আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বন্যার পর করণীয়_০০১

আমি কাক নই, আমি মানুষ...

সারাদেশ এখন বন্যার পানিতে ভাসছে। ডুবে গেছে বাড়িঘর, রাস্তা-ঘাট, আবাদি জমি। মানুষ, হাঁস-মুরগি আর গবাদিপশুর ঠাঁই নেয়ার মতো শুকনো জায়গা খুব কমই আছে। বন্যার পানিতে শুধু বাড়িঘর, রাস্তা-ঘাট আর মাঠের ফসলই ভেসে যায়নি, ভেসে গেছে চাষি ভাইদের জমানো স্বপ্নও। যারা স্বপ্ন দেখছিলেন শীত মৌসুমের আগাম শাকসবজি আর মশলার চাষ করে দু টাকা বাড়তি আয় করবেন তারা এখন হতাশ।

হতাশ হলেও ভেঙে পড়েননি কেউ। এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে তারা বহু বছর ধরে পরিচিত। শেষ চেষ্টা না করে তারা হারতে জানেন না কখনোই। ধার-কর্জ যে করেই হোক তারা এই দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পর পরই আবার মাঠে নামবেন। যে জমি এখন পানিতে ডুবে আছে সেই জমিতেই আবার নতুন ফসল ফলাবেন।

এবারের বন্যায় যা তি হওয়ার তা হয়ে গেছে। পানির তোড়ে হারিয়ে যাওয়া কষ্টের সোনালি ফসলের কথা ভেবে সময় নষ্ট না করে, তিটা কিভাবে পুষিয়ে নেয়া যায় সেটাই ভাবুন। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে আগামীতে সে পরিকল্পনা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। বন্যার পর পরই কোন্ কোন্ সবজি কিভাবে চাষ করলে কম খরচে ও কম সময়ে সংগ্রহ করা যাবে সে সম্পর্কে জেনে নিয়ে এখনই কাজে নেমে পড়তে হবে। প্রথমেই জানা দরকার বন্যার পানি নেমে যাবার পর এসময়ে কোন কোন শাক-সবজি-মশলা চাষ করা যেতে পারে।

যেসব শাক-সবজি-মশলা চাষ করা যাবে সেগুলোর বীজ কোথায় পাওয়া যাবে। এেেত্র সরকারী ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি বেসরকারী বীজ উৎপাদনকারী ও বীজ ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আগাম চাষে উদ্যোগী কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে প্রয়োজনীয় ফসলের জাতের বীজ। প্রয়োজনে সহযোগিতা নিতে হবে কৃষি বিভাগের। অবশ্যই যে বিষয়ে ল্য রাখতে হবে তা হলো, বীজ সরবরাহের নামে যেন কৃষকরা যেন প্রতারিত না হন, কৃষদের হাতে কোন ক্রমেই নিুমানের বীজ দেয়া না হয়।

কৃষক এসময় প্রয়োজনের তাগিদেই বীজ সংগ্রহে তৎপর হবে। কিন্তু এক শ্রেণীর অসাধু বীজ ব্যবসায়ীর খপ্পরে সে যেন না পড়ে সে জন্য বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রচারণার পাশাপাশি বীজ ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টদের সরকারের প থেকেও হুঁশিয়ার করে দিতে হবে। অজানা জাতের বীজ ও উৎপাদন তারিখ বিহীন বীজ কৃষকের আগাম ফসল ফলনোর স্বপ্নকে ভেঙ্গে চুরমার করতে পারে। গত মৌসুমের অবিক্রিত বীজ এবার বন্যার সুযোগে অনেক বীজ বিক্রেতা বিক্রি করে দিতে চাইবেন, যেসব বীজ থেকে চারা গজাবে না। আবার চারা গজালেও ভালো ফলন না হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি।

সুতরাং কৃষকরা যেখান থেকেই বীজ সংগ্রহ করুন না কেন, বীজ গজানোর হার বা অঙ্কুরোগম পরীা অবশ্যই করে নিতে হবে। এসময়ে বিনা চাষেই বা সামান্য কর্ষনে বেশ কিছু ফসল চাষ করা সম্ভব। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বেগুন, টমেটো, মরিচ, লাউ, দেশী সীম, মিষ্টি কুমড়া, করলা, শশা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মূলা, গাজর, লালশাক, পালং শাক, সরিষা শাক, লেটুস ও ধনিয়া অন্যতম। এইসব শাক-সবজি ও মশলা চাষের নিয়ম যেমন আলাদা আলাদা তেমনি এই সময়ে এসবের চাষ কৌশলও সাধারন সময়ের চেয়ে একটু ব্যতিক্রম হওয়াটাই স্বাভাবিক। যেহেতু বন্যায় শাক-সবজি ও মশলা তে বেশি তিগ্রস্থ হয়েছে এবং বাজারে এই সবের সরবরাহ কমে গেছে তাই চাষের সময় দুটি বিষয়ের প্রতি ল্য রাখতে হবে।

প্রথমতঃ দ্রুত উৎপাদনশীল ফসল ও জাত নির্বাচন এবং দ্বিতীয়তঃ বিকল্প ব্যবস্থায় উৎপাদন করার সুযোগ। এছাড়াও কম খরচের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.