কাগু ক্যান স্টার্ট অ্যা ফায়ার ইউজিং জাস্ট টু আইস কিউবস
বড় ভাই বাড়ীতে আসেন তিনদিন পর । মুখে লাজুক হাসি । দোকানে এলে আমি জিগাই , ভাইয়া কামডা কি ঠিক হৈল ? বড়ভাই বলেন ঠিক বেঠিক তুই আমি বিচার করার কে ? আল্লাহপাক তকদিরে যা লেইখা রাখছেন তাই হৈব । যা হৈতাছে সেডা নিয়াই শুকুর আলহামদুলিল্লাহ বৈলা থাক । কথাডা মন থাইকা আমি মাইনা নিতে পারতাছি না এখনো ।
সব আল্লার ইচ্ছার উপরেই হৈলে তাইলে আমি এত পরিশ্রম করি ক্যান ? আমি এত রক্ত ফানি করি ক্যান ? তয় বড় ভাইর মিজাজ দেইখা একটু ভালাই লাগে । আগে হৈলে ধমক দিয়া কৈতেন কথাগুলা । এখন মিনমিন কৈরা কন । রাগ উত্তাপ নাই তেমন একটা । ভালোই লাগে ।
একদিক দিয়া মনে হয় খুবেকটা খারাপও হয় নাই । দীর্ঘদিন ধৈর্য্য ধরছেন বেচারা । বড় ভাই আর ছুড মামার জন্ম কয়েকদিন পরপর । ছুড মামার দুই পুলা । বড়ডা কিলাস টুতে পড়ে ।
সময় নষ্ট না কৈরা হয়ত ভালোই হৈছে ।
বিয়ার আয়োজনে খরচের বাহার দেখে আমার একটু খারাপই লাগে । তয় বড় ভাই দরাজ দিলে দিতে থাকেন বৈলা নিজেরে বুঝাইয়া নিই । আত্নীয় বন্ধুবান্ধবের বাড়ী বাড়ী গিয়া বিয়ার দাওয়াত দিয়া আসি । ফেনী থাইকা চাইল ডাইল মসলাপাতি কিনা আনি ।
একটা গরুও কিনা ফালাই গেরাম থাইকা । আমার জীবনে দেখা আমাগো বাড়ীতে এইটা প্রথম উৎসব । শুনতে পাই এর আগেরডা হৈছিল বড় ভাইর মুসলমানির সময় । তারপর থাইকা উৎসব আয়োজনের মুরোদ আমাগো পরিবারে ছিল না । এইবারে তাই আত্নীয়রা আসতে থাকেন সবাই ।
অনুষ্ঠানের দুইদিন আগেই বাড়ী ভরে যায় লুকজনে । খালাত মামাত ফুফাত ভাইবোনেরা আসে । দোকান বন্ধ কৈরা দিয়া আমি আড্ডা মারি ওগো লগে । রাইতে শোয়ার জায়গা নাই কারো । মামি খালারা কুনোরকমে চাপাচাপি কৈরা শুইলেও আমাগো পুলাপানগো শুয়ার কুনো জায়গা নাই ।
চান্দের আলোতে আমরা উঠানে ডেকোরেটর এর চেয়ারে বৈসা আড্ডা দিই । এক দুস্তর বাড়ি থাইকা একটা টেপ নিয়া আইসা হিন্দী বাংলা গান ছাড়ি । আব্বা ঘুম থাইকা উইঠা শুরু করেন বকাবকি । এইসব বেশরিয়তি বেদাতি কাজকারবার তিনি সহ্য করবেন না । আমার একটু চ্যাত আগে থাইকাই ছিল ।
আমিও নাছোড়বান্দা হৈয়া যাই । আব্বা কাঁথা-বালিশ নিয়া মসজিদে চৈলা যাইতে চান । এইসব বন্ধ না হৈলে তিনি বিয়াতে নাই । আম্মা বকাবকি করেন আমারে , আব্বারেও বুঝানের চেষ্টা করেন । ওরা পুলাপান মানুষ শহর বন্দরে থাকে ওগো লগে এত খুঁটিনাটি টোকাইলেতো চলবো না ।
