কখনো চাই নাই দূরে থাকি...তবু দূরগুলো বারে বারে আসে...
অন্য কোনো উপায়ে যদি প্রতিষ্ঠানকে আঘাত করা না যায় তাহলে প্রতিষ্ঠানের সহযোগী নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করতে হবে এই ন্যায়সংগত আন্দোলনকে আমার অগ্রহনযোগ্য মনে হয়। - অপ বাক
প্রতিষ্ঠান আসলে কি? আরিস্ততলের একটা প্রতিষ্ঠান ছিলো বহুকাল আগে আকাডেমি নামের এই প্রতিষ্ঠানে নাকি জ্ঞানান্বেষী প্রাণগো লেইগা দ্বার অবারিত ছিলো...অর্থের বৈষম্যে সেইখানে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গইড়া উঠে নাই...উঠবোই বা কেমনে...তখন মাত্র'ই দাসপ্রথা বিলুপ্তির আন্দোলন শেষ হইছে, তার কিছুকাল, মানে শ'দুয়েক বা দেড়েক আগে দর্শনের বিষয়বস্তু হিসাবে মানুষ প্রধান হইয়া উঠছে...দেব-দেবী আর কজমোলজি'র বাইরে মানুষের জীবনচরিত নিয়া ভাবতে বাধ্য হইছে আরিস্ততলরাই...প্রাচীন এইসব প্রতিষ্ঠানে জ্ঞানের প্রতি আকাঙ্খা লাগতো ষোলআনা, তয় আনুগত্য থাকতে হইতো। প্রতিষ্ঠানের একটা চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ্য তাইলে পাইলাম...আনুগত্য!
প্রাচীন প্রতিষ্ঠানের এই ধারা কি সমাজের পরিবর্তনশীল গ্রতিপ্রবাহে পাল্টাইছে? আনুগত্য কি প্রশ্নহীন হইছে? আমি ইতিহাসের স্বল্প জ্ঞান নিয়া বাইর করতে পারি না...বরং আলেকজান্দ্রিয়া থেইকা বের হইয়া যাইতে দেখি প্রশ্নকর্তাগো, আশারীয়া কিম্বা মুতাজ্বীলাগো বের কইরা দিতে দেখি ইসলামী খলিফা'র দরবার থেইকা...কার্ল মার্ক্সরে হেগেলের সান্নিধ্যচ্যূত হইতে দেখি...যূগে যূগে কালে কালে এইরম ঘটে। প্রশ্নহীন আনুগত্য না থাকলে প্রতিষ্ঠান সহযোগী হওন যায় না।
তয় পুঁজিবাদের এই কালে আইসা প্রতিষ্ঠান আর কেবল আনুগত্যের শিরোনামে বন্দী থাকে না এইটা নিশ্চিত বলা যায়।
একটা প্রতিষ্ঠানরে সমাজবিচ্যূত হইতে হয়, যারা বৈষম্যের নিরীখে অন্যগো চেয়ে আলাদা থাকে। প্রতিষ্ঠানরে পুঁজিকেন্দ্রীক চিন্তাভাবনায় গা ভাসাইতে হয়। প্রতিষ্ঠানের আওতাভূক্তি হওনের যোগ্যতা হিসাবে লাভালাভের বিবেচনা থাকতে হয়। সোজাকথায় প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান বৈষম্যরে স্থায়িত্ব দেওনের সকল দূরাচারে নিয়োজিত থাকে।
প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংগ্রাম আসলে বৈষম্যমূলকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম।
প্রতিষ্ঠান সকল ক্ষেত্রেই কনজিউমারিজমের প্রচার করে...মানুষের অধিকার-মানুষের মেধা সবকিছুরে প্রতিষ্ঠার পণ্য বানানের চক্রান্ত করে। প্রতিষ্ঠান প্রশ্নহীন আনুগত্য চায় তার নিজের নিরাপত্তার স্বার্থেই। আর এই আনুগত্য প্রকাশের ধরণে একসময় অসহায়ত্ব থাকে। কিন্তু যদি চলমান আন্দোলন থাকে? যদি প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নিয়া মানুষের মধ্যে সংশয় জাগানিয়া মতাদর্শিক অবস্থান জায়েজ থাকে?
অনেক বড় প্রতিষ্ঠানের উদাহরণ না দিয়াও কওন যায়, এই যে ব্লগ প্রান্তরে আমরা লিখি...তার যখন একটা প্রাতিষ্ঠানিক বাস্তবতা তৈরী হয় তখন সে কিরম আচরন করে? এই যে সামহোয়্যার ইন-সচলায়তন এরা যখন প্রশ্নের মুখামুখি হয় তখন এরা কি করে? বিরুদ্ধ মতরে উৎসাহিত কইরা, মাল্টিপল মতাদর্শরে তাগো স্পেইসে জায়গা দেওনের মর্তবা লইয়া যখন এতো উদার প্রান্তর সাজাইছে বা সাজাইতেছে, তখন যদি কেউ প্রশ্ন করে তার রিয়্যাকশনে তারা কি করে?
আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেইকা জানি প্রতিষ্ঠান অনেক বিরূপ হইতে জানে...প্রতিষ্ঠান অপরাধ কইরা সেইটারে জাস্টিফাই করবার সকল অপচেষ্টায় রত হয়। এতো যে প্রতিষ্ঠান বিরোধীতার উদগারণ করতেছি, তার কারন কেবল প্রতিষ্ঠানের চরিত্র উন্মোচন না...প্রতিষ্ঠানের সহযোগীরাও যে আসলে অজান্তেই অপরাধ করেন...প্রতিষ্ঠানের সহযোগীরা জাইনাও অনেক সময় প্রতিষ্ঠানের অপরাধে সামিল হন...প্রতিষ্ঠানের সহযোগীরা প্রতিষ্ঠান বিরোধী অবস্থানরে নিরাপদ সুবিধাজনক না ভাইবা প্রতিষ্ঠানে সহযোগ করতে থাকেন, বিকল্প খুঁজনের চেষ্টা করেন না কখনোই...
প্রতিষ্ঠানের সহযোগী মানুষেরা তাইলে কেমনে নিরপরাধ থাকতে পারেন? একটা আন্দোলনের কোন একটা পর্যায়ে জঙ্গীত্ব আসতেই পারে...জঙ্গীত্ব একটা খারাপ আচরন বইলা আমরা কখনো কোন সংগ্রামরে ফুলেল কইরা তুলতে চাইলেই তো আর তা সম্ভব হয় না।
প্রতিষ্ঠানের প্রতিরোধ অনেক সময়ই একটা আন্দোলনরে জঙ্গীত্ব বরনে বাধ্য করে। আর এই ধরণের প্রতিরোধে প্রতিষ্ঠানের মূল অপরাধ-শক্তি হয় তার সহযোগীরাই...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।