কখনো চাই নাই দূরে থাকি...তবু দূরগুলো বারে বারে আসে...
দৈনিক পত্রিকা খুইলা এখন প্রথম পাতায় আঁতিপাঁতি খুজি...নতুন কোন ইয়াবাসেবী ধরা পরলো কি না...নতুন কোন রাঘব বোয়ালের সন্তান ইয়াবার আসক্তিতে বইখা গেলো কি না। ইয়াবার বাবাগীরিতে সমাজতো পঁইচা-গইলা গেলো অবশেষে! আমার যতো ক্ষোভ, সব উৎসারিত হয় ইয়াবার তরে...ইয়াবা তুমি চলে যাও পুরানা মুলুকে!
কিন্তু বাস্তব ছবিটা কি!? বাস্তব ছবি যাচাইয়ের ক্ষমতা আমার কতোটা আছে সেইটা অবশ্যই প্রশ্ন সাপেক্ষ...তয় যেই ধরণের ইয়াবাসেবীর উল্লেখ চলতাছে তাতে মনে হয় আমার পেশার ধরণের কারনেই এই গোত্রের লগে আমার নিয়মিত যোগাযোগ করতে হয়...যারা মডেলিং করে, যারা নতুন কালের ড্যাম কেয়ার ইয়ো ইয়ো ভাব বজায় রাইখা চলতে পছন্দ করে, যারা এই মনোভাব প্রকাশ্য রাখতে পছন্দ করে...এইসব আচারের একটা বড় দিক হইলো মধ্যবিত্তপনার অনুপস্থিতি ষোলআনা।
র্যাব কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়া যেই সংবাদ পত্রিকায় আসতেছে তাতে মনে হয় আমাগো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী বন্ধুরা পড়ালিখার চাইতে ইয়াবাসক্তেই বেশী আগ্রহী। কিন্তু বাস্তবতায় আমি আমার চাইরপাশে পরিচিত ইয়াবাসক্ত কয়জন দেখি? দেখি নাই এইরম না...কিন্তু আসক্তের সংখ্যা দেইখা আমি কখনো শংকিত হই নাই।
কিন্তু রাষ্ট্রের মূখপাত্ররা, রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকেরা এমন কইরা কয় যাতে মনে হয় দেশে আজ প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির পর ইয়াবাই সবচেয়ে বড় হুমকী...উন্নয়ন স্থবির হইতেছে...ইয়াবা জাতির ভবিষ্যত কর্ণধারগো জীবনীশক্তি নিঃশেষ কইরা দিতেছে...ধীরে ধীরে ব্যাপারটারে কেবল ঝিম মারা অনুভূতির নেশায় আটকাইয়া রাখা হয় নাই...এখন খবরে চোখ বুলাইলে মনে হয়, যেখানেই ইয়াবা, সেখানেই ভায়াগ্রা! যৌনতার অভ্যাসকেন্দ্রীক আচরন নিয়া তোলা প্রশ্ন? বাঙালী আজ যৌন সক্ষমতায় বিশ্বাসী হইয়া উঠছে!?
ইয়াবা নিয়া মাতামাতিতে আমরা খবরের কাগজ কিম্বা টিভি পর্দায় চোখ রাখি...ইয়াবাসেবীগো আর্তি শুনি...তাগো অভিশাপের গল্প শুনি...কিন্তু আমাগো চোখ আর মন এড়াইয়া যায় ব্যবসায়ীরা যখন মৃদূস্বরে কয় দ্রব্যমূল্য এ যাবতকালের সকল রেকর্ড ভাঙা বাস্তবতায় পৌছাইছে...আমাগো চোখ এড়াইয়া যায় ছিনতাইকারীর গুলিতে গায়ক নিহত, কিম্বা একজন আনসার গুলি খাওনের পর বিছানায় কাতরাইতেছে...ছিনতাইকারীরা এখন আর কেবল মলম মাখানো কিম্বা ছুরিকাঘাতে থাইমা নাই, তারা গুলিই করতাছে পরপর...আমাগো চোখ এড়াইয়া যায় ভোটার তালিকার নগরকেন্দ্রীক বাস্তবতা...কতোদূর আগাইলো তার কোন আপডেট দিতে কর্তৃপক্ষ আদৌ আগ্রহী না মনে হয়।
আমরাও আগ্রহী হই সরকারের দেখানো পথেই...নিকিতা আর পুষ্পিতা আমাগো কাছে দুই রহস্যের নাম হয়...তারা কেমনে গরীব ভূমি অফিসে চাকুরীরত বাবার সন্তান হইয়া সমাজের গুলশান-বনানী-ধানমন্ডিস্থ বড়লোকের বইখা(?) যাওয়া ছেলেপেলেগো জীবন হুমকীর মুখে ঠেইলা দিলো...জীবনীশক্তির সাথে সাথে তাগো মেধাও নিঃশেষ হইতেছে...
পিয়াজের দাম আর চাইলের দাম নাকি পাল্লা দিয়া বাড়তেছে...এই সংবাদের সাথে আমাগো ইয়াবার দামও যে বাড়তেছে, সেই বিষয়ে আগ্রহী হইতেই হইবো...রাষ্ট্র চায়...আর তাই মিডিয়াও চায়...আমরা যারা পত্রিকার চোখে দেশরে দেখি, তারাও চাই...কিন্তু দেশের সব মানুষই কি চায়!?
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।