকটু টাশকি খাই আমি । রাশেদাআপারে ফুন কৈরা রাহেলার ঘটনা কই । উনি কন তাইলে তো সব্বনাশ । রাহেলার ঠোঁটকাঁটা ।

মাইয়াডারে নিয়া সমস্যা হৈল উচিৎ কথা কৈতে ডরায় না । আম্মা এইজন্য দুইচোক্ষে দেখতে পারেন না ওরে । প্রায়ই বকাবাদ্যি করেন । ডরাই আমিও কিঞ্চিৎ ওরে , কিন্তু রাশেদাআপারে বলি সমস্যা নাই, অত বুঝবো না । কিন্তু কয়েকদিন রাশেদাআপার একটু গুটাইয়া যান ।

এর মইধ্যে খোদেজার বিয়া হৈয়া যায় অনেকটা আড়ম্বরবিহীন । দুরের আত্নীয়দের কাউকেই আনা যায় না । কাজগুলা আগাইতাছে দেইখা আমার একটু ভাল্লাগে । যেই অবস্থা থাইকা শুরু করছি সংসারের হাল ধরা তার তুলনায় এখনকার অবস্থা যে কারো মতেই অনেক ভালো । ধার কর্যগুলা ঠিকঠাকমত কিলিয়ার করা হয় নাই ঠিককথা ।

কিন্তু মাথার উপরে জইমা থাকা কাজগুলাতো সিরিয়াল হৈতাছে । দোকানডা আরেকটু ভালোভাবে গুছানির চিন্তা করি আমি । আয়ের পথ বাড়ানি দরকার । নিজের কিছু জমাইনা ট্যাকা হাতে নিয়া উড়নচন্ডী সাইঝা ভাইরে ছৌদি পাঠানির চিন্তা করি । মেম্বার ছাবের সাহাইয্যে আর নিজের জমা ট্যাকা মিলাইয়া একটা ব্যবস্থা খাড়াইয়া যায় ।

নিজের জীবনে সুখের দেখা মাগার পাইলাম না এখন পইর্যন্ত । রাশেদাআপারে নিয়া আর কিছুতেই আগানো যাইতাছে না । গেরামের পাব্লিকরে উনার যেই ভয় তার চাইতে বেশি ভয় রাহেলারে । ফুনে ঠিকমত কথাই কৈতে চাননা এখন । মাঝে মাঝে মনে হয় রাহেলার ঘটনা উনারে না বললেই এক ভালো হৈত ।

আমারকি অধিকার নাই একটু সুখের ? হালার দুইন্যায় এত নিয়ম কানুনের বাহার, এত লোকলজ্জা সমাজের ডরভয় এইগুলার যাতাকলে আমার মত মাইনষের কি অবস্থা এইডা কেউ ভাবে না ক্যান ? সাইঝাভাইরে পেলেনে তুইলা দেয়ার জৈন্য ঢাকা যাই আমি আর খুরশিদ । ঢাকায় মামা খালাদের বাসা আছে । কিন্তু গত কয়েকবছরে পাওনা ট্যাকটুকা নিয়া ঝামেলার কারণে কারো সাথে সম্পর্ক খুবেকটা ভালো নাই । জীবনে প্রথম হোটেলে থাকি তিনজন । ফেলাইটের দিন ফিরা যাওনের সময় খুরশিদ কয় ঢাকা আইছসতো অনেক দিন পর ।

চল একদিন থাইকা ঘুইরা টুইরা যাই । সারাদিন দুইবন্ধু মিলা চিড়িয়াখানা চন্দ্রিমা উদ্যান সংসদ ভবন ঘুইরা দেখি । চন্দ্রিমা উদ্যানের গাছে গাছে জোড়া দেইখা আমার খালি হিংসা লাগে । নিজেরে খালি খালি লাগে । রাইতে হোটেলে থাইকা পরদিন ফিরা যামু বৈলা ঠিক করি ।

পায়েরখোলা মাদরাছার হুজুর খুরশিদ রাইত নয়টার দিকে প্রস্তাব করে রুমে ভাড়া মাগি আননের । আকাশ থাইকা পড়ি আমি । ধুর । ছিছি কি কইস এইসবের পরে , হাফ-গিরস্ত মাইয়াও নাকি আছে শুইনা শেষে রাজি হৈয়া যাই আমি । খুরশিদের পরে ঘরে ঢুইকা আমি কি কমু বুইঝা উঠতে পারি না ।

জানি ঘটনা ক্যামনে কি । কিন্তু কিছু একটাতো কৈতে হয় । মাইয়ারে জিগাইলাম, নামায পড়নি তুমি ? ------------------------------------------------- কওমি হুজুরের এক হাত ঘুরা আত্নকাহিনী-১৮ Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.