বিনোদন প্রিয় লোকের সংখ্যাই বেশি।
আলোচনায় রুমা
তিনি প্রথমে মডেল, পরে অভিনেত্রী আর এখন আবির্ভূত হয়েছেন উপস্থাপক হিসেবে। তিন অধ্যায়ে তিনি নিজেকে সফলভাবে পেশ করেছেন সময়ের তালে লয়ে মিলিয়ে। এর জন্য তাকে পাড়ি দিতে হয়েছে অনেক লম্বা এবং বন্ধুহীন বন্ধুর পথ। পিছলে পড়া যাবে না, লেগে থাকতে হবে- এই প্রত্যয় নিয়ে প্রায় ১০ বছরের পদচারণা লাবণ্যপ্রভা ফারাহ্ রুমার।
সম্প্রতি তিনি নতুন করে আলোচনায় এসেছেন এনটিভির একটি নিয়মিত অনুষ্ঠানে সাবলীল এবং গ্ল্যামারাস উপস্থাপনা শৈলীর দৌলতে। নাজমুল হুদা শাপলার প্রযোজনায় আমারও গাইতে ইচ্ছে করে শিরোনামের ভিন্ন মাত্রার এই সংগীতানুষ্ঠান শুরু হওয়ার পর অনেকেরই মন্তব্য ছিল এটা কি করে সম্ভব। মেয়েটিতো দারুণ মার খাবে। এমন অনুষ্ঠান কেন উপস্থাপনা করতে গেল।
সমালোচকদের এমন তিতকুটে মন্তব্যের পেছনে বেশ জোরালো কারণও ছিল।
কারণটা হলো এমন- প্রথমত এর আগে রুমার কোন উপস্থাপনা অভিজ্ঞতা নেই। দ্বিতীয়ত এটি একটি নিখাঁদ গানের অনুষ্ঠান, যে অনুষ্ঠানে এমনসব শিল্পী আসবে যারা এক কথায় গান বিষয়ে অলরাউন্ডার। মানে গান গাইতে, লিখতে, সুর করতে, বাজাতে- সবই জানে। সেই তাদের সঙ্গে গানের গও না জানা ফারাহ্ রুমা কি করে নিজেকে চালিয়ে নিবেন?
রুমা বলেন, সমালোচকদের কথা বাদ দিন, আমি নিজেও নিজেকে নিয়ে দারুণ দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। একদিকে উপস্থাপনা করিনি অন্যদিকে একটানা নাটক-শুটিং ব্যস্ততা, আরেকদিকে গান সম্পর্কে তেমন একটা জানি নাম, শুনাও হয় না।
তবুও করতে এলাম এই কারণে, উপস্থাপনার প্রতি আমার প্রাচীন দুর্বলতার কারণে। ছোট বেলা থেকে এখনও আমি এই একটি বিষয়ে অনেক বেশি দুর্বল।
হয়তো আজকের উপস্থাপনার সফলতা সেই দুর্বলতারই ফসল। না হলে সফল হওয়ার আর কোন কারণ দিখি না। তবে এটা ঠিক, আমাকে দিয়ে এর কিছুই হতো না, যদি প্রযোজক আমার পেছনে সময় এবং শ্রম ব্যয় না করতেন।
আমারও গাইতে ইচ্ছে করে শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের সফলতার সূত্র ধরে ফারাহ্ রুমা আরও একটি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন।
এটি হলো রান্না বিষয়ক প্রতিযোগিতা। দুই উপস্থাপনার সঙ্গে এখন প্রতিনিয়ত উপস্থাপনার অফার আসছে রুমার ঘরে। বিনীতভাবে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। বলছেন, ভাই আমি মূলত অভিনয়টা করতে চাই।
