আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমাবেশ: কিছু শংকিত ভাবনা!!!

আমি বলতে এসেছি, আমাকে বলতেই হবে..

গতকাল জাকজমকপুর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বৃহত্তর সমাবেশ। গত বছরের ১১ জানুয়ারীর পট পরিবর্তনের হাত ধরে, বলা যায় রাষ্ট্রপতি ইয়াজ উদ্দীনের পুনপৌনিক অপরিণামদর্শিতার বাই-প্রোডাক্ট হিসেবে বর্তমান বিশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারি উদ্যোগে আয়োজিত এটি এ যাবত কালের সবচেয়ে বড় সরকারি সমাবেশ। এ সমাবেশে বর্তমান তত্ত্ববধায়ক সরকারের প্রধান, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যন এবং অন্যানদের সাথে বর্তমান সেনা প্রধানও গিয়েছিলেন। এবং তিনি দীর্ঘ ব্ক্তৃতা করেছেন। স্মৃতি আমাকে প্রতারিত না করলে আমি নিশ্চিত যে, এরশাদের কালো অধ্যায়ের নয় বছর বাদ দিলে আর কখনো সেনা প্রধানের এ ধরনের সমাবেশে বক্তৃতা করার নজির আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসে নেই।

সেদিক থেকে এটি অবশ্যই একটি নতুন এবং অভিনব ঘটনা। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। যে কোন দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালীকরণ এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে শক্তিশালী স্থানীয সরকার ব্যবস্থার কোন বিকল্প নেই। সুতরাং দেশের এ ক্রান্তি লগ্নে স্থানীয সরকার প্রতিনিধিদের এ বিশাল সমাবেশ আগামী দিনের সম্ভাবনায় বাংলাদেশ এর দিক নির্দেশনা তৈরিতে একটি মাইল ফলক হতে পারতো। কিন্তু এ রকম একটি সমাবেশ নিয়ে গতকাল বাসে, চায়ের দোকানে যেসব গুঞ্জন উঠেছে, আলাপ-আলোচনা হয়েছে তাতে একটি শংকিত ভাবনার জন্ম নিয়েছে জনমনে।

বিভিন্ন আলোচনা-সমালাচোনাগুলোর বড় অংশ ঢাল-পালা গজিয়েছে সমাবেশে সেনা প্রধানের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে। গতকালের বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় যেভাবে তার বক্তৃতাকে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে, তা এসব আলোচনা-সমালোচনাকে আরও বেগবান করেছে। ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়। বাংলাদেশের সাধারণ জনগনের অবস্থাও দাঁড়িয়েছে তাই। ফলে সন্দেহ ও ভয় দানা বাধে বারবার।

মনে ও শরীরে। প্রতিদিন প্রতিনিয়ত। এ ভয় ও অবিশ্বেসের জন্য দায়ী আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। আর ব্যাপারটি যখন ঘটে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে ঘিরে তখন জনগণের অজানা ভয় আর শংকাগুলো আরও জোরদার হয়। কারণ অতীতের সকল সরকার একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গড়ার নাম করে সবচেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ করেছে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে।

নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাটিকে সূচারুরূপে কার্যকর করার জন্য গত পনের বছরের তিনটি সরকারের প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আমারা দেখেছি ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের হাতে ছিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় । এটি বিএনপির ক্ষেত্রে যেমন সত্যি তেমনি আ'লীগের ক্ষেত্রেও সত্যি। এ ধারাবাহিক অপরিবর্তিত সত্য ঘটনাই জনগনের মাঝে শংকিত ভাবনার জন্ম দিচ্ছে গত কালের সমাবেশ নিয়ে। নতুন কোন বন্দী দশায় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা বন্দি হয়ে যাচ্ছে কিনা এ প্রশ্নটি তৈরি হয়েছে সবার মনে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.