আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রোমান সভ্যতার গোড়ার কথা।

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ

ইতালির মানচিত্র। এখানেই এককালে গড়ে উঠেছিল রোমান সভ্যতা। রোমান সভ্যতার বিস্তার ছিল খ্রিস্টপূর্ব ৮০০ থেকে আরম্ভ করে ৪র্থ খ্রিস্টাব্দ অবধি।

ঐ সময় ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা ও ভূমধ্যসাগরের পূর্বাঞ্চল ওদের শাসনাধীন হয়েছিল। কী ভাবে ক্ষুদ্র এক লাতিন জাতিসত্ত্বা হয়ে উঠেছিল প্রায় অর্ধেক পৃথিবীর ভাগ্যনিয়ন্তা - তা মানবসভ্যতার ইতিহাসে এক বিস্ময়কর অধ্যায়ই বটে। খ্রিস্টপূর্ব ৭৫০। দক্ষিণ ইতালির উপদ্বীপে প্রায় ৫০টি মতো নগররাষ্ট্র গড়ে তুলেছিল গ্রিকরা। ইতালির উত্তর দিকটাকে বলা হয় তুসকানি।

ওখানে এটরুসকান নামে এক জনগোষ্ঠীকে এসে বসতি গড়ে তুলেছিল। গ্রিক ঐতিহাসিক হিরোডটাসের মতে- এটরুসকানরা গ্রিকদের মতো ইন্দোইউরোপীয় ছিল না, বরং ছিল নিকট প্রাচ্যের। তবে কারো কারো মতে এটরুসকানদের সংস্কৃতি ছিল মাইসেনীয় গ্রিকদের মতই। তেমনটা হওয়া বিচিত্র নয়। ইতালির উত্তরে এটরুসকানরারা ১২টি নগর গড়ে তুলেছিল।

দক্ষিণে ছিল অসংখ্য গ্রিক ট্রাইব। এটরুসকানদের সমাজে ছিল অভিজাতদের শাসন। ভারি পরিশ্রম করত তারা; ছিল বাস্তববাদী- বিমূর্ত চিন্তার ধার ধারত না গ্রিকদের মতো নয়। যা হোক। তিবর নদীটা মধ্য ইতালিতে।

এর উত্তরেই ছিল এটরুইয়া অঞ্চল। এটরুসকানরা ওখানেই রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করেছিল। এটরুসকানরা তিবর নদী পেরিয়ে দক্ষিণে গিয়েছিল আরও পরে। ৬০০ খ্রিস্টপূর্বর দিকে। ২ ট্রয়যুদ্ধের কথ আমরা জানি।

বীর এনিয়াস ছিলেন ট্রয়ের পক্ষের লোক। ট্রয়যুদ্ধের পর পশ্চিমে ( ইতালির দিকে )চলে এসেছিলেন এনিয়াস। ভর্জিলের “এনেইদ” মহাকাব্যে সেসব কথা লেখা আছে। তিবর নদীর দক্ষিণে এই এনিয়াস-এর বংশধরোই গড়ে তুলেছিল লাতিন গোষ্ঠী। তিবর নদীর দক্ষিণপাড়ে লাতিনরা গ্রাম গড়ে তুলেছিল।

তাদের রাজা ছিল নুমিতর। নুমিতরের মেয়ের নাম ছিল রেহা সিলভিয়া। ভেস্টা ছিল লাতিনদের উনুনের দেবী। রেহা সিলভিয়া ছিল ভেস্টান ভার্জিন, মানে দেবী ভেস্টার কুমারী পুরোহিত। সে কালে সত্যমিথ্যা মিলিয়ে ছিল।

কাজেই, রেহা সিলভিয়া দেবতা মঙ্গল দ্বারা ধর্ষিত হয়। কাজেই, রেহা সিলভিয়ার যখন রোমুলাস ও রেমুস নামে দুটি ছেলেরা হল তখন তাদের বলা হল অর্ধ-পবিত্র। যাহোক। রাজা নুমিতরের এক ভাই ছিল। সে ছিল লোভী আর নিষ্টুর।

সে লোকজন নিয়ে নুমিতরকে জোর করে সিংহাসন থেকে নামিয়ে দেয়। রোমুলাস ও রেমুস বড় হয়ে প্রতিশোধ নিতে পারে-এই ভেবে নতুন রাজা দুই ভাইকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করে। সে কালে সত্যমিথ্যা মিলিয়ে ছিল। কাজেই, নেকড়ে দুধ পান করিয়ে বাঁচিয়ে রাখে রোমুলাস ও রেমুসকে। যাহোক।