উপস্থাপনাটা করছি প্রাচীন দুর্বলতার কবলে পড়ে। এখানে আমি নিজেকে স্থায়ী করতে চাই না। উপস্থাপনা করার মতো এত মেধা আমার নেই।
এদিকে উপস্থাপনার উষ্ণতা বুকে নিয়ে অভিনেত্রী ফারাহ রুমা দারুণ ব্যস্ত সময় পার করছেন টিভি নাটকেও। নিয়মিত অভিনয় করছেন চ্যানেল আইর সরাসরি ধারাবাহিক আস্তে আস্তে আস্তে, ইটিভির ধারাবাহিক আজিজ মার্কেট, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, চ্যানেল ওয়ানের চার বায়োস্কোপ এবং এনটিভির আমার বউ সব জানে ধারাবাহিকে।
এ ধারাবাহিকের নিয়মিত শুটিং-এর সঙ্গে আরও কাজ করছেন মোমিনুল ইসলামের রচনায় তাহের শিপনের ঈদের নাটক অন্য এক সুখ, মেজবাউর রহমান সুমনের রেল স্টেশনে শোনা গল্প, ধারাবাহিক জলছবি প্রভৃতিতে। নাটকের খবর এখানেই শেষ নয়, আসন্ন ঈদের ব্যস্ততা চুকিয়ে শিগগিরই দুটি মেগা ধারাবাহিকে অভিনয় করার কথা হয়েছে ফারাহ রুমার।
দুটোতেই তার বিপরীতে থাকছেন ছোট পর্দার চকোলেট হিরো অপূর্ব। এর একটি হলো আরিফ খানের পরিচালনায় জল কন্যা এবং অন্যটি নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুলের ১৪ই মে । কথা চলছে আরও কিছুর।
ঠিক না হলে বলা ঠিক নয়। ওদিকে ছোট পর্দার অন্য অনেকের মতো ফারাহ্ রুমার মনটাও বেশ আঁকু-পাঁকু করছে বড় পর্দায় নাম লিখাবার জন্য।
চুপি চুপি অনেক আগে সে রাস্তাটাও পরিষ্কার করেছিলেন। চেয়েছিলেন বাণিজ্যিক ধারার একটি স্বচ্ছ ছবিতে অভিনয় করে সবার চোখ ধাঁধিয়ে দিবেন। জয় করে নিবেন বাণিজ্যিক ছবিতে ব্যস্ত হওয়ার পথটাকেও, প্রমাণ করবেন ছোট পর্দা থেকেও বড় পর্দায় সফল হওয়া যায়, যদি লক্ষ অটুট থাকে।
রুমার সেই নীরব যাত্রা সফল হয়নি। থমকে গেছে অনাকাঙ্খিতভাবে।
কথা ছিল নায়ক মান্নার ব্যানার কৃতাঞ্জলি থেকে একটি ছবির হিরোইন হওয়ার। এ নিয়ে ছবির চিত্রনাট্য এবং মৌখিক আলাপ সবই সম্পন্ন করে সবার চোখ ধাঁধিয়ে প্রস্থানে গেলেন মান্না। থেমে গেল রুমার নীরব যাত্রা।
রুমা বলেন, ইচ্ছে ছিল মান্না ভাইর মাধ্যমে চলচ্চিত্র নামের অথৈ সমুদ্রে নিজের ছোট্ট ডিঙ্গিখানা ভাসাবো। সে হিসেবে সব কথা চূড়ান্তও হয়েছিল।
হিন্দু ও মুসলমান পরিবারের দুটি পরিবারের ঘটনা নিয়ে ছবিটির স্ক্রিপ্টও তৈরি হচ্ছিল। তার কিছুই হলো না। এতে ধাক্কা খেয়েছি বটে, তবে থেমে যেতে চাই না।
অফারতো কত রকমই থাকে। চলচ্চিত্রটা একটু হিসাব করে করতে চাই। এমন কিছু করতে চাই না, যাতে মানুষ মুখ টিপে টিপে হাসতে পারে। অন্তত চলচ্চিত্রে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।