বিয়াতে পুলাপাইন একটু আনন্দ করবো । একটু চুপ কৈরা থাকেন না । বুঝানো যায়না আব্বারে । আমিও কুনো ছাড় দিই না । খালাতো মামাতো ভাইগো কথায়ও না ।
একটু পাওয়ার অনুভব করি মনে । আব্বা এখন নিজেই চৈলা যান বাইরে । আগে হৈলে আমারে বাইর কৈরা দিতেন ঘাড় ধাক্কা দিয়া । পরদিন ফজরের সময় অবশ্য আমার যাইতেই হয় । মসজিদে গিয়া আব্বার কাছে মাফ চাইয়া বুঝাইয়া নিয়া আসি তারে ।
আম্মা ফুফুগো যন্ত্রণায় পারলাম না জিদ ধৈরা রাখতে । তবে পুরাপুরি যে কিছু করতে পারি নাই তাও না । অন্তত আমার অবস্থানতো বুঝানো গেছে তারে । আমিও যে ফালাইয়া দেয়ার মত প্রতিপক্ষ না তাতো বুঝছে লুকে ।
মামাতো বৈন লাকি শহরে ইশকুলে পড়ে ।
মেট্রিক পরীক্ষা দিছে এইবছর । রেজাল্ট এখনো বাইর হয় নাই । আমি যেইকথাই কৈ লাকি হাসতে হাসতে লুটাইয়া পড়ে । আমার ভাল্লাগে দেখতে । আমিও ইচ্ছা কৈরা হাসির কথা বানাইয়া বানাইয়া কই ।
সোজা কথারে বেঁকা কৈরা কৌতুক কৈরা কই । বিয়ার আগেরদিন রাইতে আমার মনে একটু কুচিন্তা আসে । কিন্তু সাহস হয় না । শহরের মাইয়া । শেষে কুন বিপদে ফালায় ।
রাইতের দুইটা তিনটার দিকে চাইর পাঁচ মামাত খালাত ভাইবোন মিলা রেললাইনে যাই হাওয়া খাইতে । চান্দের আলোতে রেললাইনডারে আরো সুন্দর লাগে । আমার মনে কুচিন্তা ঢুইকা যাওনে অত মনোযোগ থাকে না চাইরপাশের সুন্দর দৃশ্যের দিকে । বন্ধুবান্ধবগো কাছে বিয়ার রাইতের অনেক ডেয়ারিং আকামের কাহিনী শুনছি । কিন্তু আমার খালি ডর লাগে ।
কথায় বার্তায় আমি লাকির কাছে ঘেঁষতে চাই । খেয়াল করে কি করে না বুঝি না । লাকি খালি হাসতে হাসতে লুটাইয়া পড়ে । হঠাৎ আমার খালেদার কথা মনে হয় । জীবনে ঐ হাসি আরেকবার দেখলে আমি মইরাই যামু ।
দরকার নাই আমার ইচ্ছা কৈরা লাত্থি খাওনের । ডাকতরের ঔষধ ফালাইয়া দিছি । আর তাছাড়াও গেরামের মাইয়াগোরে নাহয় টুকটাক বুঝি । শহরের মাইয়ারা আমার কাছে পুরা নতুন । হয়ত হাসাহাসি করতাছে ঠিকই কিন্তু পরে এমন কিছু কৈরা বইব আমার গলায় দড়ি দেওন ছাড়া কুনো উপায় থাকবো না ।
খালেদার বেঁকা হাসির কতা মনে করতে করতে তাই আমি দইমা যাই । লাকি বারবার জিগায় চুপ মাইরা গেলেন ক্যান ভাইয়া ? আমি মজার কথা কওনের চেষ্টা করি । পারি না । কিছুক্ষণ পর আবার চুপ মাইরা যাই ।
বিয়ার পর বাড়ীডা খালি হৈয়া যায় হঠাৎ কৈরাই ।
একই দিনে মামা খালারা সব চৈলা যান । কান্দন চৈলা আসে আমার । কয়েকদিনে অনেক মজা করছি । একডা মায়া পইড়া গ্যাছে সবার উপরে । এত বড় হৈয়াও তাই কানতে শরম করি না ।