পরে, রোমুলাস ও রেমুস বড় হয়ে মাতামহকে রাজ্য ফিরিয়ে দেয়। তবে আরও পরে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ লাগে। রেমাসকে খুন করে বসে রোমুলাস! স্মরণ করি, মঙ্গল দ্বারা ধর্ষিতা হয়েছিল রোমুলাস ও রেমুস-এর মা-রেহা সিলভিয়া। কাজেই, রেহা সিলভিয়ার যখন রোমুলাস ও রেমুস নামে দুটি ছেলেরা হল তাদের বলা হল অর্ধ-পবিত্র। (উপকথায় এক ধরনের যুক্তির কাঠামো থাকে।

যেটি আবিস্কার করেছিলে ফরাসী কাঠামোবাদী নৃতাত্ত্বিক ক্লদ লেঢি স্ত্রাউস। ) তো, দু ভাইয়ের মধ্যে খুনিখুনির কারণ কি ছিল? ১/ কে রোমের রাজা হবে। ২/ নগরের নামকরণ। যা হোক। রোমুলাস থেকে রোম।

রোম থেকে রোমান। ভাষা লাতিন। তিবর নদীর পাশে সাতটি পাহাড়। তার মধ্যে পালাটাইন পাহাড়ই সেরা। সেই পালাটাইন পাহাড় ঘিরে গড়ে উঠল রোম নগর খুনি রোমুলাস-এর নামে।

সময়টা? ধরা যাক- ৮০০ খ্রিস্টপূর্ব । রোমের জনগনকের শাসন করা হত ফোরাম রোমানুম থেকে, ওটাই ছিল আদি রোমানদের শাসন ক্ষমতার কেন্দ্র। রোমুলাস এর উত্তরাধিকারী ছিলেন রাজা নুমা পমপিলিয়াস। রোমের লোকে তাঁকে বলত পবিত্র রাজা । রোম নগরের অনেক ভবন নির্মান করেছিলেন রাজা নুমা পমপিলিয়াস।

মনোরম রেজিয়া প্রাসাদ থাকতেন রাজা নুমা পমপিলিয়াস। ভেস্টাল কুমারীর মন্দিরও নির্মান করেছিলেন ওই পবিত্র রাজা। সে কালে সত্যমিথ্যা মিলিয়ে ছিল। কাজেই একবার রোমানদের রাজ্যে মেয়ের সংখ্যা গেল কমে। তিবর নদীর দক্ষিণে ছিল অসংখ্য লাতিন ট্রাইব।

তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল সাবিনি। রোমানরা তখন এক উৎসবের আয়োজন করে। রোমানরা ছল করে সাবিনিদের গোত্র থেকে কুমারীদের চুরি করে। এভাবে সাবিনিদের সঙ্গে রোমানদের সখ্যতা গড়ে ওঠে। তখন বলছিলাম যে এটরুসকানরা তিবর নদী পেরিয়েছিল আরও পরে।

যখন এটরুসকান রাজনৈতিক ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ এর দিকে তারা রোম দখল করে নেয়। তারপর রোম শাসন করতে থাকে। খ্রিস্টপূর্ব ৫০৯। রোমের শেষ এটরুসকান রাজা ছিলেন লুসিয়া পারকুইনিয়াস।

লুসিয়া পারকুইনিয়াস ছিল স্বৈরাচারী। সাবিনিদের সঙ্গে মিলে রোমানরা লুসিয়া পারকুইনিয়াসকে উৎখাত করে ছিল। তারপর গড়ে তুলে রোম রিপাবলিক। তখন বলেছিলাম যে- খ্রিস্টপূর্ব ৭৫০। দক্ষিণ ইতালির উপদ্বীপে প্রায় ৫০টি মতো নগররাষ্ট্র গড়ে তুলেছিল গ্রিকরা।

ইতালির উত্তর দিকটাকে বলা হয় তুসকানি। ওখানে এটরুসকান নামে এক জনগোষ্ঠীকে এসে বসতি গড়ে তুলেছিল। তিবর নদীর দক্ষিণে ছিল লাতিন ও সাবিনি ট্রাইব। কাজেই রোমান সভ্যতার গোড়ায় ছিল গ্রিক, এটরুসকান, গ্রিকউদ্ভুত লাতিন ও সাবিনি ট্রাইবগুলির আচারবিশ্বাস,ভাষা, ধর্ম ও সভ্যতাসংস্কৃতি। মনে থাকার কথা।

ভারি পরিশ্রম করত এটরুসকানরা;ছিল বাস্তববাদী- বিমূর্ত চিন্তার ধার ধারত না। গ্রিকদের মতো নয় তারা। পরে, ওই এটরুসকানরাই রোমানদের প্রভাবিত করেছিল। ক্রমশ তথ্যসূত্র: Robin Lane Fox রচিত The Classical World; An Epic History Of Greece and Rome. ওয়েব- Click This Link Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.