নিজের সম্পর্কে লেখার কিছুই নেই। আমি বাংলাদেশের একজন -নাগরিক, চেষ্টা করছি সুনাগরিক হওয়ার জন্য। আমার ফেইসবুক একাউন্ট: http://facebook.com/kobisaheb এবং আমার ওয়েবসাইট http://mr9.in বল্টু আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। তবে ও নাকি আমাকে বন্ধু বলে পরিচয় দিতেই লজ্জাবোধ করে ও দয়া মায়া করে আমাকে ওর সাথে থাকতে দেয়। একথা বহুবার ও আমাকে সাফ সাফ বলে দিয়েছে।
সুযোগ পেলেই এ কথাই বলে। কিন্তু মুখে যাই বলুক আমরা দুজন একে অপরকে ছাড়া থাকতেই পারি না, এটা দুজনেই জানলেও কেউই কখনো স্বীকার করি না। ওর মতে আমার মত সেকালে ও অকর্মা লোক লোক পৃথিবীতে ২য়টি নেই, সবার কাছে একই কথা শুনতে শুনতে আমার নিজেরও এটাই বিশ্বাস হয়ে গেছে। এখন যদি কেউ বলে আমাকে দিয়ে কোন কাজ ঠিক হতে পারে তাহলে আমি তাকে পাগল ছাড়া অন্য কিছুই ভাববো না। আমার বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে ওর ধারণা আরো খারাপ, আমার সাথে গর্দভ এর বুদ্ধির প্রতিযোগীতা হলে আমি নাকি ৫ মিনিটও টিকতে পারবো না।
আমার নিজেরও আমার সম্পর্কে ধারণা এর চেয়ে খুব একটা ভালো না, কিন্তু তাই বলে গাধার সাথে পারবো না, এটা মেনে নেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। আমি একটা গাধা এর খোজে আছি, আপনাদের কারো এসম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে জানাবেন প্লিজ। একটা গাধা খুজে পেলে ওকে প্রমান করে দেখিয়ে দিব কার বুদ্ধি বেশী।
ওহ আমার নামতো বলা হয় নাই। আমার নাম তনু, আমি বাংলাদেশের কোন এক মফস্বল শহরের অখ্যাত একটা স্কুলের ছাত্র।
ঠিকানা বলা যাবে না সমস্যা আছে, ঠিকানা জানানোর ব্যাপারে বল্টুর খুব আগ্রহ ছিল কিন্তু আমি রাজি হই নাই, কারণ আমরা কোন বিষয়েই একমত হই না। পরিচয় পর্ব তো শেষ হল, আপনাদের আর বিরক্ত করতে চাই না আসল কাহিনীতে ফিরে আসি।
আজ আমার ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে, অবশ্য প্রতিদিনই হয়। কোনমতে হাত মুখ ধুয়ে, ভাত খেয়েই দৌড় দিলাম স্কুলের দিকে। যা ভেবেছিলাম তাই ক্লাশ প্রায় অর্ধেক শেষ, ঢুকে গেলাম ক্লাশে।
স্যার কিছু বললেন না, জানেনই যে বলে কোন লাভ নাই। এটা নিয়েও বল্টুর একটা থিওরি আছে, আমি যেদিন ঠিক সময়ে ক্লাশে আসতে পারবো সেদিন নাকি বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতি দূর হয়ে যাবে। এ কথার উপর ও ৫০০টাকা বাজিও ধরেছে। বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার ব্যাপারে আমার কোন আগ্রহ নাই। কিন্তু ৫০০ টাকা জিতার ব্যাপারে আমার আগ্রহ এর শেষ নাই।
বাজি জিতার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু লাভ হয় নাই। আজ পর্জন্ত সময়মত একদিনও ক্লাশে আসতে পারি নাই, শেষে হাল ছেড়ে দিছি।
ওর পাশে বসে দেখি ও মোবাইলে লুকিয়ে লুকিয়ে কি যেন করতেছে। আমি ওরে জিজ্ঞাসা করলাম, কিরে কি করস ? ও বলল গুগলে কি যেন সার্চ না মার্চ কি যেন করতেছে। আমি বললাম এই গুগলটা কি ? ও বলল এইটা একটা সার্চ এঞ্জিন।
আমি হতভম্ব হয়ে বললাম, ট্রেনের এঞ্জিন, গাড়ির এঞ্জিন এমনকি প্লেনের এঞ্জিনের কথাও শুনেছি কিন্তু সার্চ এঞ্জিনটা কি ? এইটা কি মোবাইলে লাগায় নাকি ? আমাকে দিয়ে যে কিছু হবে না এইটা সম্পর্কে ছোটখাট বক্তব্য দিয়ে ও বুঝানো শুরু হইল। সার্চ এঞ্জিন হইল এমন একটা জিনিস যেটা দিয়ে দুনিয়ার সব তথ্য সম্পর্কে জানা যায়। আমি কিছু না বুঝেই বললাম, তাইলে তো খুবই ভাল। ও গম্ভীরভাবে জিজ্ঞাসা করল কিভাবে খুবই ভাল ? আমি কি বলব না বুঝে বলে ফেললাম, এর মাধ্যমে বন্ধুদের কার বাড়িতে কি রান্না হচ্ছে এটা খোজ নিয়ে বাড়িতে চলে যাওয়া যাবে। আমার সবসময় খাওয়ার কথা প্রথমে মনে আসে।
কোন বন্ধুর বাসায় ভাল রান্না হচ্ছে খবর পেলেই আমি গিয়ে হাজির হই। একবার শুধু খেয়ে যেতে অনুরোধ করলেই হয় আমি সাথে সাথেই আপত্তি না করে বসে যাই। কাহিনীতে ফিরে আসি। আমার উত্তর শুনে বল্টু কিছুক্ষন আমার দিকে কটমট করে চেয়ে রইল এবং দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার বুঝানো শুরু করল গুগল কিভাবে কাজ করে। আমি কিছু না বুঝেই হু হা করতে লাগলাম।
আমার কাছে মনে হচ্ছিল গুগল খুব সম্ভবত ভূগোলের মাসতুত ভাই হবে, নইলে এত কঠিন লাগে কেন ? আরে এই গুগলই যদি বুঝতাম তাহলে কি আর আমি ভুগোলে প্রতি পরীক্ষায় ডাবল গোল পাই নাকি ?
(চলবে...…)
বল্টু সিরিজ, Season 01, Episode 01
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।