উদ্দীপক : পৃথিবীর বিভিন্ন পরিবেশে বিভিন্ন জীব বাস করে। আবহাওয়া, জলবায়ু ও অন্যান্য অজীব ও জীব উপাদানের মধ্যে প্রচুর পার্থক্য দেখা যায়। এসব পার্থক্যের কারণেই পৃথিবীজুড়ে স্থানভেদে বিচিত্র সব জীবের বসতি।
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখ :
১. কী নিয়ে বাস্তুতন্ত্র গঠিত? ১
২. জীব উপাদানকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়? তা কি কি? ২
৩. অজীব ও জীব উপাদানের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় বাস্তুসংস্থান চলে। বুঝিয়ে লিখ।
৩
৪. পরিবেশের বাস্তুতন্ত্র একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ একক। উদাহরণের সাহায্যে উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও। ৪
উত্তরমালা :
১. পরিবেশের অজীব ও জীব এই দুটি প্রধান উপাদান নিয়ে বাস্তুতন্ত্র গঠিত।
২. বাস্তুতন্ত্রকে কার্যকরী রাখার জন্য সকল জীব যে ধরনের ভূমিকা রাখে তার উপর ভিত্তি করে এসব জীব উপাদানকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
যথা : র. উৎপাদক রর. খাদক এবং ররর. বিয়োজক।
৩. বাস্তুসংস্থান সচল রাখার জন্য জীব এবং অজীব উপাদান উভয়ই প্রয়োজন। জীব উপাদানের মধ্যে রয়েছে উৎপাদক এবং খাদক। উৎপাদক হচ্ছে সবুজ উদ্ভিদ যারা সূর্যের আলোর সাহায্যে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিজেদের খাদ্য নিজেরা তৈরি করতে পারে। এর উপর বাস্তুতন্ত্রের সকল প্রাণী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। খাদক শ্রেণী সকল প্রাণী উদ্ভিদ থেকে পাওয়া জৈব পদার্থ খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে এবং এদের মধ্যে প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের খাদক আছে যারা একে অপরের উপর খাদ্যের জন্য নির্ভরশীল।
অজীব উপাদানের মধ্যে রয়েছে বিয়োজক যা পচনকারী নামেও পরিচিত। উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃতদেহের মধ্যে এক ধরনের অণুজীব যেমন ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া ক্রিয়া করে। ফলে মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে। ফলে মৃতদেহ ক্রমশ বিয়োজিত হয়ে নানা রকম জৈব ও অজৈব দ্রব্যাদিতে রূপান্তরিত হয় এবং এসব দ্রব্যের কিছুটা ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক নিজের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে এবং মৃতদেহ থেকে তৈরি বাকি খাদ্য পরিবেশের মাটি ও বায়ুতে জমা হয় যা উদ্ভিদ পুনরায় ব্যবহার করে।
এভাবে প্রকৃতির জীব ও অজীব উপাদানের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় বাস্তুসংস্থান চলে।
৪. আমরা জানি, যে কোনো পরিবেশে বাস্তুতন্ত্র মোটামুটি স্বনিয়ন্ত্রিত। প্রকৃতিতে যে কোনো জীবের সংখ্যা হঠাৎ করে বেশি বাড়তে পারে না। প্রতিটি জীব একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে এরা পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। কোনো একটি পরিবেশে বিভিন্ন স্তরের জীব সম্প্রদায়ের সংখ্যার অনুপাত মোটামুটিভাবে অপরিবর্তিত থাকে।
পরিবেশে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটলেও বহুদিন পর্যন্ত প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় থাকে। যেমন একটি উদাহরণের সাহায্যে আমরা বুঝতে পারি যে, একটি বনে বাঘ, হরিণ, শূকর ইত্যাদি বাস করে। এ বনে বাঘের খাদ্য হলো হরিণ ও শূকর। হরিণ ও শূকরের সংখ্যা বেড়ে গেলে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কারণ বাঘ তখন প্রচুর খাদ্য পাবে।
আবার বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে হরিণ ও শূকরের সংখ্যা কমে যাবে। আবার বাঘের সংখ্যা যদি কমে যায় তবে হরিণ ও শূকরের সংখ্যা বেড়ে যাবে। এভাবে হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে একটি এলাকার বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য প্রাকৃতিকভাবেই নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই বলা যায়, পরিবেশের বাস্তুতন্ত্র একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ একক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।