আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্ম নিয়া চুলকানি

কাগু ক্যান স্টার্ট অ্যা ফায়ার ইউজিং জাস্ট টু আইস কিউবস

আমার ধর্ম নিয়া ব্যাপক চুলকানি আছে । যদিও বেশিরভাগ সময়ই সেটা লুকাইয়া রাখার চেষ্টা করি, জানের ভয়ে বা শান্তির জন্য, তবুও অনলাইন প্লাটফর্মের মত খোলা এবং বেনামি মিডিয়াতে অথবা কোথাও সুবিধাজনক পজিশনে সেটা বেরিয়ে আসে । আজকাল অবশ্য এইসব চুলকানিগুলাও জয় করার চেষ্টায় আছি, তবু পেরে উঠছি না । প্রায়ই মুখ ফসকে দুচার লাইন বেরিয়ে যায় । নিজে একসময় ব্যাপক ধার্মিক ছিলাম বইলা হয়ত মিজাজ গরম হয় আরো বেশি ।

প্রায় চার বচ্চরখানেক নিয়মিত চার/পাঁচ অক্ত নামায মসজিদে জামাতে পড়া টাইপের মুল্লা ছিলাম । একদিক থেকে দিনগুলা খারাপও ছিল না । নিজেরে একটু নুরানি নুরানি মনে হৈত । সক্কালে ঘুম থেকে নিয়মিত উঠা হৈত । অনেক বেনিফিট ছিল ।

ধর্ম নিয়া চুলকানি শুরু হয় আমার অবজেকটিভ মানবতা সংক্রান্ত চিন্তাভাবনা শুরু করার পর থেকেই । নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যদি একই মানব-প্রজাতি হয়, তাইলে ব্যাবসায়িক প্রয়োজন ছাড়া, সক্ষমতা-অক্ষমতার বিভক্তি ছাড়া শুধু লৈঙ্গিক কারণে দুই গুরুপের মইধ্যে চাকর মনিব সম্পর্ক এমনকি দায়িত্ব-কর্তব্যবোধের ডিক্রি দেয়াটাও একটা বিরাট আবালামি ছাড়া আর কি হৈব । এমন না যে দুই গুরুপের মধ্যে কোনরকম সহযোগিতার সম্পর্কের বিপক্ষে আমি, মাগার সেটা কোথাকার কোনো মাতব্বরের ইচ্ছায় হবে এইটা মানা যায় না । ধর্মগুলার একটা বিশাল অংশ জুড়ে আছে জীবন বিধান । কি করতে হবে, কি করা যাবে না, কোনদিকে ফিরা শুইতে হবে কোনদিকে ফিরা মুততে হবে , কি খাওয়া যাবে কি যাবে না এইজাতীয় হাবিজাবি ।

কিন্তু বেশিরভাগ ধর্মই হাজার বছরের বেশি পুরাতন বলে লয়া যুগের লয়া হাওয়ার সাথে তাল মিলাইতে গিয়া যুগে যুগে কাঁচির আঘাত যায় নাই এমন ধর্ম নাই । সে খুদার কথা হোক আর খুদার মেসেন্জারের কতা হোক প্রয়োজনে মানুষ কাঁচি চালিয়েছে সবকিছুর উপরই । তবে ব্যাপারটাতে কিঞ্চিৎ ঘাপলা থাইকা যায় । ঘাপলাটা এক্কেবারে ধর্মের অস্তিত্বের যৌক্তিকতা নিয়া । এক বৌদ্ধ ধর্মের কয়েকটা ডেনোমিনেশন বাদ দিলে, মোটামুটি সব ধর্মই মূলত প্রবল-পরাক্রমী ঈশ্বরের দালাল দাবীকারির মাধ্যমে শুরু ।

ছুটখাট রাজা-রাজড়ার দালাল হৈলে না হয় দুএকটা বিচ্যুতিকে স্বাভাবিক ধরে নিয়া মূল কথায় আসা যায় । কিন্তু এক্কেবারে দোজাহানের মালিকের দালাল হৈয়া মালিকের সাহায্য নিয়া যে আইন নিয়া আসা, তাকে যদি যুগের প্রয়োজনে মেরামত করতে হয় তাইলে ঐটা আবার কিসের বালের দোজাহানের মালিক, এই টিপ্পনি তো তিন বছরের বাচ্চাও কাটতে পারে । তয় মানুষের উদ্ভট ক্ষেমতা আছে মাথার যৌক্তিক অংশটাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ কইরা দিয়া হুর পরীগো সাথে আকাম করনের স্বপ্নে বিভোর থাকার । মাগনা বা নামমাত্র মূল্যে পাওয়ার আশা থাইক্লে কেইবা ছাড়তে চায় । স্বামী-সহ অস্ট্রেলিয়া বসবাসরত বান্ধবীর সাথে কতা হৈতেছিল ।

