দেশ বিরোধী যে কেউ এই ব্লগে ডুকবিনা।
স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ অধ্যাদেশকে সংবিধান পরিপন্থী ও অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। এর ফলে অধ্যাদেশটির মাধ্যমে গঠিত ট্রুথ কমিশন নামে পরিচিত সত্য ও জবাবদিহিতা কমিশনের কার্যক্রম অবৈধ হয়ে যাচ্ছে।
একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মীর হাসমত আলী ও বিচারপতি শামীম হাসনাইনের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার অধ্যাদেশটি অবৈধ ঘোষণা করে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আদিলুর রহমান খান, উন্নয়ন বিকল্প নীতি-নির্ধারণী গবেষণা'র (উবিনীগ) নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আক্তার, আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ডা. দীপুমনি এবং অধিকার'র ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নাসিরউদ্দিন এলান গত ২৫ আগস্ট 'জনস্বার্থে' আবেদনটি করেছিলেন।
রিটকারী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান রায়ের পর সাংবাদিকদের বলেন, "হাইকোর্ট ট্রুথ কমিশন অধ্যাদেশকে সংবিধান পরিপন্থী ও অবৈধ ঘোষণা করেছে। এ পর্যন্ত ট্রুথ কমিশনের করা কোনও কাজের বৈধতা দেয়নি হাইকোর্ট। ফলে কমিশনের এ পর্যন্ত করা কার্যক্রম অবৈধ বিবেচিত হবে। "
তিনি আরও বলেন, "এ কমিশন গঠনের মাধ্যমে আইনের শাসনের ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছিল। বিচারের বিকল্প হিসেবে একে দাঁড় করানো হয়েছিল।
তাই হাইকোর্ট একে সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করেছে। "
এদিকে, অ্যাটর্নি জেনারেল সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করবে।
তবে রায়ের কপি পাওয়ার পর না আগেই আপিল করা হবে- সে বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।
আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানিতে অ্যাডভোকেট তৌফিক নেওয়াজ বলেন, "ট্রুথ কমিশন অধ্যাদেশে দুর্নীতি সংক্রান্ত অপরাধের বিচার নিষ্পত্তির জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে অধ্যাদেশটি প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে। এই বিধান সংবিধান পরিপন্থী।
"
তিনি আরও বলেন, অধ্যাদেশে ট্রুথ কমিশনকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি। ফলে এই অধ্যাদেশে মানুষের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও কাউকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণাসহ অন্যান্য অধিকার ক্ষুণœ করার যে বিধান রাখা হয়েছে তা সংবিধান পরিপন্থী। এছাড়া ট্রুথ কমিশন কাকে ক্ষমা করবে ও কাকে ক্ষমা করবে না সে বিষয়ে 'পিক অ্যান্ড চুজের' বিধান রাখা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট তৌফিক নেওয়াজ বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বিচার বিভাগের কাছে সহায়তা চাইলে বিচার বিভাগ বিভাগ ট্রুথ কমিশনকে সহায়তা করতে বাধ্য বলে অধ্যাদেশের বিধান সংবিধানের মূল কাঠামো পরিপন্থী।
সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় জরুরি প্রয়োজন ও নির্বাচন সংক্রান্ত ছাড়া কোনো অধ্যাদেশ জারি করতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, "ট্রুথ কমিশন অধ্যাদেশ জরুরি প্রয়োজন ও নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ের মধ্যে পড়ে না।
তাই এ অধ্যাদেশ জারি রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার বহির্ভূত। "
তৌফিক নেওয়াজকে শুনানিতে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান।
অ্যাটর্নি জেনারেল সালাউদ্দিন আহমেদ আদালতে বলেন, "ট্রুথ কমিশন অধ্যাদেশ সংবিধান পরিপন্থী নয়। অধ্যাদেশটি জারি করে দুর্নীতিপরায়ণদের একটি সুযোগ দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার মাধ্যমে তাদের মাফ পাওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
তাই এ অধ্যাদেশে অসাংবিধানিক কিছু করা হয়নি। "
গত ৮ জুন রাষ্ট্রপতি স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ অধ্যাদেশ জারি করেন। ওই অধ্যাদেশের আওতায় বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানকে চেয়ারম্যান করে পাঁচ মাস মেয়াদি 'সত্য ও জবাবদিহিতা কমিশন' গত ৩ জুলাই গঠন করা হয়।
দুর্নীতির দায়ে ২ বছরের কম সাজাপ্রাপ্তদের শর্তাধীনে ক্ষমা করে দেওয়ার লক্ষ্যে গঠিত এ কমিশন 'ট্রুথ কমিশন' নামেই পরিচিতি পায়।
এর বৈধতা নিয়ে করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ আগস্ট অধ্যাদেশটিকে কেন সংবিধান পরিপন্থী ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- জানাতে সরকারকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
বিডি নিউজ সূত্র
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।