আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফেলে আসা দিনগুলো.........

তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে।

সেই পিচ্চি থেকেই হোস্টেলবাসী। প্রথম প্রথম কান্না পেতো। হোস্টেল থেকে পালানোর ধান্ধা করতাম। ধরা খেয়ে আবার গ্রিহবন্দী/হোস্টেলবন্দী।

ধীরে ধীরে হোস্টেলজীবনকেই ভালো লাগতে শুরু করলো। বন্ধুগুলো এতো আপন হয়ে গেলো যে ওদের ছেড়ে বাড়িতে গেলে মজা পেতাম না। আমার পিছুটান কম ছিলো। সবাই ছুটিতে গেলেও আমি থেকে যেতাম। ভার্সিটি লাইফটা ছিলো সেরকম মজার।

স্কুল/কলেজের কড়াকড়ি হোস্টেল জীবন শেষে ভার্সিটিতে এতো স্বাধীনতা, ভাবতেই অন্যরকম লাগতো। প্রতি বছর মিনিমান সপ্তাহখানেকের জন্য কক্সবাজার যেতেই হবে। ৫ বন্ধু ছিলাম। সবার আর্থিক অবস্হা সমান ছিলো না। কিন্তু কোন সিন্ধান্ত হয়ে গেলে সবাই মেনে নিতাম।

হয়তো দুপুরে প্লান হয়েছে, রাতের ট্রেন ধরে রওয়ানা কক্সবাজারের উদ্দ্যেশ্যে। বাস জার্নি থেকে শুরু করে প্রতিটি মুহুর্ত ছিলো উপভোগের। রাস্তার পাশের রেষ্ট্রুরেন্টের পরটা+গরুমাংস ভোনা ছিলো হট ফেভারিট। পকেটের অবস্হা বিবেচনা করে হোটেল সী-বীচের পাশে নেওয়া সম্ভব হতো না। সাধারনত রিকশাওয়ালারা হোটেলের সন্ধান দিতো।

প্রথম ওদের কথামতো হোটেল সিলেক্ট করে ঠগতে হয়েছিলো। পরে শিক্ষা হয়েছে। উনারা অনেক কিছুরই সন্ধান দিতে পারতেন। তবে যেখানেই থাকি না কেন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বীচে থাকবোই এই প্রত্যয় নিয়েই যেতাম। ৫জনের মধ্যে ৩জন চেইন স্মোকার।

কিন্তু বিড়ি+লাইটার রাখা একটা বিরাট ঝামেলার ব্যাপার। একটা ক্যামেরাম্যান ঠিক করা হলো। কিছু ছবি তুলবে আর আমাদের বিড়িগুলো রাখবে। যদিও আমি ছবি তুলতে চাইতাম না। বাসায় না বলে বেড়াতে গিয়েছি।

যদি কোনভাবে ছবি দেখে ফেলে তাহলে তো খবর আছে। ঠান্ডা লাগলে বালুতে শুয়ে শরীর গরম করে আবার পানিতে। সন্ধ্যা হলে বীচের একমাথা থেকে হাটা শুরু হতো। সাথে বাদাম, পেয়াজু, চানাচুর আর একটা চা বিক্রেতা। একবার ডাইল কিনতে গিয়ে ধরা খেয়েছিলাম।

দোষটা আমাদেরই ছিলো। টাকা নিয়ে লোকটার পলায়ন আমাদের জন্য বিরাট শিক্ষা । আর সময়টা যদি পুর্নিমা হয় তাহলে তো কথাই নেই। রাত ১২টার পর কোলাহল থেকে অনেক দূরে, বালুতে গর্ত করে চারপাশে গোল হয়ে বসে, একটা গ্লাস হাতে... রাত কাভার। আর টওলেটের জন্য তো ঝাউবন ছিলো।

প্রায় ৫বছর পর গিয়েছিলাম। এক বন্ধু রুম বুকিং দিয়েই রেখেছিলো। একদম বীচের পাশেই হোটেল। এসি রুম। বেলকন থেকেই দেখা যাচ্ছে বিশাল নীল সমুদ্র।

বিরাট বিরাট ঢেউগুলো আছড়ে পড়ছে। সে কয়েকটি রাতও ছিলো পুর্নিমার। অনেকরাত পর্যন্ত বীচে হেটেছিলাম । পুর্নিমার আলোয় থাকিয়ে ছিলাম বিশাল জলরাশির দিকে, একটার পর একটা সিগারেট জ্বলে যাচ্ছে। খুজে ফিরছিলাম ফেলে আসা দিনগুলোকে।

আবারও যদি ফিরে যেতে পারতাম সেই দিনগুলোতে। কিন্তু সেটা শুধু অনুভবেই সম্ভব। বাস্তবে সবাই ব্যস্ত......

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।