আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাজাই এর ম্যানুফেস্টো আর ঈশপের গল্প।

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি

গল্পটা ছিলো এমন - গাছের ডালে কাক বসে আছ , মুখে মাংসের টুকরা। নীচ দিয়ে হেটে যাওয়া একটা শিয়ালের সেই মাংস খেতে খুবই লোভ হলো। সেই শিয়াল কাকের গানের গলার প্রশংসা শুরু করলো। আফসোস করতে লাগলো - আহা, একবার যদি সেই মধুর গানের গলার আওয়াজটা একটু শুনতে পারতাম। বোকা কাক সেই চাতুরীতে ভুলে গিয়ে কর্কশ স্বরে কা কা করে ডেকে উঠলো।

এতে মুখের থেকে মাংশের টুকরাটা পড়ে গেল - আর শিয়াল তৃপ্তি করে খেয়ে নিলো। জামায়াতের নির্বাচনী মেনুফেস্টু দেখে এই গল্পটাই মনে পড়লো। মুক্তিযুদ্ধাদের দূর্বল আর বোকা ভেবেই একটা টোপ দিয়েছে। রাজাকার-আলবদর যখন মুক্তিযুদ্ধাদের সরকারী টাকায় হজ্বের লোভ দেখায় তখন মনে হয় শিয়ালের বুদ্ধিও মনে হয় এর চেয়ে বেশী হবে। এরা বলছে নির্বাচিত হলে মুক্তিযুদ্ধাদের সরকারী টাকায় হজ্বে পাঠাবে।

এতে এক ঢিলে তিন পাখি মারার একটা ফন্দিও দেখা যাচ্ছে। প্রথমত এরা নিজেরা সৌদী সরকারের পয়সায় ফ্রী হজ্ব করলেও মুক্তিযুদ্ধাদের সরকারের টাকায় হজ্বে পাঠিয়ে কৈ এর তেলে কৈ ভাজার একটা সুযোগ নেবে। দ্বিতীয়ত মুক্তিযুদ্ধাদের আর্থিক ভাবে ছোট করে দেখানোর একটা ইঙ্গিতও এখানে আছে। আর তৃতীয়ত ধর্ম নিয়ে রাজনীতির মধ্যে মুক্তিযুদ্ধাদের ধর্মীয় অনুভূতির সুযোগ নেবার একটা পাঁয়তারা বটে। এবার দেখি বাজাই নির্বাচিত হলে আর কি কি করবে: ১) ধর্মবিরোধী প্রচারণার বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান রেখে আলাদা ব্লাসফেমি আইন প্রণয়ন ( পাকিস্থানকে অনুসরন করার আদিম প্রবৃত্তি থেকে মুক্ত হবে এই দল।

ইসলামের কোথাও ব্লাসফেমী বিষয়ে কোন আইন করার কথা নেই, অতীতে বৃটেনে খৃস্টানরা এই আইন করে রাজতন্ত্রকে সহায়তা করেছে। মুক্তচিন্তার পথ রুদ্ধ করার এই ধরনের আইন সভ্য সমাজের সাথে যায় না) ২) সন্ত্রাস নির্মূল ও দুর্নীতি দমন, (হাসতে হাসতে চেয়ার থেকে পড়ে যাবার দশা। ৫ বছর ক্ষমতায় থেকে নিজের দলের ৬৭% নির্বাচিত প্রতিনিধির নামে যে দলের দূর্নীতির অভিযোগ আছে তারা দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে। প্রশ্ন হলো সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী বিরুদ্ধে জামায়াত কি ব্যবস্থা নিয়েছে? তা ছাড়াও লক্ষ্যনীয় যে, এই সরকারের সময় যে কয়টা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গন্ডগোল হয়েছে - তার একটা পক্ষ ছিলো শিবির। অন্য পক্ষে ছাত্রদল বা ছাত্রলীগ।

একদল সন্ত্রাসীকে টেনিং দিয়ে পরিকল্পিত ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্টান দখলের জন্যে যারা বছরের পর বছর কাজ করছে - এরা যদি বলে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কাজ করবে, তখন মনে হয় পাড়ার নেড়ি কুত্তাটাও হেসে গড়াগড়ি যাবে। সবচেয়ে বড় কৌতুক করেছে সাবেক আলবদর প্রধান নিজামী এই বলেন, "শরিক দলের কেউ সন্ত্রাস বা দুর্নীতি করলে প্রয়োজনে তার দল প্রতিবাদী ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। " এখানে বলা যেতে পারে - বাচ্চা লোক তালিয়া লাগাও। নিজেই যেখানে বিগত সরকারের দূর্নীতিন সাথে নিজেকে জড়িত করে জামিনে আছে - সে বলে কিনা প্রতিবাদী হবে। এইটা হয়তো জোক অব দ্যা ইয়ার হবে।

আরো অনেক মজার মজার কথা আছে রাজাকারদের এই দলে। তার মধ্যে সবচেয়ে মজারগুলো উপরে বলা হলো। এক মুহূর্তের জন্যেও বিশ্বাস করার সুযোগ নেই যে - জামায়াত মুক্তিযুদ্ধকে মেনে নিয়েছে। তারপও কেন মুক্তিযুদ্ধাদের প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছে। এর কারন হলো বিগত সরকারের সময় অনেক মুক্তিযুদ্ধা তাদের সাথে কাজ করেছে সরকার পরিচালনার জন্যে।

এতে এরা লোভী হয়ে গেছে - ভাবছে টোপ দিলে যদি কিছু ধরা যায়। তা ছাড়াও নতুন নির্বাচনী আইন অনুসারে গঠনতন্ত্রের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের কথা উল্রেখ করতে বাধ্য হওয়াকে কিছুটা যৌক্তিক করার চেষ্টাও বটে। বিষয়টা হলো এমন - এক বুড়ি হটাৎ পা পিছলে পড়ে যায়। পড়েই আশেপাশে তাকিয়ে দেখেনিলো কেউ দেখেছে কিনা। যখন দেখলো কেউ দেখেনি - তখন কোমড়ের কোচা থেকে পান বের করে - বললো বইরাম যখন পানটা খাইয়াই লই।

জামায়াতকে নির্বাচন কমিশন থাপ্পড় দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে বাধ্য করেছে - এখন ওরা সেই থাপ্পড় নিয়েও একটা বানিজ্যে করার চেষ্টা করছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.