লাকি বারবার কৈরা বৈলা যায় , আমাগো বাসায় কিন্তু যাইয়েন । আইচ্ছা যামু জবাব দিই । কুচিন্তা থাকেনা মনে । নিজের উপর একটু ভালো লাগে । নফসের উপর মায়ার জয় হৈছে ।
কুনোরকম অন্য উদ্দেশ্য ছাড়াই লাকির চৈলা যাওয়াতে খারাপ লাগে আমার । খালাতো ভাইবোনডির চৈলা যাওয়াতে খারাপ লাগে । আম্মা স্বান্তনা দেন আমারে ।
নতুন ভাবীর পর্দার বহরের কারণে তার চেহারাই দেখি আমি দুই সপ্তাহ পরে । আমাগো অনেক লুকের ঘর ।
অনেকডি ভাইবোন । পর্দা করতে গেলে সারাদিন ঘরের মইধ্যে বুরখা পইড়া বৈসা থাকতে হৈব । আম্মার বয়সতো কম না । তাই ঘোমটা খুইলা ঘরের কাজে হাত লাগান ভাবী কয়েক দিনের মইধ্যেই । ফর্সা একটা রোগাপাতলা মেয়ে ।
বাইশ তেইশের মত বয়স । আমারেও তাই ভাইয়া বৈলা ডাকেন । কিন্তু দুশ্চিন্তা লাগে আমার । ভাবীরে সুস্থ্য মনে হয় না । কিছু একটা রোগ আছে মনে হয় ।
ভাবীর পরিবার নিয়া তেমন বেশি কিছু জানি না । আব্বা একাই সবকিছু ঠিক করছেন । বিয়ার অনুষ্ঠানের দিনে একবার মাত্র গেছি ঐ বাড়ি । এক্কেবারে বিলইন্যা বডারের কাছে । ছাগলনাইয়া থাইকাও পরায় একঘন্টার পথ ।
কেমনে জানমু কি অবস্থা । খোঁজ নিতে নিতে খবর পাই । ভাবীর কলমা পড়ানো হৈছে যে বাড়ীতে সেইটা উনার ফুফুর বাড়ী । খোঁজ নিয়া যা জানি তাতে মিজাজ আমার তিরিক্ষি হৈয়া যায় । এই মেয়ের বিয়া হৈছিল আরেকবার ।
তিনমাস ঘরও করছে । রাগে ইচ্ছা করে মাথার চুল টাইনা ছিঁড়ি । আব্বার কাছে কৈলে সেই একই জবাব । আল্লাহর শোকর কর । আমি এখনো মৈরা যাই নাই ।
যদ্দিন আমি বাঁইচা আছি আমার কথার উপরে কথা কবি না । শোকর আলহামদুলিল্লাহ বৈলা পইড়া থাক । বড় ভাইর কাছে বৈলাও কুনো গুরুত্ব পাই না । আল্লাহপাক যা করেন ভালোর জন্য করেন । আল্লাহ নিশ্চয়ই এর মইধ্যে কুনো খায়ের লুকাইয়া রাখছেন ।
সেইটা নিয়া প্রশ্ন করা মাখলুকাতের কাম না ।
বিয়ার ঝামেলায় ট্যাকা পইসার হিসাবের কথা ভুইলাই গেছিলাম । য্যামনে খরচ করছি এখনতো হিসাব মিলাইতে ঝামেলা হৈয়া যাইব । তয় অত দুশ্চিন্তা লাগে না আমার এইটা নিয়া । ছুডকালে বাজারে থাইকা আইসা আম্মার কাছে হিসাব দিছি কত ।
আলু কিনছি দশ ট্যাকার, আলুওয়ালারে দিছি দশ ট্যাকা । এই গেল দশ দশ বিশ ট্যাকা ।
--------------------------------------------------
কওমি হুজুরের এক হাত ঘুরা আত্নকাহিনী-১২
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।