আমি শুয়রের মাংস খাই এই কথা শুনে আঁতকে উঠল । ইয়াল্লা লিটন, ছিছি , এইটা তো ঠিক না । আমি নিজেও এক্কেবারে পারফেক্টলি সব মাইনা চলতে পারতাছি না ঠিকাছে, কিন্তু দোস এত নিতে নাইমা যাওয়াতো ঠিক না । কালকেও এইগুলা নিয়া কথা হইতাছিল হাসানের সাথে । হাসানরে চিনসসতো ? ঐযে সিটি কলেজের পুলাটা , বেস্ট কোচিং এর ।

ওতো এখন সিডনিতেই আছে । আমাগো পাশের বিল্ডিং এ । ওর চাইনিজ গার্লফ্রেন্ড এর সাথে । কি শয়তান আছিল না পুলাডা । এখন বেশ ধার্মিক হৈয়া গ্যাছে ।

তাবলিগেও যায় মাঝে মইধ্যে । তো কালকে আমার প্রায় পনের ষোল জন মিলা বারে গেছিলাম । শান্তর বন্ধুবান্ধব, হাসান, আমার কয়েটা বান্ধবীসহ । প্রতি সপ্তাহেই একবার দুইবার যাওয়া হয় । মজাই হয় ।

শান্ত অবশ্য হার্ড কিছু খায় না । সবসময়ই বিয়ার । আমি কালকে টেকিলা ট্রাই কইরা দেখলাম । জটিল জিনিস না ? খাইছিস কখনো ? যাই হোক হাসান কালকে কইতেছিল, এইসব বিধর্মীদের দেশে থাকতে থাকতে আমাগো ঈমান আসলে দুর্বল হৈয়া গ্যাছে । এরা ভোগবাদী, বেহায়া, দুনিয়াবাদী ।

কিন্তু এইভাবেতো চলবো না । আল্লার কাছেতো জবাবদিহি করন লাগবো । মরার কথা তো চিন্তা করন লাগবো । ওর কথাগুলা শুইনা ভাবলাম , ঠিকইতো । দোস আর খাইসনা পর্ক টর্ক ঐসব ।

তিনমাসের আগের কথা হিসাবে স্মৃতিভ্রষ্টতার অংশগুলা বাদ দিলে মোটামুটি এইরকম কথোপকথনই হৈছিল । এত বেশি কিলিয়ার যে নিজের মন্তব্য দেয়ার তেমন কোনো প্রয়োজন দেখিনা । সব ধর্মপুত্রই একটা না একটা লেভেলে সেই ভন্ডই । কোরানে কি আছে সেটা কেউ দেখে না, তার কি দরকার ঘুরাইয়া প্যাঁচাইয়া কোরান থেকে সেটা বাইর করার চেষ্টাতেই সবাই রত । ভন্ড ধার্মিকদের অবশ্য আমার ভালই লাগে ।

এরা মূলত বড় কোনো ধরণের থ্রেট পোজ করে করে না । বরং প্রকৃত ধার্মিকদের নিয়াই সমস্যা । তারা মূর্তি ভাঙতে যায়, সিনেমাহল উড়াইয়া দিতে যায়, বেশরিয়তী আদালত মানতে চায় না । এদের নিয়া আবার ভন্ড ধার্মিকদেরও সমস্যা । তাদের অপ্রিয় জায়গাটা বারবার এরা লাইমলাইটে নিয়া আসে ।

মানুষের যে অন্তর্গত অন্ধকার, সেখানে অসহায় হয়ে , বৃহৎ প্রশ্নের মুখোমুখি কেউ অস্তিত্বের উদ্দেশ্য নিয়া কোন সদুত্তর না পেয়ে শেষে যেনতেন একটা হুরের দালালের পিছনে লাইন দিয়া লুল ফালানোতে মত্ত হইলে সেটা নিয়া হাসাহাসি করলেও , মৌলিক কোনো সমস্যা তাতে দেখি না । লুল ফালানোর অধিকার ছেলে-বুড়া কালো-সাদা সবারই সমান । কিন্তু আসেন তিনদিন লাগাইয়া আসি জাতীয় কথাবার্তা শুনলে .....। বৈদেশে অস্তিত্বের সংকট থেকে মূল-সন্ধানী অনেককেও দেখি টাক্কু মাথায় টুপি দিয়া নুরানি হৈতে । পশ্চিমা দুনিয়ার মাইনষের ট্যাক্সের টাকায় বৃত্তি নিয়া নিজে প্লাস পরিবারের সবার খরচ চল্লেও, তাদের বেলেল্লাপনা ধর্মহীনতা নিয়া তাদের দেশেই মসজিদে মসজিদে লেকচার চলে ।

এরা আবার নিজস্ব এছলামি দেশের সমালোচনা করতেও ছাড়ে না । কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বের সামাজিক বিশৃঙ্খলার দায় যেখানে তাদের ধর্মহীনতা , সেখানে তাদের নিজ দেশের সামাজিক বিশৃঙ্খলার দায় কিন্তু ধর্মসংক্রান্ত কিছুর না ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.