জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি দমন তাদের সবচেয়ে প্রশংসিত কাজ। রাঘব বোয়াল দুর্নীতিবাজদের জেলে পুরে সরকার ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছে কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়। কিন্তু অধুনা ট্রুথ কমিশন নামে একটি নতুন ধারণা সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
দুর্নীতি একটি ভয়াবহ অপরাধ। পৃথিবীর সব সভ্য দেশে দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দেয়া হয়।
শাস্তির বিধান আছে বলেই দুর্নীতিবাজরা লাগামহীন দুর্নীতি করতে পারে না।
আমরা দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছি টানা ৫ বছর। আমাদের দেশের লোক দুর্নীতিতে সেরা। আমরা সবাই দুর্নীতি করতে অভ্যস্ত। দুর্নীতি যে খারাপ এ বোধটুকুও অনেকের নেই।
দুর্নীতিবাজ ট্রুথ কমিশনের কাছে দুর্নীতি স্বীকার করলে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ ফেরত দিলে মাফ পেতে পারেন। তবে কে মাফ পাবেন, কে মাফ পাবেন না তা কমিশনের এখতিয়ার।
এই ধারণাটি আমাদের বিচার ব্যবস্থার পরিপন্থী। একমাত্র আদালতই একজন নাগরিককে মুক্ত করতে বা শাস্তি দিতে পারে - কোন কমিশন নয়। ট্রুথ কমিশন যদি দুর্নীতিবাজকে শাস্তি দেয়া বা মুক্ত করে দেয়ার ক্ষমতা পায়, তবে তা হবে আদালতের বিকল্প।
এ ব্যবস্থা দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তদের শাস্তিকে ও আদালতের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
একই অপরাধে দু ব্যক্তি দু রকম শাস্তি পেতে পারে না। কোন কমিশন কখনও কোন অপরাধীকে ছেড়ে দিতে পারে না।
ট্রুথ কমিশন ব্যবস্থাতে ব্যাপক দুর্নীতি হওয়ার সুযোগ হবে। ট্রুথ কমিশনে যারা থাকবেন, তারা নিজেরা দুর্নীতির সাথে জড়িত হয়ে পড়তে পারেন।
তারা দুর্নীতি করলে তাদের দুর্নীতির বিচার করবে কে ? তারা যেই চরম ক্ষমতা পাবেন তার অপপ্রয়োগ ঘটবে না তার নিশ্চয়তা কোথায় ?
তাছাড়া পরবর্তী সরকার ট্রুথ কমিশনকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে পারে। ফলে ট্রুথ কমিশন নিজেই হয়ে উঠতে পারে সকল দুর্নীতির উৎস।
চরম ক্ষমতা পেলে কে না দুর্নীতিবাজ হতে চায় ?
আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলে, বাংলাদেশে যাকেই ক্ষমা করা হয়েছে, সে পরবর্তীতে ক্ষমাকারীকেই আগে টার্গেট করেছে। বঙ্গবন্ধু রাজাকার আল বদরদের ক্ষমা করেছিলেন, তার খেসারত তাকে দিতে হয়েছে জীবন দিয়ে। আজও এ জাতি রাজাকার আল বদর ও যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়ছে।
তেমনি দুর্নীতিবাজদের ছেড়ে দিলে তারা আমাদের আরও কত বছর ভোগাবে তা বলে শেষ করা যাবে না। তাই দুর্নীতিবাজদের কোনক্রমেই ছাড় দেয়া যাবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।