হিন্দু না ওরা মুসলিম ঐ জিজ্ঞাসে কোনজন, কান্ডারি বলো ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা'র প্রশ্ন হচ্ছে যে, ব্লগার এবং অনলাইন একটিভিস্টরাই কেনো সবার আগে, সবচেয়ে জোরে গর্জে উঠলো কাদের মোল্লার রায়ের বিরুদ্ধে? তাদের কেন্দ্র করেই কেনো সারাদেশের মানুষ একত্রিত হলো, নতুন করে আশায় বুক বাধলো? প্রশ্ন হচ্ছে যে, রায় ঘোষনার সাথে সাথে কেনো ব্লগ এবং ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় উঠলো? কেনো সবাই কর্মসূচী চাইলো, কেনো অল্প সময়ের মধ্যে একের পর এক ইভেন্ট ঘোষনা হলো, কেনো প্রথম ইভেন্টটিকে কেন্দ্র করেই সবাই একজোট হওয়া শুরু করলো? কেনো ব্লগার এবং অনলাইন একটিভিস্টরা এইখানে ভ্যানগার্ডের ভুমিকায় আবির্ভুত হলো? কিভাবে?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনার জন্যে অত্যন্ত সহজ হবে, যদি আপনি ব্লগ এবং ফেসবুকের বাঙলা কমিউনিটির অংশ হয়ে থাকেন। কারনটি নৈতিক এবং আদর্শিক। বাংলাদেশের অনলাইন কমিউনিটির ইতিহাসে অনেক আগেই রাজাকার শব্দটি একটি ঘৃনিত নাম। যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন, রাজাকারদের সংগঠন জামাত-শিবির ব্লগ এবং ফেসবুকের গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীকতার কারনে অনেক আগেই একঘরে হয়ে গেছে। বাংলাদেশের অনলাইন প্রজন্ম তাদের বয়কট করেছে।
অনলাইনে বাঙলা ভাষার শুরুর দিকটায় প্রবল প্রতাপে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো এই গোষ্ঠিকে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ট ব্লগাররা কিভাবে প্রতিহত করেছে, সমাজচ্যুত করেছে তার ইতিহাস ব্লগের পাতায় পাতায় লেখা আছে। ব্লগার এবং অনলাইন একটিভিস্টরা নানান মতের নানান দলের মানুষ। তাদের নিজেদের মাঝে বিভিন্ন ইস্যুতে অনেক বিভেদ আছে। তবে রাজাকার ইস্যুতে অনলাইন বাঙলার যে ঐক্য সেই ঐক্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ব্লগ সামহোয়ারইন ব্লগ, যেই ব্লগের সদস্য সংখ্যা লাখেরও অধিক, যেখানে বেশ কয়েক বছর যাবৎ ব্যাজ লাগানো "যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই।
আমারব্লগএ যান, সবসময়ই সেখানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিতে কিছু না কিছু হচ্ছে। নাগরিক ব্লগে যান, সচলায়তনে যান, যান চতুর্মাত্রিকে সব জায়গায় একিরকম চিত্র দেখতে পারবেন। ব্লগ গুলার মধ্যে পারস্পরিক মত বিরোধ আছে, ব্লগারদের মধ্যে আছে, ব্লগ থেকে জন্ম নেয়া ফেসবুক সেলিব্রেটিদের মাঝে আছে। কিন্তু এই একটা জায়গায় সবাই একমত। এবং এর প্রতিফলন দেখা যায় ব্লগগুলোর নীতিমালায়, যেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জামাত-শিবিরএর জন্যে নো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হয়।
এর রাজাকার বিরোধী এই ব্লগিয় ঐক্য তৈরি হয়েছে দীর্ঘ সময়ের নানান ব্লগিয় মত প্রকাশ, মত বিনিময়, তর্কা তর্কি এবং আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। এই ধারা অব্যাহত আছে ব্লগ থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পরা নানান গ্রুপ ও পেজএর কার্যক্রমের মাঝে।
তাইলে শাহবাগে এই যে ব্লগার এবং অনলাইন একটিভিস্টদের আবেগ, উচ্ছাস এবং আদর্শ ছড়িয়ে পরে পুরো শাহবাগটা দখল করে এখন যে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে যাচ্ছেম ব্লগার-অনলাইন একটিভিস্টদের দাবিটুকু কি যাবেনা? ঠিক যেভাবে আমরা ব্লগে, ফেসবুকে যুদ্ধাপরাধীদের দোসরদের বয়কট করেছি, জামাত শিবির রাজাকারদের সমাজচ্যুত করেছি লড়াই করে, আন্দোলন করে এবং আইন করে ঠিক সেই দাবিটাই আমরা চাই। বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে সকল যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল তথা জামাত-শিবিরকে বয়কট কর তে হবে। নৈতিক ভাবে, এবং আইনগত ভাবে।
আইন করে জামাত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। এবং অবশ্যই, কাদের মোল্লার ফাঁসি দিতে হবে। আমরা মেহেরুননেসার রক্তের সাথে বেইমানী মেনে নেবোনা। আমরা জাহানারা ইমামের সকল সাহস, আদর্শ আর দৃঢ়তা এতোদিন একটু একটু করে জমিয়ে রেখেছি ব্লগ আর ফেসবুকের পাতায় পাতায়। এখন আমরা তা সারা দেশে ছড়িয়ে দেবো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।